(আজ থেকে দেড়শো বছর আগে ১৮৭১ সাল ছিল প্যারি কমিউনের ঐতিহাসিক সংগ্রামের উত্তাল দিন। বুর্জোয়া শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করে ১৮ মার্চ বিপ্লবী কেন্দ্রীয় কমিটি প্যারিসের ক্ষমতা দখল করে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র কমিউন প্রতিষ্ঠা করে। কমিউন গুণগতভাবে ছিল বুর্জোয়া রাষ্ট্রের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। প্রথমেই কমিউন আমলাতন্ত্রকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে। ভাড়াটে সেনাবাহিনী ভেঙে দিয়ে জনতার হাতে অস্ত্র তুলে দেয়। কর্মচারী অফিসারদের বেতনের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়, যা একজন দক্ষ কর্মচারীর মোটামুটি সমান। আট ঘন্টা শ্রমসময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের উপর জরিমানা ধার্য করা, রুটির কারখানায় রাতের শিফটে কাজ নিষিদ্ধ করা হয়। শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে শ্রম কমিশন গঠিত হয়। যে সব মালিক এতদিন শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে আসছিল, তাদের সম্পত্তিচ্যুত করার আদেশ দেওয়া হয়। বেকার শ্রমিকদের কাজ ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অফিসার, সেনা-অফিসার, বিচারপতি সকলকে নির্বাচিত হওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। ধর্মকে রাষ্ট্র্র থেকে পৃথক করা হয়। চার্চের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। শিক্ষা হয় অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। এই প্রথম কমিউন রাজত্বে শ্রমিকরা মুক্তির স্বাদ পায়।
কিন্তু নানা কারণে কমিউনকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। দু’মাস দশদিন পর ২৮ মে বুর্জোয়া সরকার অপরিসীম বর্বরতায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে শ্রমিক অভ্যুত্থানকে পর্যুদস্ত করে। বিচারের নামে প্রহসন ঘটিয়ে জুন, জুলাই, আগস্ট মাসে হাজার হাজার কমিউনার্ডকে হত্যা করে বুর্জোয়ারা বিপ্লব দমন করে। এই লড়াইকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করে কার্ল মার্কস তাঁর চিন্তাধারাকে আরও ক্ষুরধার করেন। শ্রমিক বিপ্লবের প্রচলিত ভ্রান্ত তত্ত্বগুলিকে আদর্শগত সংগ্রামে পরাস্ত করে প্যারি কমিউনের লড়াই মার্কসবাদের অভ্রান্ত সত্যকে প্রতিষ্ঠা করে। কমিউনার্ডদের অসীম বীরত্ব ও জঙ্গি লড়াই সত্ত্বেও কমিউনের পতন দেখায় যে, শ্রমিকবিপ্লবের জন্য সঠিক বিপ্লবী তত্ত্ব ও সঠিক বিপ্লবী দলের নেতৃত্ব অবশ্য প্রয়োজন। প্যারি কমিউনের ইতিহাস জানা সকল মার্কসবাদীর অবশ্য কর্তব্য। ২০১১ সালে গণদাবীতে প্যারি কমিউনের ইতিহাস সংক্ষিপ্ত আকারে ধারাবাহিক ভাবে যে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল সেটিকে আরও কিছুটা সংযোজন এবং সম্পাদিত আকারে ধারাবাহিক ভাবে আমরা প্রকাশ করছি। – সম্পাদক, গণদাবী)
‘‘মেহনতি জনগণের প্যারি কমিউন সর্বকালের এক নতুন সমাজের গৌরবোজ্জ্বল অগ্রদূত হিসেবে উদযাপিত হবে। কমিউনের শহিদদের মেহনতি জনগণ তাদের মহান হৃদয়ে সযত্নে স্থান দিয়েছে। ইতিহাস, ইতিমধ্যেই কমিউন ধ্বংসকারীদের শূলদণ্ডে বিদ্ধ করেছে। ধর্মযাজকদের হাজার প্রার্থনাও সেই শূলযন্ত্রণা উপশমে বিন্দুমাত্র সাহায্য করতে পারবে না।”
