২০২৪-২৫ সালের পাটের সহায়ক মূল্য নির্ধারণের জন্য ৫ সেপ্টেম্বর টালিগঞ্জের টলি ক্লাবে জেসিআই-এর আয়োজনে ‘কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্ট অ্যান্ড প্রাইস’-এর সভায় কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় পাল শর্মার উপস্থিতিতে অল ইন্ডিয়া কিসান খেতমজদুর সংগঠন জোরালো ভাষায় পাট চাষিদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে। সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটির পক্ষে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস বলেন, এ বছর কাঁচা পাটের সরকারি সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টাল ৫০৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছে, যা কুইন্টালপ্রতি পাট উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক। সভায় উৎপাদন খরচের এক তালিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, এক কুইন্টাল পাট উৎপাদনের খরচ প্রায় ৯০০০ টাকা।
সরকারের দ্বারা গঠিত ডঃ স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ ছিল ফসলের সহায়ক মূল্য হওয়া উচিত উৎপাদন খরচের দেড়গুণ। সেই হিসাবে সহায়ক মূল্য কমপক্ষে ১৩ হাজার টাকা হওয়া উচিত। রাজ্যের তৃণমূল সরকারের প্রতিনিধি পাটের এমএসপি কুইন্টাল প্রতি ৬,৫০০ টাকার সুপারিশ করেন। সিপিএমের কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধি প্রস্তাব করেন ৮,৫০০ টাকা কুইন্টাল, যা উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। কমরেড গোপাল বিশ্বাস ক্ষোভের সাথে বলেন, এই সহায়ক মূল্য কৃষক সহায়ক নয়। বহু চাষি পাট চাষ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
পাট শিল্পের সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিন্থেটিক লবির কাছে আত্মসমর্পণ করে সরকার পাট চাষ ও পাটশিল্পকে ধ্বংস করছে। অথচ পাট চাষ পরিবেশবান্ধব। পরিবেশের কথা ভেবেই সিন্থেটিকের পরিবর্তে পাটে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই শিল্প শ্রমনিবিড়, ৪০ লক্ষ পরিবার পাট চাষের উপর নির্ভরশীল। পাট গুরুত্বপূর্ণ একটা অর্থকরী ফসল, বিশ্বে মোট উৎপাদিত পাটের প্রায় ৫০ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হয়।
এআইকেকেএমএস-এর দাবি, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত ক্রয়কেন্দ্র খুলে জেসিআই-কে সরাসরি চাষিদের থেকে পাট কিনতে হবে। সস্তায় চাষিদের সার্টিফায়েড বীজ দিতে হবে। সভায় সংগঠনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্বপন দেবনাথ ও দাউদ গাজি।