নিট ইউজি ও পিজি এবং ইউজিসি ও সিএসআইআর নেট পরীক্ষায় দুর্নীতির সব অভিযোগের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি ও এনটিএ বাতিলের দাবিতে ৪ জুলাই সর্বভারতীয় প্রতিবাদ দিবসের ডাক দিয়েছিল এআইডিএসও। এ দিন কলকাতায় হাজরা মোড়ে মিছিল হয়, কলেজ স্ট্রিটে মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রীরা। রাজ্য জুড়ে অবরোধ, বিক্ষোভ, মিছিল,প্রতিবাদ সভা হয়। কলেজ স্ট্রিটে মিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়।
ওই দিনই বিকেলে সংগঠনের রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে কমরেড বিশ্বজিৎ রায় বলেন, দেশ জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে চরম দুর্নীতির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী গড়ে ওঠা কেন্দ্রীয় সংস্থা এনটিএ পরিচালিত সমস্ত কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলিতে যে চরম দুর্নীতি হয়েছে তা সারা দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি করেছে। একদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষায় দুর্নীতি আর অন্য দিকে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বেনিয়ম, স্বজনপোষণ দুর্নীতি গোটা শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। রাজ্যে ৮২০৭টি সরকারি স্কুল বন্ধ হতে চলেছে, পাশ-ফেল নেই, উচ্চমাধ্যমিকের বোর্ড পরীক্ষা তুলে দিয়ে চালু হচ্ছে সেমেস্টার, শিক্ষকের অভাবে হাজার হাজার স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না, গড়ে উঠছে অসংখ্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কলেজে ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালুর প্রতিবাদে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ, গণতান্ত্রিক ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে, মেডিকেল শিক্ষায় ‘সিবিএমই’ এবং ‘নেক্সট’ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীর সমাবেশ ও মহামিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
ছাত্র সমাবেশ ও মহামিছিলের প্রস্তুতি পর্বে জুলাই-আগস্ট দু-মাস জুড়ে সারা রাজ্যে ১ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ করা হবে। এই কর্মসূচির বার্তা নিয়ে রাজ্যের ১৫,০০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচার হবে। কর্মসূচির সমর্থনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গেট থেকে রাজপথ রাজ্য জুড়ে ৬,০০০ সভা হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ল-কলেজ, প্যারামেডিকেল, নার্সিং কলেজ, প্রাইভেট কলেজ, মেস, হোস্টেল সহ সব মিলিয়ে এই দু-মাসে ৫,০০০ ‘সরকারি শিক্ষা বাঁচাও কমিটি’ গঠন করা হবে। স্কুল- কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপকভাবে যুক্ত করে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষা করতে গণঅঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
২৯ জুলাই দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও সর্বজনীন শিক্ষার জনক বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে সরকারি স্কুল বন্ধের প্রতিবাদে এবং সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষার দাবিতে ‘সারা বাংলা অঙ্গীকার দিবস’ পালন করার কর্মসূচি গ্রহণ কর়েছে সংগঠন। ১১ আগস্ট স্বাধীনতা আন্দোলনের আপসহীন ধারার বিপ্লবী শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবসে বিপ্লবীদের স্বপ্নপূরণ, শিক্ষার অধিকার রক্ষার্থে ‘দেশ বাঁচাও শিক্ষা বাঁচাও দিবস’ পালন করবে এআইডিএসও।