৮ জুন মুখ্যমন্ত্রীর চা-শ্রমিকদের ১৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা প্রসঙ্গে এআইইউটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস ওই দিন এক বিবৃতিতে বলেন, চা-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে মালিকদের স্বার্থে অযথা টালবাহানা করা হচ্ছে। ফলে চা শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার দু’বছরের মধ্যে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য অ্যাডভাইসারি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। আবার রাজ্য সরকার এ বছর ফেব্রুয়ারিতে নতুন পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিও অজ্ঞাত কারণে এখনও ন্যূনতম মজুরি বিষয়ে কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। এই সরকার বা পূর্বের কোনও সরকারই চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে এবং চা-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি অবিলম্বে নির্ধারণ ও চালু করার দাবিতে চা-শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ না করে মুখ্যমন্ত্রী যে সামান্য মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন তার আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি এবং অবিলম্বে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও চালু করার দাবি করছি।
এনবিটিপিইইউ-এর প্রতিবাদঃ ৮ জুন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে নর্থ বেঙ্গল টি প্ল্যান্টেশন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় বলেন,
দীর্ঘ সাত বছর যাবৎ চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ভাবে চা-শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৫ সালের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭-এর গোড়াতেই ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। কিন্তু আজও তা হয়নি। এর মধ্যে রাজ্য সরকার একতরফাভাবে, মর্জিমাফিক এবং বৈষম্যমূলক ভাবে কয়েক দফায় যে অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে তা এই শিল্পের মজুরি বা বেতনের ক্ষেত্রে নৈরাজ্য কায়েম করেছে। বেতনক্রম সংশোধন না হওয়ায় কর্মচারীদের একটি বিরাট অংশের মাসিক ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং সর্বস্তরের শ্রমিক-কর্মচারীরাই প্রত্যেক মাসে বিরাট অঙ্কের লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। এই অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার লিখিত ও অফিসিয়াল কমিটমেন্ট সাপেক্ষে স্বল্প সময়ের জন্য মজুরি বা বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত ত্রিপাক্ষিক বোঝাপড়ায় যেতে আমরা সম্মত হয়েছিলাম এবং এ ব্যাপারে দু-দুটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বিগত দু’মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২ জুনের বৈঠকে শ্রমসচিব ১০ দিনের মধ্যে শ্রমমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিষয়টি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। এই অবস্থায় হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা আমাদের বিস্মিত করেছে। ১৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির এই ঘোষণা অগণতান্ত্রিক ও অন্যায়। এর কোনও ভিত্তি বা যুক্তি আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানানোর সাথে সাথে শ্রমসচিবের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের লক্ষ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার দাবি জানাচ্ছি।