এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ৭ মে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে নিচের চিঠিটি পাঠিয়েছেন।
এ রাজ্যে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আপনি নির্বাচন পরবর্তী হিংসা বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ঘোষণা করার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক হিংসা, ঘর জ্বালানো, লুঠ ও হত্যার মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে।
আমরা মনে করি, বিগত কয়েক মাস ধরে, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারের সময়ে বিভিন্ন দলের নেতাদের লাগাতার প্ররোচনামূলক বক্তব্য ও হুমকির বিষাক্ত ফল এই নির্বাচনোত্তর রাজনৈতিক হিংসা। আমাদের সুচিন্তিত অভিমত হল, বর্তমান পরিস্থিতিতে উপর থেকে সরকারের আবেদন বা শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপের দ্বারাই হিংসা বন্ধের চেষ্টা কার্যকর হবে না। তাই স্থানীয় জরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সমাজসেবী সংগঠন, ক্লাব, এলাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে নিয়ে নাগরিক কমিটি গঠন করে প্রশাসনের সহযোগিতায় হিংসা বন্ধ করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আশা করি, আপনি এ বিষয়ে অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
সাথে সাথে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লোকাল ট্রেন বন্ধ করার যে ঘোষণা করা হয়েছে, তার ফলে যে সব সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সে সম্পর্কেও আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রথমত, ট্রেন বন্ধ হলেও যেহেতু সরকারি-বেসরকারি অফিস সহ নানা ক্ষেত্রে কাজ চালু রয়েছে, তাই যাঁরা অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে আসছেন, তাদের অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে বা অন্য পরিবহণে ভিড়ে ঠাসা অবস্থায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। যে সংক্রমণ প্রতিরোধের কারণে ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে, বর্তমান অবস্থায় অন্যান্য পরিবহণে সেই পারস্পরিক দুরত্ববিধি না মানায় সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় আমাদের প্রস্তাব, সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে সীমিত সংখ্যায় হলেও লেকাল ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা সহ অন্যান্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও করোন সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
দ্বিতীয়ত, লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় রেল-হকার, বিপুল সংখ্যক গৃহপরিচারিকা ও অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কর্মহীন এই মানুষদের বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, মাস্ক-সাবান-স্যানিটাইজার ও ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করছি।