সংসদে পাশ হওয়া তিনটি সর্বনাশা বিলের তীব্র নিন্দা করে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১৮ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বলেন,
কেন্দ্রীয় সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন (সংশোধনী) বিল ২০২০, ফারমারস প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) বিল এবং ফারমারস (এম্পাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অফ প্রাইস অ্যাসিওরেন্স অ্যান্ড ফেয়ার সার্ভিসেস বিল ২০২০ নামে তিনটি সর্বনাশা দানবীয় বিল লোকসভায় পাশ করিয়েছে। এগুলি কিছুদিন আগেই অর্ডিন্যান্স আকারে তারা নিয়ে এসেছিল। এর মধ্য দিয়ে সমস্ত প্রকারের ডাল, খাদ্য শস্য, তৈলবীজ, পেঁয়াজ, আলুকে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে কৃষি পরিকাঠামো এবং অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও তার বন্টন পুরোপুরি দেশি এবং বিদেশি করপোরেট হাঙরদের হাতেই চলে যাবে। ফলে লাভবান হবে একমাত্র তারাই। কৃষকরা অ্যাগ্রো-মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলির দাদন নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হতে বাধ্য হবেন। এ কথা স্পষ্ট যে, এই দানবীয় আইনের মধ্য দিয়ে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নীতি পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। সরকারি উদ্যোগে চাল-গম সংগ্রহ করার ব্যবস্থা একসময় শক্তিশালী কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছিল। দরিদ্র মানুষ ও মাঝারি চাষিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যবস্থাকে বিলোপ করা হবে। এই দানবীয় আইন শুধু কৃষক নয় সমস্ত সাধারণ মানুষের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।
এই আইন সামগ্রিকভাবে কৃষক বিশেষত মাঝারি এবং ছোট কৃষকদের ধ্বংসের পথে ঠেলে দেবে। ইতিমধ্যেই চার লক্ষের বেশি কৃষক এবং খেতমজুর আত্মহত্যা করেছেন। কোনও সন্দেহ নেই এই সর্বনাশা নীতি একদিকে দরিদ্র কৃষকদের আরও বেশি করে ধ্বংস ও আত্মহননের পথে ঠেলে দেবে। একই সাথে ধনী চাষি, গ্রামীণ জোতদার এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলির সর্বোচ্চ মুনাফার সুযোগ আরও বাড়িয়ে দেবে।
এই পরিস্থিতিতে সর্বভারতীয় কৃষক সংগঠনগুলির কো-অর্ডিনেশন কমিটি (এআইকেএসসিসি), যার অন্যতম সদস্য এ আই কে কে এম এস, ২৫সেপ্টেম্বর সারা ভারতের গ্রামীণ এলাকায় বনধের ডাক দিয়েছে। আমরা জনবিরোধী এবং কৃষক বিরোধী এই তিনটি আইনের প্রতিবাদে আহূত এই বনধকে সর্বতোভাবে সমর্থন করছি।
জনগণের কাছে আমাদের আবেদন, এই জনবিরোধী নীতি অবিলম্বে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করতে শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ধ্বনিত করুন।