রাজ্যের বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির ঠিকাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন বঞ্চনার শিকার। সম ও সমজাতীয় কাজে সম মজুরি, চাকরির নিশ্চয়তা, নির্দিষ্ট দিনে বেতন ও বাড়তি কাজের জন্য প্রাপ্য মজুরি থেকে এই সমস্ত কর্মীরা বঞ্চিত। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি রাজ্য সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরিভুক্ত শিল্পগুলির মধ্যে পড়ে না। এতদসত্ত্বেও পূর্বতন সিপিএম সরকারের জমানা থেকে এই সমস্ত কর্মীদের নূ্যনতম মজুরিভুক্ত নির্মাণকর্মীর মজুরি দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের সরকার পরিবর্তন হলেও এই বেআইনি কাজ বন্ধ হয়নি।
এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঠিকাকর্মীরা আপসকামী ও সরকার মুখাপেক্ষী সংগঠনগুলো থেকে বেরিয়ে এসেও এ আই ইউ টি ইউ সি-র নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি লিমিটেড কন্ট্রাক্টরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। জন্মলগ্ন থেকেই ইউনিয়ন বিদ্যুৎশিল্পের ঠিকাকর্মীদের প্রতি বঞ্চনা নিরসনের দাবিতে একটার পর একটা আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে বেতন দেওয়ার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। ২৯ জুলাই, ২০২১ কলকাতা হাইকোর্ট তিন মাসের মধ্যে এই সমস্ত কর্মীদের ক্যাটাগরি তৈরি করে বেতন নির্ধারণ করার আদেশ দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শ্রমদপ্তর নানা টালবাহানা করে এখনও পর্যন্ত তা কার্যকর করেনি। এই পরিস্থিতিতে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ২০ জানুয়ারি রাজ্যব্যাপী ঠিকা কর্মীদের বিক্ষোভ ও দাবি দিবস পালনের ডাক দেওয়া হয়।
এদিনের কর্মসূচিতে দার্জিলিং থেকে গোসাবা পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগের ঠিকা কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ২০০টি কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ও ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনে কর্মসূচি পালিত হয়। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মানস কুমার সিংহ জানিয়েছেন অবিলম্বে উপরোক্ত দাবিগুলি পূরণ না হলে কর্মচারীরা কর্মবিরতির পথে যেতে বাধ্য হবেন এবং তার দায় বর্তাবে সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্তৃপক্ষের উপর।