বিনা মন্তব্যে

মথুরাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী কমরেড বিশ্বনাথ সরদার মানুষের সাথে কথা বলছেন
  • শিলিগুড়ির একটি এলাকায় নির্বাচনী প্রচার করতে গিয়ে দলের কর্মীদের সঙ্গে সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সদস্য এবং বুথ সভাপতির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বলেন, একটি মিটিংয়ে গিয়ে যখন জানতে পারলাম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়তে হবে তখন প্রস্তাব দিয়েছিলাম এস ইউ সি আই (সি)-র সাথে জোট করলে তো ভাল হত, ওরা বামপন্থী আমরাও বামপন্থী। বামপন্থী মনোভাবাপন্ন মানুষদের আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারতাম। কিন্তু নেতারা বললেন, এটা ওপরতলার সিদ্ধান্ত। আমাদের এটা মানতে হবে। এটা শুনে আমি মিটিং থেকে চলে আসি। পরে লোকাল কমিটির সম্পাদক ফোন করে বলেন, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে হবে। আমি ওই প্রচারে যাইনি। প্রচার আমি বয়কট করেছিলাম। তিনি বলেন, আমাকে কিছু হ্যান্ডবিল দিন। আপনাদের তো প্রচারের জন্য টাকা দরকার। আমি মোটর ভ্যান চালাই। আমার কাছে ১০০ টাকা আছে, এই টাকাটা নিয়ে যান। আগামী দিনে দল যদি এসইউসিআই-এর সঙ্গে জোট না করে তবে দল ছেড়ে সবাইকে নিয়ে আমি আপনাদের দলে যুক্ত হব।
  • যাদবপুরের এইট বি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রচারের সময় সিপিএম-এর এক যুবকর্মী বললেন, কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের এই জোটের জন্যই দলের যতটুকু অস্তিত্ব ছিল সেটাও মুছে যাবে। আর এসইউসিআই দলটাই একমাত্র থাকবে। বললেন, বাড়িতে আসুন। গণদাবী কাগজটা আমাকে দেবেন।
  • উত্তর কলকাতা লোকসভার ট্যাংরার এক বস্তি এলাকায় দলের পথসভা দীর্ঘক্ষণ ধরে শুনছিলেন এক শ্রমজীবী মহিলা। হাসপাতালে আয়ার কাজ করেন। নাইট ডিউটি করতে চলে যাওয়ার আগে বলে গেলেন, অনেক আশা নিয়ে সিপিএম করতাম। ওরা বামপন্থা ছেড়ে আমাদের বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। আপনারা বামপন্থার রাস্তা ছাড়বেন না– কথা দিন।
  • আরামবাগ বাজারে দলের প্রার্থী কমরেড সুকান্ত পোড়েলের সমর্থনে প্রচার চলার সময়ে একটি মিষ্টির দোকানে দেখা হয় এক আইনজীবীর সঙ্গে। ‘লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগে বিচার করুন’ বইটি দেখেই কিনে নিলেন। বললেন, তোমাদের পার্টির শুরু তো দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায়। এখন কেমন অগ্রগতি হচ্ছে? এ বার রাজ্যের ৪২টি আসনেই একক ভাবে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে শুনে মুখটা উজ্জ্বল হল। তিনি দোকানদারকে একটি বই নেওয়ার জন্য বললেন। কর্মীদের বললেন, আমার কোনও সাহায্য লাগলে বলবেন।
