প্রথিতযশা বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং–এর প্রয়াণে অল ইন্ডিয়া ডি এস ও–র সাধারণ সম্পাদক কমরেড অশোক মিশ্র এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন৷
মারাত্মক শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে প্রফেসর হকিং বিশ্বসৃষ্টি ও ‘ব্ল্যাকহোল’ তত্ত্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন৷ বিজ্ঞানের জনপ্রিয় বহু বই–এর এই লেখক বিশ্বজুড়ে নবীন বিজ্ঞানীদের কাছে এক অনুসরণীয় চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন৷ তিনি সর্বক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তিকে প্রাধান্য দিতেন৷ যে কোনও ধরনের অবৈজ্ঞানিক চিন্তা ও অতিপ্রাকৃত সত্তায় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন৷ এমনকী, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি কখনও এমন চিন্তাকে ঠাঁই দেননি৷ যুবক বয়সে ১৯৬৯ সালে ভিয়েতনামে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লন্ডনের রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি৷ আমেরিকার ইরাক আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও অশক্ত শরীরেও তিনি বলিষ্ঠ প্রতিবাদ করেছিলেন এবং ইজরায়েলের ইহুদিবাদী নীতি যা প্যালেস্টাইন সহ বিরাট এলাকার মানুষের জীবনে বিপর্যয় নামিয়ে এনেছে, তার বিরুদ্ধে বিডিএস (বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংশন) আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ইজরায়েলের ভূমিকাকে তিনি ১৯৯০ সালের আগের বর্ণবিদ্বেষী দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে তুলনা করেন৷
বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ছিলেন পুঁজিবাদের একজন সচেতন সমালোচক৷ বলতেন –‘মেশিন আমাদের প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র তৈরি করলেও তার বণ্টন ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ফলাফল৷ যদি মেশিনে উৎপাদিত সম্পদ সমূহে সত্যি সত্যি সকলের অংশীদারিত্ব থাকে সকলের জীবন সমৃদ্ধশালী হতে বাধ্য৷ আর যদি, কলের মালিকরা এই পুনর্বণ্টনের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে সফল হয় তবে জনগণ দরিদ্রই থাকবে৷ আমি যতদূর দেখেছি দ্বিতীয় অবস্থা আরও প্রকট হচ্ছে, প্রযুক্তি নির্ভর এই ব্যবস্থা অসাম্য বাড়াচ্ছে’৷ আজ যখন বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি সর্বত্র মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, ধর্মীয় উগ্রতা, অন্ধবিশ্বাস যখন বৈজ্ঞানিক মননকে ধ্বংস করে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে ছাত্র–যুবকদের যুক্তিবোধকে নষ্ট করে দিচ্ছে, তখন স্টিফেন হকিং–এর তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক জীবনে এই বলিষ্ঠতা আমাদের সকলের কাছে অনুপ্রেরণার নিশ্চিত উৎস৷