– কার্ল মার্কস। ৩০শে মে, ১৮৭১
৮ই আগস্ট, ১৮৭১। প্যারি শহরের একটি বিরাট হলে শুরু হয় এক ঐতিহাসিক বিচার। আসামী কমিউনবিরোধী শক্তির হাতে সংগ্রামে পরাস্ত কয়েকজন বন্দী, বিচারক কমিউনবিরোধী সরকারের কমিশনার্স অব পারডন।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের উত্তরে অন্যতম আসামী চর্মশ্রমিক ত্রিঙ্ক ঘোষণা করেনঃ ‘‘আমার সহকর্মীরা আমাকে কমিউনের সদস্য নির্বাচিত করেছিল। কমিউনকে রক্ষা করার জন্য আমি ব্যারিকেডে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছি। আমি সেখানে লড়তে লড়তে মারা যাইনি বলে আজ দুঃখ অনুভব করছি। আমি একজন বিপ্লবী, জনসমক্ষে এটা ঘোষণা করতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই।” যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
বিচারের অন্যতম আসামী ফিয়েরে অভিযোগের উত্তরে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনালেন। ফিয়েরের জ্বালাময়ী সত্যভাষণে চেয়ারম্যান ক্রমশই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। ফিয়েরে কমিউনের সদস্য হিসেবে তাঁর কৃতকর্মের জন্য গৌরব প্রকাশ করেন। বক্তব্যের শেষাংশে তিনি উদাত্ত কণ্ঠে বলেনঃ ‘‘বিজয়ীদের হাতে আমি বন্দি। তারা আমার মুণ্ডু চায়। মাথা তারা কেটে নিক। প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমি কাপুরুষতার পরিচয় দেব না। স্বাধীন মানুষের মতো আমি বেঁচেছি। তার চেয়ে নিচুস্তরে নেমে আমি মরতে পারব না। একটা কথাই আমার বলার আছে, তা হল, কেউ জানে না ভবিষ্যতে কী ঘটবে। আমার স্মৃতি এবং আমার অন্তরের পবিত্র বিদ্বেষের মর্যাদা রক্ষার ভার আমি ভবিষ্যতের ওপরেই ছেড়ে দিচ্ছি।” ফিয়েরের শিরেছদ করতে ওরা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি।
অপর একটি বিচার সভা। অভিযুক্ত শিক্ষিকা লুই মিশেল। রাষ্ট্রের অভিযোগের উত্তরে তাঁর শাণিত কণ্ঠে ঘোষিত হয়ঃ
‘‘সমাজবিপ্লবের জন্য আমি নিবেদিতপ্রাণ। আমি যা করেছি তার দায়িত্ব আমার। আপনারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যে, আমি সামরিক জেনারেলদের হত্যা করেছি। এর উত্তরে আমি বলব, হ্যাঁ। সরকারি কমিশন ঠিকই বলেছে। যারই হৃদয় স্বাধীনতার আকুতিতে স্পন্দিত, তারই অধিকার আছে সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার। সে ক্ষেত্রে আমার অধিকারটুকুই আমি দাবি করেছি। আপনাদের বিচারে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেলে, আমি প্রতিশোধের দাবি তুলবই। কমিশন অব পারডন বিচারের নামে আমার যে সংগ্রামী ভাইদের প্রতিহিংসাবশত হত্যা করেছে, আমি তার নিন্দা করব। আপনারা যদি ভয় না পেয়ে থাকেন, তবে আমাকে হত্যা করুন।” মিশেলকে অবশ্য ওরা হত্যা করেনি। তবে বহু অভিযুক্ত আসামীর সঙ্গে নিউক্যালেডোনিয়াতে নির্বাসনে পাঠিয়ে ধীরে ধীরে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।
ন্যায় ও সাম্যের জন্য যারা লড়ছে, তাদের আসামী সাজিয়েছে যে বিচারালয় তার বিচারকে প্রহসন বলাই বোধ হয় যুক্তিযুক্ত। এই প্রহসন অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্যারি কমিউনের কয়েকজন সদস্যের বিচারের জন্য, প্রতিক্রিয়াশীল ভার্সাই সরকারের উদ্যোগে। এই প্রহসনে কমিউনের বীর নেতৃত্বের কয়েকজনের উপরোক্ত জবানবন্দী সর্বকালের সংগ্রামী মানুষের সংগ্রামের পাথেয় হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
