শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মী বুদ্ধিজীবী মঞ্চের পক্ষ থেকে ৩০ মে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল মঞ্চ৷ প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই অবাঞ্চিত পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয়েছিল৷ শাসক দলের নেতা–নেত্রী এবং সরকারের দায়িত্বশীল পদাধিকারীরা সন্ত্রাসের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে আমাদের প্রতিবাদকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন৷ তাতে ‘সত্য’ এবং ‘বাস্তব’ পাল্টে যায় না৷ সবকিছুই একইভাবে চলছিল– নানা স্তরে একদিকে জনপ্রতিনিধি এবং অন্যদিকে দলের অনুগত সমাজবিরোধীদের দলবদলের হিড়িক, সিন্ডিকেটের মতো সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীগুলির রমরমা, সাংবিধানিক বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির রাজনীতিকরণ, কেন্দ্রে বা রাজ্যে শাসক দলের প্রতি প্রশাসনের আনুগত্য এবং পক্ষপাতিত্ব, ধর্মকে রাজনৈতিক–সামাজিক বিভাজনের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা– সবই তো অবাধে চলছিল৷ চারিদিকে বিষবৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল৷ কোনও একটি উপলক্ষে বিশেষ করে নির্বাচনের সময় ‘উৎসব’ করে সেই বিষফল জনগণকে ভক্ষণ করতে বাধ্য করা হয়৷ নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা বর্জন করে, বা বিশাল আধাসেনা বাহিনী নির্বাচনের সময় বা তার আগে পরে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়– একাধিক বুথে ভোট লুঠ, কারচুপি, রিগিং, বুথ জ্যাম, ভীতি প্রদর্শন চলতেই থাকে৷ এর সঙ্গে চলেছে সমস্ত রীতি–নীতি শোভনতাকে পদদলিত করে পরস্পরের প্রতি কুৎসিত অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ, সমস্ত কিছুকে কুক্ষিগত করার জন্য চলেছে কোটি কোটি কালো টাকার অবাধ খেলা৷ নির্বাচনের ফলাফল বেরিয়ে যাওয়ার পরদিন থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় সেই পরিচিত পদ্ধতির পৌনঃপুনিকতায়৷
রাজনৈতিক দলগুলিকে জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেয় সুশাসনের জন্য, জনগণের কল্যাণের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য, সমানাধিকার, বাকস্বাধীনতা, সুবিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য– নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার জন্য নয়, সন্ত্রাসের জন্য নয়, অপরাধের জন্য নয়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধবংস করার জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে কুৎসিত দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য নয়৷ রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এটাই আমাদের একমাত্র আবেদন৷