বাল্যবিবাহকে কেন্দ্র করে আসামে যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেই সম্পর্কে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর আসাম রাজ্য কমিটির সম্পাদক কমরেড চন্দ্রলেখা দাস ৫ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন,
আসামের বিজেপি সরকার রাজ্যের জনগণের সার্বিক উন্নতি ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কৃষি, শিল্প উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণের পরিবর্তে একের পর এক অর্থহীন ও চমকের রাজনীতি করে যাচ্ছে।
গভীর উদ্বেগের সাথে আমরা লক্ষ করছি, এর ফলে রাজ্যের দরিদ্র জনসাধারণ বাঁচার সকল অবলম্বন হারিয়ে টিকে থাকাই অসম্ভব বলে মনে করছেন। গভীর ক্ষোভের সাথে আমরা লক্ষ করছি, এই সরকার রাজ্যের আপামর জনসাধারণের সংগ্রামী ঐক্য এবং সংহতি ভেঙে দিতে নানা মনগড়া, ভিত্তিহীন আশঙ্কার জন্ম দিয়ে জনগণকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। সেই সাথে সকল জনগণের ঐক্য, সংহতি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে চুরমার করে দিতে একের পর এক বিভাজনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে দাবি করছি, এই সর্বনাশা পথ পরিহার করে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার সকল শ্রেণির জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সুনিশ্চিত করুক। রাজ্যে দ্রুত শিল্পোন্নয়নের কাজে উদ্যোগী হয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করুক।
সকল জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান, এই দাবি কার্যকর করতে ও সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্দোলন সংগঠিত করুন। আমাদের দাবি, বাল্যবিবাহের সমস্যা শিশুশ্রমের মতোই একটি বড় সামাজিক সমস্যা। অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির অভাব থেকেই উদ্ভূত এই সমস্যা কেবল আসামেই নয়, সারা দেশেই রয়েছে। তাই শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং চেতনার মানোন্নয়নে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেই একে মোকাবিলা করা সম্ভব। পুলিশি ধরপাকড় চালিয়ে, জেলবন্দি করে জনগণকে সন্ত্রস্ত করে, হাজার হাজার অসহায় নারী এবং শিশুদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা মনে করি প্রশাসনিক পদক্ষেপের নামে যা করা হচ্ছে তা অমানবিক, নিষ্ঠুর এবং চূড়ান্ত হৃদয়হীন কাজ। আসাম বিজেপি সরকারের প্রতি তাই আমাদের দাবি– হাজার হাজার গরিব মানুষকে জেলবন্দি রাখার স্বৈরাচারী পথ পরিত্যাগ করে শিক্ষা ও সমাজ চেতনা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে সমস্যা সমাধানে ব্রতী হোন। আসামের সকল শ্রেণির জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান, এই কার্যকলাপ বন্ধে সোচ্চার হোন ও এর বিরুদ্ধে তীব্র গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলুন।