গুজরাট গণহত্যা ছিল স্বাধীন ভারতের জঘন্যতম অপরাধ। বিজেপির বদান্যতায় স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের অমৃতটা দেশের জঘন্যতম অপরাধীরা আস্বাদন করল, আর গরলটা ধারণ করল নির্যাতিতা বিলকিস, অথচ হওয়ার কথা ছিল বিপরীত। প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয়, গোটা দেশের মহিলাদেরও নিরাপত্তাহীনতার সামনে ঠেলে দিলেন। গুজরাটের বিলকিস বানোর ধর্ষণকারী ও তার শিশুকন্যা সহ পরিজনদের হত্যাকারী ১১ জন অপরাধীকে জেল থেকে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে মুক্ত করার প্রতিবাদে ২ সেপ্টেম্বর নারী নিগ্রহ বিরোধী নাগরিক কমিটি আয়োজিত কলেজ স্কোয়ারের মহাবোধি সোসাইটি হলে এক প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক দুর্গাপ্রসাদ চক্রবর্তী। সভার শুরুতে কমিটির সম্পাদিকা কল্পনা দত্ত কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। মানবাধিকার আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা অধ্যাপক সুজাত ভদ্র বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সংখ্যাগুরুবাদীদের অত্যাচারের যে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দেশে বিজেপি চালু করতে চাইছে এই ঘটনা তারই অংশ। যেভাবে অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাতে দেশের আইনকেও লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে তিনি বলেন।
অধ্যাপিকা মীরাতুন নাহার বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে যে ভাবে হিংসা ও বিদ্বেষের জায়গায় নিয়ে গেছেন তা আমাদের মাথাকে লজ্জায় নত করে দেয়। ব্রাহ্মণ ও সংস্কারী জঘন্য অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া একটা বিশেষ মতাদর্শের পরিচয়, যা বিজেপি এ দেশে আনতে চাইছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক অভিজিৎ রায় বলেন, বিজেপি দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইছে। অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়ার ফলে অত্যাচারিতের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকল না।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী অধ্যাপক কাঞ্চন দাশগুপ্ত বলেন, আজ সারা দেশের বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন সমস্ত কিছুকে শাসক শ্রেণি কুক্ষিগত করে রেখেছে। ফলে ন্যায়বিচারের জন্য শুধু বিচারব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে না থেকে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সভার শেষে সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক অশোক সামন্ত সর্বত্র সমস্ত স্তরের মানুষকে নিয়ে নারী নিগ্রহ বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সকলেই তাঁর আহ্বানে সম্মতি জনান।