কৃষিক্ষেত্রে কর্পোরেট পুঁজিগোষ্ঠীর অবাধ অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এর ফলে কৃষক শোষণ ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাবে। এর বিরুদ্ধে সংযুক্ত কিসান মোর্চার আহ্বানে দেশ জুড়ে ৯ আগস্ট ‘কর্পোরেট হটাও’ দিবস পালন করে এআইকেকেএমএস। এ দিন গোটা দেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গেও সংগঠনের পক্ষ থেকে অসংখ্য জায়গায় কৃষক-খেতমজুরদের সংগঠিত করে বিক্ষোভ, ডেপুটেশন, প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামে গ্রামে, ব্লকে ব্লকে হাজার হাজার কৃষক-খেতমজুর কর্পোরেট বিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
বহুজাতিক কর্পোরেট কোম্পানিগুলির স্বার্থে ১৯৯০ সালে মনমোহন সিং সরকারের আমলে সাম্রাজ্যবাদী উদার অর্থনীতি গ্রহণ করা হয়। শুরু হয় কৃষিক্ষেত্রে কর্পোরেট শোষণের থাবা। কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি কমানো, চুক্তি চাষের প্রবর্তন ইত্যাদির মাধ্যমে কর্পোরেট পুঁজিকে কৃষিক্ষেত্রে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে। বিজেপিসরকার এই নীতিকে আরও বেগবান করে। ২০২০ সালে করোনা কালে সংসদে তিনটি কালা কৃষি আইন পাস করিয়ে দেশের কৃষিক্ষেত্রটি পুরোপুরি কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দিল্লির ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন তা রুখে দেয়। ৭৫০ জন কৃষকের আত্মবলিদানের মূল্যে এই আন্দোলন বিজেপি সরকারকে বাধ্য করে ওই তিনটি কালা কৃষি আইন বাতিল করতে।
আন্দোলনের চাপে সরকার সাময়িক পিছু হটলেও কর্পোরেট স্বার্থরক্ষার নীতি থেকে তারা সরে আসেনি। নানা সময়ে কোটি কোটি টাকা ব্যাংকঋণ মকুব করে দেওয়া, নানা ক্ষেত্রে করছাড় ইত্যাদি উপায়ে তারা কর্পোরেট কোম্পানিগুলির সেবা করে চলেছে। এবার কেন্দ্রীয় বাজেটেও তা দেখা গেছে। বাজেটে সারে ভর্তুকি কমানো হয়েছে, কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প এনরেগা-তে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। বাস্তবে কৃষিক্ষেত্রের জন্য কিছুই দেওয়া হয়নি।
কর্পোরেট বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর করতে ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতবর্ষের ২২টি রাজ্য থেকে কৃষক ও খেতমজুররা এ আই এ কে এম এস-এর উদ্যোগে নয়া দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে এক মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এই সমাবেশে এস কে এম-এর কয়েকজন সর্বভারতীয় নেতাকেও আহ্বান জানানো হয়েছে।