বিরসা মুণ্ডা স্মরণে উঠে এল আদিবাসী বঞ্চনার সুদীর্ঘ ইতিহাস

কেশিয়াড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর

ভারতের আদিবাসী জনগণ ব্রিটিশ আমলের মতোই আজও অধিকার থেকে বঞ্চিত। ব্রিটিশ সরকার জঙ্গল ও জমির অধিকার থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করতে চাইলে বিরসা মুণ্ডার নেতৃত্বে অধিকার রক্ষার আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ফলেই ১৯০৮ সালে আদিবাসীদের জমি রক্ষার জন্য ছোটনাগপুর টেনেন্সি অ্যাক্ট চালু হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীন ভারতে সরকার বার বার সংশোধন করে এই আইনের কার্যকারিতা সঙ্কুচিত করেছে। যেটুকু টিকে আছে তা বহু আন্দোলনের ফলেই টিকে আছে। আদিবাসী ও বনবাসীদের জঙ্গলের অধিকার রক্ষার উদ্দেশ্যে তৈরি ‘ফরেস্ট রাইট অ্যাক্ট ২০০৬’ দীর্ঘদিন ফাইলবন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেটাও বহু আন্দোলনের ফলে চালু হয়েছে। কিন্তু শোষক শ্রেণি ও তার সরকার অন্যান্য অংশের মানুষের মতোই আদিবাসীদের অধিকার হরণের নানা ফন্দি করেই চলেছে। বর্তমানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জঙ্গল (সংরক্ষণ) আইন ১৯৮০-র সংশোধনী এনে আবারও গরিব ভূমিহীন আদিবাসীদের অধিকৃত জমি কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এমনকী রায়তদের নিজেদের গাছ লাগানো জমির নিয়ন্ত্রণ সরকার হরণ করতে চলেছে।

এই প্রেক্ষাপটে গত ১৫ নভেম্বর ভারতের আদিবাসী ও বনবাসী মানুষরা পালন করলেন জমি রক্ষার আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা শহিদ বিরসা মুণ্ডার ১৪৭তম জন্মদিন। অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদযাপনের আহ্বান জানায়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিসম্বর মুড়া বলেন, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাজ্যে এ দিন বিরসা মুণ্ডার ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সর্বত্রই দাবি ওঠে–

১)      ফরেস্ট (কনজারভেশন) অ্যাক্ট-১৯৮০ সংশোধনী বাতিল করতে হবে।

২)      আদিবাসী ও বনবাসীদের রুটি-রুজির জন্য অধিকৃত জঙ্গলের জমির পাট্টা দিতে হবে।

৩)      কোনও অবস্থাতেই দখলিকৃত জমি থেকে আদিবাসী ও বনবাসীদের উচ্ছেদ করা চলবে না।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ১৬ সংখ্যা ২৬ নভেম্বর ২০২১