বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটকে পরাস্ত করে ১৯৩টি আসনে গণআন্দোলনের একমাত্র শক্তি এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) প্রার্থীদের জয়ী করুন

আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) দলের নির্বাচনী দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে ১ মার্চ রাজ্য অফিসে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন,

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিজেপির অনুপ্রবেশ ও উত্থান নিঃসন্দেহে একটি বিপজ্জনক ঘটনা। ভারতীয় নবজাগরণ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান ছিল পশ্চিমবঙ্গ। তার ফলে নীতি-নৈতিকতা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনার পরিসর নাগরিক সমাজের মধ্যেও প্রসারিত হয়েছিল। বিজেপির রাজনীতি ও মতাদর্শ নবজাগরণ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিরোধী যা ইতিমধ্যেই নানাভাবে বিজেপি নেতৃত্বের কার্যকলাপ ও কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়েছে।
একটা প্রশ্ন ওঠেই যে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো বড় মাপের হিন্দুত্ববাদী নেতা চেষ্টা করেও এ রাজ্যে তাঁর এবং তাঁর দলের প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। সেটা এখন অনেক কম ক্ষমতাসম্পন্ন নেতাদের দ্বারা সম্ভব হচ্ছে কী করে, বিশেষ করে যখন বিজেপি নেতাদের আচার-আচরণে কোনও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার লেশমাত্র পাওয়া যাচ্ছে না?
বহুকাল আগে যুক্তফ্রন্ট সরকারের বড় শরিক সিপিএমের আচরণ দেখে হুঁশিয়ারি দিয়ে এসইউসিআই(সি)-র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, মার্কসবাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষ বলেছিলেন, “জনসংঘের মতো ধর্মীয় রাষ্ট্রীয়তাবাদীরা ওৎ পেতে বসে আছে। তারা সুযোগের অপেক্ষা করছে। বামপন্থী আন্দোলনের প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ আজও রয়েছে তা নষ্ট হয়ে গেলেই তারা আত্মপ্রকাশ করবে। এ কথাটা ক্ষমতাসীন সিপিআই(এম) নেতারা বুঝছেন না। তাঁরা কমিউনিজমের আদর্শ, মূল তত্ত্ব বাদ দিয়ে প্রায় কংগ্রেসেরই মতো বড় বড় বুকনি আর মিষ্টি কথার চালাকিতে জনতাকে বিভ্রান্ত করে চলেছেন। এইভাবে কমিউনিজমের সুনামকে নষ্ট করে দিয়ে তাকে কালিমালিপ্ত করছেন” (শিবদাস ঘোষ নির্বাচিত রচনাবলি, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১১)। ঘটেছেও ঠিক তাই। সিপিএম-ফ্রন্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গের গদিতে টানা ৩৪ বছর আসীন থেকে একটা বুর্জোয়া দলের সরকারের মতো অত্যাচার অনাচার নির্যাতন হত্যা দুর্নীতি ইত্যাদি সবই করেছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সর্বনাশ যেটা সিপিএমের রাজনীতির দ্বারা ঘটে গেল সেটা হল, তাদের ভোটসর্বস্ব, সমাজের সর্বক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ দলীয় একাধিপত্য কায়েম করার রাজনীতি এবং সেজন্য চরম সন্ত্রাস ও সুবিধাবাদের আশ্রয় নিতেও দ্বিধা না করা এবং শ্রমিক কৃষক সাধারণ মানুষের ন্যায্য আন্দোলনকে দলীয় ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্বিচারে দমন করা প্রভৃতির দ্বারা বামপন্থার গৌরবকে, মর্যাদাকে, আদর্শবাদ ও নীতি-নৈতিকতাকে, রুচিসংস্কৃতিকে ধ্বংস করা। মুখে বামপন্থী স্লোগান আর কাজকর্মে আচরণে বুর্জোয়া, পেটি বুর্জোয়া— এই যে দ্বিচারিতা, এটা বামপন্থী রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। ভোটে