রাজ্যের ২০০টির বেশি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির (বিএড ইউনিভার্সিটি) নিয়মিত কাজকর্ম বন্ধের বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে এআইডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, হঠাৎ করে বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটি (বি এড ইউনিভার্সিটি) কর্তৃপক্ষ তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম স্থগিত রাখায় সাড়ে ৬০০ কলেজের প্রায় ৬০ হাজার ছাত্রছাত্রী চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। বিএড-এর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। ৪-৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএড-এর দ্বিতীয় সেমিস্টারের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হওয়ার কথা এবং তার মার্কস জমা দেওয়ার দিন ১২ ডিসেম্বর। ইউনিভার্সিটির এই সিদ্ধান্ত বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
শিক্ষকতার চাকরির জন্য পরীক্ষায় বসতে বিএড-বিএলএড বাধ্যতামূলক। অথচ সরকারি বি এড কলেজ হাতে গোনা। যে কটি আছে তাতেও আসন সংখ্যা সামান্য। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যথেচ্ছ বেসরকারি বি এড কলেজ গড়ে ওঠে এবং তা সরকারি মান্যতাও পেয়ে যায়। এই সমস্ত বেসরকারি কলেজগুলির পরিকাঠামো, ছাত্র শিক্ষক অনুপাত, সঠিকভাবে ক্লাস না করানো, ইন্টার্নশিপ না করানো, বিশাল অঙ্কের টাকা নেওয়া প্রভৃতি বিষয় নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ বহুদিনের। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আগে পরিকাঠামো এবং ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত সহ এনসিইআরটি-র মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে না, এই কারণ দেখিয়ে বেশ কিছু কলেজের অ্যাফিলিয়েশন বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়, যা বাস্তবে ছাত্রদের পূর্বেকার দাবিকেই মান্যতা দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেশাদারি ভূমিকাকেই উন্মোচিত করে। এই বেসরকারি কলেজগুলির অনুমোদন বাতিলকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর চাপ এবং হুমকি আসছে এই অজুহাত দেখিয়ে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনির্দিষ্টকালের জন্য অন্ধকারে ঠেলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।প্রশাসনও ঠুঁটো জগন্নাথ।
তিনি বলেন, সারা রাজ্য জুড়ে শিক্ষা জগতে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি চলছে। এই অচলাবস্থা বেসরকারি কলেজগুলোর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও নতুন দুর্নীতির পূর্বাভাস নয় তো! তা না হলে এতগুলো কলেজ কীভাবে পরিকাঠামোবিহীনভাবে এতদিন ধরে পঠন-পাঠন এবং ছাত্র ভর্তি চালিয়ে গেল? ভর্তির আগেই সিট বুকিং এর নামে বেসরকারি কলেজগুলো ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা নেয়, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চুপ কেন? অনুমোদন বাতিল হওয়া কলেজগুলোর বিএড, এমএড ও ডিএলএড-এর ২০২২-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট কোনও বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় এখনও জানায়নি।
হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী সমস্যার সম্মুখীন হতে চলেছে, তার দায় কে নেবে? এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তর কোনও অবস্থাতেই অস্বীকার করতে পারে না।