গভীর উদ্বেগ ও বেদনার বিষয় যে, মদের ব্যাপক প্রসারের কারণে মেখলিগঞ্জ মহকুমার সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ বর্তমানে অত্যন্ত বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি ছোট ছেলেমেয়েরাও মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও স্কুল চলাকালীনই ছাত্ররা ক্লাসরুমে মদের আসর বসাচ্ছে। মদ খেয়ে শিক্ষক পড়াতে আসছেন ক্লাসে। মদের কারণে বহু পরিবারে চরম অশান্তি চলছে। একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিটি মদে আসক্ত হওয়ায় পরিবারের অর্থনৈতিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। মদের কারণে মেখলিগঞ্জ মহকুমা জুড়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে চলেছে। আমার মনে হয়, মদের প্রসারের জন্য নির্বাচনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়।
এই অবস্থায় মেখলিগঞ্জ মহকুমার ভোটবাডি, কুচলিবাড়ি, হলদিবাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছে দেবে। শুধু রাজস্ব আদায় বাড়ানোর নামে রাজ্য সরকারের মদ প্রসারের সর্বনাশা সিদ্ধান্ত কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
এলাকার বাসিন্দা হিসাবে আমার দাবি, কোনও অবস্থাতেই মেখলিগঞ্জ মহকুমার কোথাও নতুন করে মদের দোকান খোলা চলবে না। যত্রতত্র মদ বিক্রি বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং অবিলম্বে রাজ্য জুড়ে মদ নিষিদ্ধ করতে হবে। এছাড়া মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশ্যে মদ্যপান বন্ধে মেখলিগঞ্জ মহকুমা প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এলাকার পরিবেশ সুস্থ রাখতে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ছাত্র-যুব-মহিলা সহ সকলকে মদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় মদ বিরোধী নাগরিক কমিটি গড়ে আন্দোলনে নামতে হবে।
সামাজিক পরিবেশ এভাবে ক্রমাগত বিষাক্ত হতে থাকলে আমাদের কারও ঘরের সন্তানই কিন্তু রেহাই পাবে না।
রঞ্জিত কুমার রায়
মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার