বিচারপতি এস মুরলিধর–এর বদলি প্রসঙ্গে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ আজ এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন,
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধরকে একটি রায় দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যেভাবে চটজলদি বদলি–নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজেপি শাসনে তা মোটেই আশ্চর্যের নয়৷ দিল্লি দাঙ্গায় যখন নিরীহ মানুষ মরছে, ঘরবাড়ি–দোকানপাট জ্বলছে তখন পুলিশের ইচ্ছাকৃত চরম নিষ্ক্রিয় ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করার সাহস দেখান বিচারপতি মুরলিধর এবং এত মৃত্যু, অগ্নিসংযোগ, লুঠপাটের জন্য পুলিশকেই দায়ী করেন৷ যেসব বিজেপি নেতা প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন৷ বিচারপতি মুরলিধরের এই সাহসী ভূমিকার ‘পুরস্কার’ হিসাবেই তাকে রাতারাতি বদলি করা হয়েছে৷ একজন বিচারকের এ হেন ‘ঔদ্ধত্য’ কিভাবে সহ্য করবে বিজেপি সরকার?
দাবি করা হয় যে, বিচার ব্যবস্থা হচ্ছে স্বাধীন এবং তার কাজে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে না৷ কিন্তু বুর্জোয়া শাসন ব্যবস্থায় দীর্ঘ কাল থেকে একথা শুধু কাগজেই লেখা রয়েছে৷ সাম্প্রতিক কালে এটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সংসদীয় গণতন্ত্র এখন একটি ফ্যাসিবাদী স্বৈরতন্ত্রে পর্যবসিত হয়েছে৷
বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার ছিটেফোঁটা যতটুকু আমাদের দেশে ছিল, ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকে তা লোপ পেতে শুরু করে৷ এখন কফিনে শেষ পেরেকটি মারছে বিজেপি৷ যারা বিজেপি সরকারের লেজুড়বৃত্তি করছেন অন্যায়ভাবে তাদের পদোন্নতি ঘটানো হচ্ছে এবং যারা সরকারের মর্জিমতো রায় দিচ্ছেন না এমন বিচারকদের বদলি করে দেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি বিচারপতি লোয়াকে রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার হতে হয়েছে৷ তাঁর পরিবার দাবি করেছে, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের মামলায় টাকার বিনিময়ে বিচার বদলে দিতে রাজি না হওয়ার জন্যই তাঁকে খুন করা হয়৷ তাঁরা এই রহস্যমৃত্যুর তদন্ত দাবি করেন, কিন্তু সে ব্যাপারে কর্ণপাত করা হয়নি৷
এইভাবে বিচার ব্যবস্থা শাসক দল ও শাসক শ্রেণি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনের সেবাদাসে পর্যবসিত হয়েছে৷ বিচার ব্যবস্থার আপাত নিরপেক্ষতা সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়েছে যা কেবল অবিচারই করে চলেছে৷ দেশের পক্ষে এ এক সমূহ বিপদ৷