জেতার জন্য দলের যে কোনও কাজকেই, কর্মীদের যে কোনও আচরণকেই লাইসেন্স দেওয়ার দ্বারা পশ্চিমবঙ্গের নৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশকে তারা ধসিয়ে দিয়েছে। জনসাধারণের কাছে বামপন্থার উন্নত আদর্শবাদকে কলুষিত করেছে, বামপন্থা কলঙ্কিত হয়েছে। এরই সুযোগ নিয়ে বিজেপির মতো চরম দক্ষিণপন্থী, ফ্যাসিবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তি পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে জায়গা করে নিতে পারছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অপশাসন, দুর্নীতি বিজেপিকে সুযোগ দিয়েছে ও দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তৃণমূল সরকারের প্রতি জনগণের বিরূপতা থেকেই বিজেপি এভাবে সমাজজীবনে তার দুষ্ট রাজনীতি ও সংস্কৃতির প্রভাব ছড়াতে পারত না, সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবেশ যদি ইতিমধ্যেই কলুষিত না থাকত। ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি ও ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে আদর্শগত লড়াইয়ে একমাত্র বামপন্থাই নেতৃত্ব দিতে পারে। আজকে ভারতবর্ষে বিজেপির সাত বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে বামপন্থী দলগুলিকে সম্মিলিত করে যে যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল, সিপিএম-এর ভোটসর্বস্ব সংসদীয় লাইন তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনারা সকলেই জানেন যে, মার্কসবাদী দল হিসাবে আমরা গণআন্দোলনের অংশ হিসাবেই নির্বাচনে লড়াই করি। আমরা মনে করি, নির্বাচনী লড়াইতেও শ্রমিক শ্রেণির লাইন ও বুর্জোয়া শ্রেণির লাইন আছে। সেটা শুধু রাজনৈতিক আদর্শের ক্ষেত্রেই নয়, নির্বাচনী কলাকৌশলের মধ্যেও প্রতিফলিত হবে। আমরা এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। দিল্লির লাগাতার কৃষক আন্দোলন দেখিয়ে দিয়েছে, বিজেপি সরকার কতটা জনস্বার্থবিরোধী। যে কোনও প্রতিবাদকে দেশদ্রোহ বলে আখ্যা দিয়ে, প্রতিবাদীকে জেল-জরিমানা ইত্যাদি নানা উপায়ে হেনস্থা করে বিজেপি সরকার এও প্রমাণ করেছে যে, গণতন্ত্রের প্রতি তার বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই। বস্তুত, ভারতবর্ষে কংগ্রেস শাসনে গণতান্ত্রিক অধিকারের যতটুকু সামান্যও অবশিষ্ট ছিল, তাকেও ধ্বংস করতে চায় বিজেপি। সর্বোপরি মুসলিম-বিদ্বেষের যে রাজনীতি হল আরএসএস-বিজেপির মূল আদর্শগত ভিত্তি, তা ইতিমধ্যেই বহু নিরীহ নির্দোষ সাধারণ মানুষের প্রাণ নিয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে দেশের লক্ষ লক্ষ খেটে খাওয়া দিনমজুর, পরিযায়ী শ্রমিকের সাথে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে চুড়ান্ত অমানবিক আচরণ করেছে, শিল্পসঙ্কট, বেকার সমস্যা যে তীব্র রূপ নিয়েছে, তাতে বিজেপির শ্রমিকবিরোধী, গরিববিরোধী চরিত্রটিও নগ্ন হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ১০ বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলন জারি রেখেই আমরা বলতে চাই, এই নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধতা করা এ রাজ্যের প্রতিটি নাগরিকের অবশ্যকর্তব্য। ২০১১ সালে সিপিএম সরকারের অপসারণের দাবি আমরাও তুলেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গের আপামর জনগণের অভিপ্রায় হিসেবেই এ দাবি এসেছিল। সিপিএম-কে পরাস্ত করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এও বলেছিলাম, সিপিএমকে পরাস্ত করে যদি তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গড়েও, তবে তারা ‘সোনার বাংলা’ গড়ে দেবে, এই আশা যেন জনগণ না করে। একটি দক্ষিণপন্থী আঞ্চলিক বুর্জোয়া দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস বড়জোর কিছু প্রশাসনিক সংস্কার করতে পারে। যদি তারা চায়, তবে গণআন্দোলনকে পুলিশি আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। প্রশাসনে এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চুরি-দুর্নীতি চাইলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী নই। পশ্চিমবঙ্গে গত দশ বছরে তৃণমূল সরকারের শাসন আমাদের এই বক্তব্যকে কার্যত অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণ করেছে। চুরি-দুর্নীতি-স্বজনপোষণ, পুলিশ-প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ভোট দিতে না দেওয়া ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রথমে জাতীয় কংগ্রেস এবং পরে ’৭৭ সাল থেকে টানা ৩৪ বছর সিপিএম-ফ্রন্ট সরকারের শাসন যে কালা ইতিহাস রচনা করেছিল, তৃণমূল কংগ্রেসের দশ বছরের শাসন তারই ধারাবাহিকতায় চলেছে। পাইয়ে দিয়ে দলের শক্তিবৃদ্ধি ও ভোটবাক্সে সমর্থন ধরে রাখার যে রাজনীতি সিপিএম ৩৪ বছর ধরে করেছে, তৃণমূল কংগ্রেস তার থেকে কোনও আলাদা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি। সেই সিন্ডিকেট রাজ, সেই স্বজনপোষণ সমানে চলেছে। চিটফান্ডের মারফৎ হাজার হাজার গরিব-নিম্নবিত্ত মানুষের টাকা লুঠ করার যে সূচনা সিপিএম আমলে হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে তা প্রকাশ্যে এসেছে কিন্তু সুরাহা হয়নি। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশি অত্যাচারে আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনাও আমরা সকলেই দেখেছি। ফলে ক্ষমতায় আসার আগে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে প্রতিশ্রুতি জনগণকে দিয়েছিলেন, তা কোথাওই প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মূল্যবৃদ্ধি, ফাটকাবাজি, কালোবাজারি এই সবই এই শাসনেও পুরোমাত্রায় চলছে। নারীনিগ্রহ, নারীপাচার ইত্যাদিও চলছে এবং বাড়ছে। শিক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা অব্যাহত। ২০১১-র নির্বাচনের আগে প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি এই সরকার। এই দাবিতে ২০১৫ সালে আমাদের আন্দোলনে পুলিশের অত্যাচার আমাদের দু’জন কর্মীর চোখ নষ্ট করেছে, দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়েছে। সিপিএম নেতৃত্বের মতোই রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করার হুঙ্কার দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলই যেভাবে ইচ্ছামতো রবীন্দ্রনাথ, সুভাষচন্দ্র ও অন্যান্য প্রাতঃস্মরণীয় মনীষীদের যেমন তেমন ব্যবহার করছে ও মসীলিপ্ত করছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও নিন্দনীয়। ফলে এই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকেও পরাস্ত করার আহ্বান আমরা দিচ্ছি।
