Breaking News

‘পেহলু খান নির্দোষ’, কিন্তু খুনিরা!

এ কেমন শাসন! এ জিনিস কোনও সভ্য সমাজে ঘটতে পারে? যে মানুষটিকে পিটিয়ে মেরে হিন্দুত্ব এবং গো–মাতাকে রক্ষার ধ্বজা ওড়াল বিজেপি–সংঘ পরিবারের গো–রক্ষকরা, যার খুনিরা পুলিশের কারসাজিতে ছাড়া পাওয়ার পর তাদের রীতিমতো বীরের সংবর্ধনা দিল হিন্দুত্ববাদী নেতারা– ৩০ অক্টোবর রাজস্থান হাইকোর্টের রায় বলেছে সেই খুন হওয়া পেহলু খান গোরু পাচারকারী নন, তিনি দুধ ব্যবসায়ী৷ গোহত্যা দূরে থাক, তিনি সযত্নে গো–পালন করেছেন৷ মৃত্যুর পর নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার কোনও সুফল পৌঁছতে পারল না পেহলু খানের কাছে

২০১৭ সালের এপ্রিলে জয়পুর থেকে গরু কিনে হরিয়ানা ফেরার পথে জয়পুর–দিল্লি জাতীয় সড়কে গো–রক্ষকদের হামলার মুখে পড়েন দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খান ও তাঁর দুই ছেলে৷ গরু কেনার রসিদ দেখিয়েও গো–রক্ষকদের হাত থেকে রেহাই পাননি তাঁরা৷ আক্রান্ত হন গরু বহনকারী ট্রাকের চালকও৷ দু’দিন পর মারা যান পেহলু খান৷ তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি অনুযায়ী ৮ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে বাধ্য হয়েছিল রাজস্থান পুলিশ৷ পরে নিম্ন আদালতে ছাড়া পেয়ে যায় অভিযুক্তরা৷

প্রশ্ন ওঠে, অপরাধ করেও কী করে ছাড়া পেয়ে গেল অভিযুক্তরা, আর পেহলু খানদের বিরুদ্ধে গোরু–পাচার ও গো–হত্যার মিথ্যা মামলা চলতে থাকল? মামলা সাজানোর সময় বিজেপি ছিল রাজস্থানের মসনদে৷ বিজেপি সরকার খুনিদের বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করেছে, এ কথা স্পষ্ট৷

কিন্তু সরকার বদলের পর কংগ্রেস সরকারও কি বিজেপির মতো দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছে না? না হলে তারা কেন খুনিদের শাস্তির জন্য কোনও রকম চেষ্টা করল না! অবশেষে রাজস্থান হাইকোর্ট বলেছে– সমস্ত তথ্যপ্রমাণে স্পষ্ট গরুগুলি গোমাংসের জন্য নয়, দুধের ব্যবসার জন্যই কিনেছিলেন পেহলুরা৷ আদালতকে বলতে হয়েছে, আইনের অপব্যবহার করেছে সরকার৷ আজ পেহলু খানের খুনিদের চরম শাস্তি চাইবে না কেন দেশ? একটা মানুষের প্রাণ ওরা কেড়ে নিয়েছে শুধু ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে জিগির তোলার জন্য৷ যাদের নির্দেশে এ কাজ হয়েছে, তারা আজও দেশের মসনদে৷ সেই হিন্দুত্ববাদের চ্যাম্পিয়ন নেতা–মন্ত্রীদের কেন কঠোর শাস্তি হবে না?

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ১৪ সংখ্যা)