আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার মানুষ পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন। ৮ অক্টোবর থেকে সেখানে লাগাতার চলছে বিক্ষোভ। মানুষ দাবি তুলছেন, অবিলম্বে পুলিশের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনি ‘স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াড’ ভেঙে দিতে হবে এবং দেশের মধ্যে সমস্ত ধরনের পুলিশি সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।
নাইজেরিয়ায় ১৯৯২ সালে তৈরি হয় এই ‘স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াড’ বা সার্স। ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল, সশস্ত্র চুরি-ছিনতাই বন্ধ করা। কিন্তু অচিরেই এই বাহিনির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধ, অত্যাচার, চুরি এমনকি হত্যার অভিযোগ উঠতে থাকে। দেশের মানুষ বছরের পর বছর ধরে সহ্য করেছে সার্সের বর্বরতা। অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ফাঁস হয়ে যায় একটি ভিডিও ফুটেজ, যাতে রয়েছে সার্স-অফিসারদের নৃশংস নরহত্যার ছবি। সমাজমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সেই ছবি। বিক্ষুব্ধ মানুষ পথে নামে। পুলিশও গুলি, কাঁদানে গ্যাস, লাঠি ঝাঁপিয়ে পড়ে হিংস্র বর্বরতায়। বিক্ষোভের প্রথম ছ’দিনে পুলিশি হামলায় মৃত্যু হয় অন্তত দশ জনের। এতে ক্রোধ ফুঁসে ওঠে নাইজেরিয়ার মানুষের। দেশের বিশিষ্টজনেরাও আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়ান।
চাপে পড়ে ১১ অক্টোবর সরকার সার্স ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। জনগণের দাবি মেনে পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কারের প্রতিশ্রুতিও দেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু দেশের মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে গেছে নাইজেরিয়ার সরকারের। আন্দোলনকারীদের মতে, এর আগেও অনেকবার সরকার এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু রক্ষা করেনি। তাঁরা গোটা পুলিশি ব্যবস্থার কার্যপ্রণালী খুঁটিয়ে দেখে তার খোলনলচে পাল্টানোর দাবি জানিয়েছেন, পাশাপাশি অভিযুক্ত সার্স-অফিসারদের শাস্তি চেয়েছেন।
বাস্তবে তাঁদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণ করে ১৩ অক্টোবরই পুলিশ ‘স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটি’ ইউনিট’ বা ‘সোয়াট’ গড়ার কথা ঘোষণা করেছে। বিক্ষোভকারীদের মতে, সার্স ভাঙতে বাধ্য হলেও তার বদলে একই ধরনের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনি ‘সোয়াট’ তৈরি করে মানুষকে ধোঁকা দিতে চাইছে জনবিরোধী সরকার। এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন নাইজেরিয়ার মানুষ।
(সূত্র : পিপলস ডিসপ্যাচ, ১৪ অক্টোবর, ২০২০)