বিজেপি কেন্দ্রে সরকারে বসার পরই আমাদের দল সহ ছয়টি বামপন্থীদলকে নিয়ে দিল্লিতে একটি বৈঠকের মধ্য দিয়ে একটা জোট গঠিত হয়েছিল। মাঝে মধ্যে কিছু বিবৃতি দেওয়া ছাড়া রাস্তায় নেমে গণআন্দোলনের কোনো পদক্ষেপ এই জোট নেয়নি। পাশাপাশি সিপিএম নেতৃত্ব ভোটের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেসের সাথে আঁতাত করার পথে এগোতে থাকে। সিপিএমের দাবিমতোই এ রাজ্যে কংগ্রেস শাসনে তাদের দলের ১১০০ কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল, এই কংগ্রেস দলই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়েছিল। আমরা বরাবর বামপন্থী দলগুলির ঐক্য ও যুক্ত বামপন্থী আন্দোলনের পক্ষে আমাদের অবস্থান পরিষ্কারভাবে রেখেছি। সিপিএম ও তার সাথী দলগুলি সাড়া দেয়নি। এই অবস্থায় ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল প্রসঙ্গে দিল্লি থেকে সিপিএম ও তার সাথীরা একটি বিবৃতি জারি করল পাঁচটি বামপন্থী দলের নামে আমাদের দলকে বাদ দিয়ে। এ বিষয়ে আমাদের সাথে কথা বলারও কোনো প্রয়োজন তারা মনে করেনি। এরপরও এরাজ্যে ও অন্যত্র আমরা তাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি করেছি, শুধু ভারতীয় একচেটে পুঁজিপতি শ্রেণির অন্যতম প্রধান দল কংগ্রেসকে রাখার বিরুদ্ধতা করেছি। কংগ্রেস কোনওকালেই সেকুলার ছিল না, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধও তারা ধারণ করে না, মেহনতি মানুষ তথা জনগণের ন্যায্য দাবি নিয়ে কোথাও কোনওরকম আন্দোলনও তারা করে না। সাম্প্রদায়িকতা, জাতিবিদ্বেষের বৈশিষ্ট্যও ওই দলের আছে। আমাদের এই মতবাদিক আপত্তির কথা সিপিএম নেতৃত্ব শোনেননি। তারা ভোটসর্বস্ব সুবিধাবাদী রাজনীতিতে এতটাই নিমজ্জিত যে এখন তারা মুসলিম মৌলবাদী একটি গোষ্ঠীকে সেকুলার নাম দিয়ে আসন সমঝোতা করতে দ্বিধা করছে না— যে গোষ্ঠীটি আসাদুদ্দীন ওয়াইসির সংগঠন ‘মিম’-এর সঙ্গে সমঝোতা করে চলছে। এই ‘মিম’ সংগঠনই বিজেপির মিত্র হিসাবে গত বিহার নির্বাচনে বিজেপিকে সাহায্য করেছে। এই রাজনীতির দ্বারা সিপিএম ও তার সহযোগীরা বামপন্থার আরও ক্ষতি করছে। আমরা তাদের এই নীতিহীন জোট ও রাজনীতির তীব্র বিরুদ্ধতা করছি। ফলে এই জোটকে সমর্থন করারও প্রশ্ন নেই।
সকলেই জানেন, আমাদের দল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সকল জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার নানা রূপে গণআন্দোলন করে চলেছে। প্রতিদিন আমাদের দলের কর্মীরা রাস্তায় থেকে মানুষের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-মূল্যবৃদ্ধি-নারী নির্যাতন, মদ-জুয়া ইত্যাদির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিয়োজিত রয়েছেন। জনসাধারণই এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-কে প্রতিবাদী আন্দোলনের দল বলে অভিহিত করে থাকেন। বর্তমানে দিল্লির বুকে যে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন চলছে, শুধু উত্তর-ভারতের রাজ্যগুলি থেকেই নয়, দেশের সকল রাজ্য থেকেই আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এই পশ্চিমবঙ্গেও জেলায় জেলায় অবস্থান, অবরোধ, মিটিং, মিছিল হয়েই চলেছে। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ও অংশ হিসাবেই আগামী নির্বাচনে আমরা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আপাতত ১৯৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জনগণের কাছে আবেদন, গণআন্দোলনের এই কণ্ঠকে বিধানসভার অভ্যন্তরে প্রতিফলিত করতে হলে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) প্রার্থীদেরই জয়ী করা জনগণের কর্তব্য। যে সব আসনে আমাদের দলের প্রার্থী থাকবে না, সেখানে জনগণকে উদ্যোগ নিয়ে গণসংগ্রাম কমিটি গড়ে তুলে তাদের পক্ষ থেকে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সর্বোপরি সংগ্রামী ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করিয়ে জয়ী করার জন্য আমরা আবেদন রাখছি।
ধন্যবাদান্তে,
চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য
রাজ্য সম্পাদক