  • হুগলির নালিকুল গ্রামে প্রচারের সময় একজনের বাড়িতে গেলে ভদ্রলোক তাঁর সংগ্রহে থাকা কমরেড প্রভাস ঘোষের তিনটি বই বের করে দেখালেন। বললেন, আমি নেতাজির ভক্ত। প্রভাসবাবুর নেতাজি সম্পর্কে বইটি পড়েছি। সম্পূর্ণ সঠিক। অন্যান্য বামপন্থী দলগুলো পেটিবুর্জোয়ায় পরিণত হয়েছে। বাইরে বামপন্থী খোলস, ভেতরটা বুর্জোয়া।
  • চুঁচুড়া ডিএম অফিসে নমিনেশন জমা দিয়ে ফেরার সময় এক পুলিশ কর্মী বলেন, লড়াই চালিয়ে যান। আপনাদের লড়াই সফল হবেই। পান্ডুয়া ব্লকের দ্বারবাসিনী বাজারে প্রচারের সময় এক চিকিৎসক জোর গলায় বললেন, ‘দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা এগুলোর বিরুদ্ধে আপনারাই লড়ে যাচ্ছেন। এই লড়াই আপনারাই পারবেন। নানা জায়গায় আপনাদের সংগঠন যে বাড়ছে এটা আশার সঞ্চার করে।’
  • ব্যান্ডেলে নির্বাচনী বই বিক্রির সময় এক সিপিএম কর্মী বলেন, সিপিএম একটি বামপন্থী দল হয়েও তার কংগ্রেসের হাত ধরা আমি মানতে পারছি না। আপনারা যে ভাবে লড়ছেন সেটাই সঠিক রাস্তা। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকতে চাই।
  • কলকাতায় প্রচার চলাকালীন কর্মীদের একটি গ্রুপ এক বাড়িতে কলিং বেল দিতে এক ভদ্রলোক দরজা খুললেন। আসার উদ্দেশ্য জানাতেই তিনি সোৎসাহে বলে উঠলেন, আরে আজ সকালেই তো আপনাদের নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হাতে প্রার্থীর পরিচয়পত্রটা দিতেই বসার ঘরে উপস্থিত কয়েকজন বন্ধুকে দেখিয়ে বললেন, আমরা তো ঠিক করেছিলাম এ বার ভোটই দেব না। আপনারা এলেন, ভোট দেওয়ার একটা জায়গা পেলাম। কংগ্রেসকে ভোট আমরা কোনও মতেই দিতে পারব না। কর্মীদের হাতে কিছু চাঁদা দিয়ে বললেন, আপনারা এই রাস্তার সব বাড়িতে যাবেন তো? একজনের নাম করে বললেন, ওনার সঙ্গে দেখা করবেন। কোনও অসুবিধা হলে বলবেন, আমি পাঠিয়েছি। বললেন, ভাল করে প্রচার করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।
  • কলকাতার বরানগরে প্রচারের সময় এক ব্যক্তি বললেন, একদম সঠিক ইস্যুতে এস ইউ সি আই আন্দোলন করে। তোমাদের দেখি সারা দিন অমানুষিক খাটতে। তোমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করো। চারদিকে এত স্বার্থবোধ, লোভ-লালসা, রাজনীতিতেও আজ পয়সার লোভ, এর বিপরীতে তোমরা হাঁটছো কী করে! শুনলাম তোমরা ১৫১টা সিটে লড়ছ। এত শক্তি তোমরা পাও কোথা থেকে তা জানতে খুব ইচ্ছা করে।
  • উত্তর কলকাতার এক বিশিষ্ট সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার তাঁর ফেসবুকের দেওয়ালে লিখেছেন, ‘আমি আমার ডাক্তার, সোনার ছেলে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর বিপ্লব চন্দ্র’কে ভোট দেব কলকাতা উত্তরে। আমি তাঁকে বহুদিন চিনি। আদ্যন্ত সৎ ছেলেটি অনেক কালের স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিটি আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ওর সঙ্গে আয়লার দুর্যোগে একাধিক মেডিকেল ক্যাম্পে আমি অংশগ্রহণ করেছি। মানুষ হিসেবে দেখেছি তাকে।’আরও লিখেছেন, ‘আপনি কলকাতা উত্তরে ডাঃ বিপ্লব চন্দ্রকে ভোট নাই দিতে পারেন, কিন্তু ভাল লোক রাজনীতিতে আসে না, এটা আর বলবেন না।’