‘অল ইন্ডিয়া ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রথম সর্বভারতীয় সম্মেলন মধ্যপ্রদেশের ভোপাল শহরে অনুষ্ঠিত হল ৮-৯ এপ্রিল। ১৭টি রাজ্যের বিদ্যুৎ সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং ওই রাজ্যের নানা অংশের মানুষ সম্মেলনে যোগ দেন।
বিদ্যুৎ শিল্পের বেসরকারিকরণ বন্ধ করা, জনস্বার্থবিরোধী বিদ্যুৎ বিল ২০২২ প্রত্যাহার করা, গৃহস্থ গ্রাহককে ২০০ ইউনিট এবং কৃষিতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা, প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রত্যাহার সহ ১৪ দফা দাবিতে ৮ এপ্রিল উদ্বোধনী সমাবেশ হয় শহরের নীলম পার্কে। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের এক সুসজ্জিত মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্যুৎ আন্দোলনের এক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন এবং উদ্বোধনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘অল ইন্ডিয়া ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি স্বপন ঘোষ। অনলাইনে ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারস ফেডারেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র দুবে। বক্তব্য রাখেন অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান, প্রাক্তন ডেপুটি কালেক্টর এবং প্রখ্যাত লেখক মহেন্দ্র সিং, মধ্যপ্রদেশ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ভি কে এস পরিহার, মধ্যপ্রদেশ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার বি এল সিং ওমরাও এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমর সিনহা প্রমুখ।
সভাপতির ভাষণে স্বপন ঘোষ বলেন, বর্তমান সময়ে মানব সমাজে বিদ্যুৎ একটি অপরিহার্য পরিষেবা যা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় দেশে গড়ে তোলা হয়েছে। এই অপরিহার্য পরিষেবাকে বহুজাতিক সংস্থাগুলির মুনাফার স্বার্থে বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের এই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতেই হবে।
৮ এপ্রিল বিকালে গান্ধী ভবনে প্রতিনিধি অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারস ফেডারেশনের উপদেষ্টা অশোক রাও, ভারত সরকারের প্রাক্তন বিদ্যুৎ সচিব ই এ এস শর্মা, এবং তামিলনাড়ু পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারস সোসাইটির সভাপতি এস গান্ধীর পাঠানো বার্তা পাঠ করা হয়।
সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন সহ মোট পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করে নানা সংশোধনী পেশ করেন। সেগুলি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিদ্যুৎ বিল ২০২২-এর মাধ্যমে দেশব্যাপী সকলের জন্য অভিন্ন মাশুল নীতি প্রণয়ন, সমস্ত রকম ভর্তুকি বন্ধ, প্রিপেড স্মার্ট মিটারের মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা লুঠ করার হীন ষড়যন্ত্র, জনগণের অর্থে ও শ্রমে গড়ে ওঠা সরকারি বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির পরিকাঠামোকে বিনামূল্যে আদানি, আম্বানি, টাটা, গোয়েঙ্কা প্রভৃতি একচেটিয়া শিল্পপতিদের হাতে তুলে দেওয়া এবং এই বিল সংসদে পাস হওয়ার আগেই বেসরকারিকরণের নীল নকশা স্ট্যান্ডার্ড বিডিং ডকুমেন্টের নামে প্রয়োগের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। সম্মেলন থেকে বিদ্যুৎ শিল্প সহ সমাজের বিভিন্ন অংশের ১১ জন বিশিষ্ট মানুষকে নিয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয় এবং স্বপন ঘোষকে সভাপতি, সমর সিনহাকে কার্যকরী সভাপতি, কে ভেনুগোপাল ভাটকে সাধারণ সম্পাদক, সুব্রত বিশ্বাসকে অফিস সম্পাদক ও অজয় চ্যাটার্জীকে কোষাধ্যক্ষ করে ৫৩ সদস্যের অল ইন্ডিয়া ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সবর্ভারতীয় কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়।