‘‘আমার মেয়েও ধর্ষিতা হতে পারে, আপনার মেয়েও পারে এবং যে কোনও সময়”–আজ এই রাজ্য যেখানে পৌঁছেছে তাতে এই আশঙ্কাই আমাদের তাড়া করে। ২৮ এপ্রিল মৌলালি যুবকেন্দ্রে নারী নিগ্রহ বিরোধী নাগরিক কমিটির সভায় ক্ষোভের সাথে এ কথা বললেন বাস্কেট বলের জাতীয় কোচ অনিতা রায়। তিনি আরও বলেন, একদিকে কলকাতাকে ঝাঁ চকচকে করে সাজানো হচ্ছে, পাশাপাশি চলছে ধর্ষণের বীভৎসতা।
অধ্যাপিকা মীরাতুন নাহার বলেন, ক্ষমতায় পুরুষ-মহিলা যিনিই আসুন নারীদের উপর নির্যাতনের কোনও বিরতি নেই। তাঁর আক্ষেপ, একজন নারী মুখ্যমন্ত্রী হয়েও নারীদেহ নিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করতে পারেন না। মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী সুজাত ভদ্র, বলেন, শাসক রাজনৈতিক দলগুলি দুর্বৃত্তদের পোষে, লালন-পালন করে, ভোটে তাদের ব্যবহার করে। সেই কারণে আমাদের লড়াই অনেক গভীর। শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মী-বুদ্ধিজীবী মঞ্চের অন্যতম সম্পাদক দিলীপ চক্রবর্তী, নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায় কীভাবে নির্যাতিতা নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সে ইতিহাস তুলে ধরেন। ডাঃ নূপুর ব্যানার্জী বলেন, ছোটবেলা থেকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয় তুমি নারী। তাকে বোঝাতে হবে, বড় হয়ে আত্মসম্মান ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে বাঁচতে হবে। বাবা-মাকে পরিবারের মধ্যে এই দায়িত্ব নিতে হবে।
ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার সূর্যবিকাশ চক্রবর্তী বলেন, অপরাধীরা নেতা-মন্ত্রীর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে আশ্রয় কিনে নেয়। শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যায়। মহিলা ফুটবলের জাতীয় কোচ কুন্তলা ঘোষদস্তিদার বলেন, আমাদের ভয় পেলে চলবে না। মেয়েদের ট্রেনিং দিতে হবে, যাতে তারা রুখে দাঁড়াতে পারে। কমিটির সম্পাদক কল্পনা দত্ত বলেন, যখনই যেখানে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে আমাদের ছুটে যেতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী হাঁসখালির মতো ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করলে তাঁর দপ্তরের সামনে ধরনা দিতে হবে। এই সভা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়। সভায় সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী পার্থসারথী সেনগুপ্ত।