সমগ্র বিশ্বের জনগণের মুক্তি সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক এই প্যারি কমিউন। যথার্থ শ্রমিক-মেহনতি মানুষের রাষ্ট্র হিসাবে টিকে থাকতে না পারলেও প্যারি কমিউন সংগ্রামী মেহনতি মানুষের মনে বিপুল আশা সৃষ্টি করেছিল। যুগ যুগ ধরে শোষিত নিপীড়িত মানুষ যে জগতে পৌঁছনোর জন্য শুধু স্বপ্নই দেখেছিল, যে জগত ছিল শুধু তার কল্পনার মধ্যেই, ১৮৭১-এ ৭২ দিনের জন্য প্যারিসের শ্রমিক শ্রেণি সেই জগতটাকে বাস্তব করে তুলেছিল। আজ বিশ্বজুড়ে যে ‘কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক সংগীত’ গাওয়া হয় তা-ও প্যারি কমিউনের লড়াকু শ্রমিকের লেখা। কমিউনার্ডরা এই গান গাইতে গাইতে সেদিন বধ্যভূমিতে প্রাণ দিতে গিয়েছিল।
কমিউন ধ্বংস হয়েছে বিরুদ্ধ শক্তি প্রতিক্রিয়ার হাতে, কিন্তু তার সংগ্রাম ব্যর্থ হয়নি। সমাজবিপ্লবের শিক্ষায় মেহনতি মানুষকে শিক্ষিত করে তুলেছে। পরবর্তীকালের সফল শ্রমিক বিপ্লবে প্যারি কমিউনের অবদান বিরাট। তা বিশ্বজুড়ে শ্রমিক বিপ্লবকে এক ঐতিহাসিক পর্যায়ে উন্নীত করেছিল। শ্রমিক শ্রেণির সামনে এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিল। মার্কস শ্রমিক শ্রেণির এই বৈপ্লবিক সংগ্রামকে শত শত কর্মসূচি ও আলোচনা অপেক্ষা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ এক কার্যকর পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি প্যারি কমিউনকে কমিউনার্ডদের ‘স্বর্গ অধিকারের অসমসাহসিক অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছেন। লেনিন বলেছেন, সামাজিক বিপ্লবের প্রেরণা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে শ্রমজীবী মানুষের পরিপূর্ণ বন্ধনমুক্তির প্রেরণাই কমিউনের কারণ। এই চেতনার দিক থেকে দেখলে কমিউনের মৃত্যু নেই।
পটভূমি
প্যারি কমিউনের আলোচনা প্রসঙ্গে ফরাসি দেশের সমকালীন জটিল অর্থনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পরিবেশের কিছুটা আলোচনা হওয়া দরকার। মার্কস বস্তুত সেই সময়ের ঘটনাবলির প্রায় দিনলিপি ধরে ধরে আলোচনা করেছেন। সেই আলোচনা থেকে যেটা তিনি প্রমাণ করেছেন তা হল, তিনি শ্রেণিসংগ্রামের যে তত্ত্বের কথা বলেছেন সেটা সত্য। ইতিহাস যে নিছক ব্যক্তির দ্বারা রচিত হয় না, প্রকৃতি-বিজ্ঞানের মতো ইতিহাসও যে নৈর্ব্যক্তিক নিয়মের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সেই নিয়ম হল, অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠা শ্রেণিসংগ্রামের নিয়ম– এটা তিনি শুধু বলেননি, বিজ্ঞানের ভিত্তিতে প্রমাণ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, শ্রেণিসংগ্রামই ইতিহাসের চালিকা শক্তি। সভ্যতার বিকাশে মার্কসের বহু অবদানের মধ্যে এই চিন্তাটি অন্যতম অবদান।
