মহারাষ্ট্রের দাহানুতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি সম্মেলনে আর এস এস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, ‘অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি করা হবেই৷ না হলে ভারতীয় সংস্কৃতির শিকড় কাটা পড়বে’৷ তিনি আরও বলেছেন, ‘নতুন করে রামমন্দির গড়ার অধিকার আমাদের রয়েছে, কারণ এটা আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক’৷ হায়রে আরএসএস–বিজেপির ভারতীয় সংস্কৃতি! সেই ‘ভারতীয় সংস্কৃতির টানেই বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ নাইট ক্লাবের উদ্বোধন করছেন? নাইট ক্লাবও কি তাঁদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক? ‘উন্নাও’ স্থানটির নাম আজ আমাদের সকলেরই জানা৷ বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আর সেই বিধায়ককে বাঁচাতে প্রশাসন তথা রাজ্যের বিজেপি সরকারের সমস্ত রকম অপচেষ্টার কল্যাণে উত্তরপ্রদেশের উন্নাও আজ পরিচিত নাম৷ সেই উন্নাও লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ সম্প্রতি শহরের একটি নাইট ক্লাবের উদ্বোধন করলেন৷ ফিতে কেটে নাইট ক্লাবের দরজা খুলে দিলেন নিজেই৷
এ কোন সংস্কৃতি? আসলে আর এস এস–বিজেপি মুখে যা–ই বলুক না কেন, তাদের সংস্কৃতি একটাই, তা হল মানুষকে অমানুষ করে তোলার সংস্কৃতি৷ তার জন্য যা ইচ্ছে তাই তারা করতে পারে৷ সেখানে কোনও আদর্শ নেই, বিবেক–মনুষ্যত্ব নেই, কোনও মূল্যবোধ নেই– আছে শুধু লোক ঠকানো৷ তাই ধর্মীয় অন্ধতার জালে, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিষবাষ্পে মানুষকে উন্মত্ত করে তোলা, পাশাপাশি মদ–জুয়া–সাট্টা–বিকৃ যৌনতায় মাতিয়ে রাখা৷ যাতে মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে, যুক্তিবিচারহীন–আদর্শহীন রোবটে পরিণত হয়৷ বিজেপি–আরএসএস এমন মানুষই চায়৷ কারণ এই মানুষগুলোই তাদের খেলার পুতুল৷ এদের দিয়ে সব করানো যায়৷ এরা কোনও প্রশ্ন করে না৷ এই মানুষগুলোই অন্ধের মতো ছুটে যায় নির্বাচন কেন্দ্রের দিকে, ভোট দেয় যন্ত্রের মতো৷ তাই রামমন্দির আর নাইট ক্লাব, বিজেপি–আরএসএস নেতাদের কাছে পাশাপাশি সহাবস্থান করে৷
(৭০ বর্ষ ৩৬ সংখ্যা ২৭ এপ্রিল, ২০১৮)