সেদিন পৃথিবীর মধ্যে যে দেশ বিপ্লবের টানাপোড়েনে সবচেয়ে আন্দোলিত হচ্ছিল, সে হল ফরাসি দেশ। ফরাসি বুর্জোয়ারা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটানোরসাথে সাথে সামন্ততন্তে্রর সকল অবশেষকে এক ধাক্কায় খতম করতে পারেনি, সকল বুর্জোয়া গোষ্ঠীকে তখনও শ্রমিক শ্রেণির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি, নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বও মেটাতে পারেনি। বার বারই বুর্জোয়া গোষ্ঠীগুলি নিজেদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বে শ্রমিক শ্রেণির সাহায্য নিয়েছে। শ্রমিক শ্রেণিও সেই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজেদের সংহত করেছে। নিজেদের দাবিগুলি তুলে ধরেছে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। সংগ্রামের এই টানাপোড়েনের মধ্যে নানা ধরনের শ্রমিক সংগ্রামের তত্ত্ব এসেছে, তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে লড়তেই ব্ল্যাঙ্কি, প্রুঁধোর ভ্রান্ত তত্তে্বর বিরুদ্ধে মার্কসবাদীরা আদর্শগত সংগ্রাম চালিয়েছে।
১৭৮৯ সালে বাস্তিল দুর্গ আক্রমণের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লবের সূচনা ঘটে। বিপ্লবের আদর্শগত নেতৃত্ব ছিল বুর্জোয়াদের হাতে কিন্তু সেই আদর্শের বাস্তবায়নে বাহুবল জুগিয়েছিল শ্রমিক শ্রেণি। নিপীড়িত নারীরা এই সংগ্রামে অনন্য ভূমিকা পালন করেছিল। বিপ্লবের প্রয়োজনেই বুর্জোয়ারা জনতার হাতে অস্ত্র তুলে দিতে বাধ্য হয়েছিল। ফলে, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে জনতা সশস্ত্রভাবে নাক গলানোর ক্ষমতার অধিকারী ছিল। বুর্জোয়াদের পক্ষে এটা ছিল অশনি সঙ্কেত। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বুর্জোয়ারা বিপ্লবের পথে এগোতে রাজি ছিল না। নতুন ব্যবস্থায় বিত্তবানদেরই ছিল আধিপত্য আর এগোলে এই আধিপত্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বুর্জোয়াদের অন্যতম নেতা বারনাভ ১৭৯১তেই হুঁশিয়ার করে দিয়ে বললেন, ‘‘আমরা কি বিপ্লব সাঙ্গ করব, না আবার বিপ্লব আরম্ভ করব? স্বাধীনতার পথে আর এক পা এগোলে রাজতন্তে্রর বিনাশ হবে। সাম্যের পথে আর এক পা গেলে সম্পত্তির বিলুপ্তি ঘটবে।” অথচ সশস্ত্র জনতা, যার মধ্যে মেহনতি মানুষই বেশি, তারা চাইছিল বিপ্লব আরও এগোক। যারাই পিছতে চাইছিল তাদেরই পতন ঘটছিল। এই ধারাতেই বিপ্লবের নেতা দাঁতো ও মারা-র মৃত্যু ঘটে। বুর্জোয়ারা তখনও রাষ্ট্রকে সংহত করতে পারেনি।
এরপর ১৮০০ সালে আততায়ীর মতো ইতিহাসের মঞ্চে আবির্ভূত হন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। অতর্কিতে আঘাত হানেন বিপ্লবের মর্মমূলে। জবরদস্তি ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট কায়েম করেন বুর্জোয়া স্বৈরাচারী (ডেসপটিজম) রাজতন্ত্র। তাঁর ‘কোড নেপোলিয়নে’ প্রজাতন্তে্রর কিছু দাবি মানা হলেও মৃত্যু হয় প্রথম ফরাসি প্রজাতন্তে্রর। ১৮১৫ তে ওয়াটার্লুর যুদ্ধে নেপোলিয়নের পতন ঘটার পর ফ্রান্সে পুরাতন সামন্তী ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ক্ষমতায় বসানো হয় পুরনো বুরবোঁ রাজবংশের অষ্টাদশ লুইকে। তাঁর মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন তাঁর ভাই দশম চার্লস। কিন্তু ইতিহাসের গতিকে সাময়িকভাবে মন্থর করা গেলেও তার গতিমুখকে পিছনের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। বাতিল সমাজব্যবস্থাকেও আর ফিরিয়ে আনা যায় না। (ক্রমশ)