এখন আর এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে অতিমারির এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, ৩ লক্ষ ছুঁতে চলা মৃত্যু, দৈনিক চার লক্ষ মানুষের সংক্রমণের ঘটনার জন্য মূলত দায়ী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অপদার্থতা। করোনার প্রথম ঢেউ চলে যাবার পর আসন্ন দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতির যে সময় সরকার পেয়েছিল তাকে ঠিকমতো কাজে লাগালে পরিস্থিতির মোকাবিলা আজ এত কঠিন হত না। অথচ দেশি এবং বিদেশি নানা চিকিৎসা এবং বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল। সরকার সেই সতর্কবার্তায় কান দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকার তাদের আসল কর্তব্য ভুলে তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রথম ঢেউ মোকাবিলার সাফল্য আত্মসাৎ করে নরেন্দ্র মোদির ‘বিশ্বনেতা’র ইমেজ তৈরিতে। অথচ এই সময়ে শুধু ভারতে নয় গোটা বিশ্বে এমনিতেই ধীরে ধীরে রোগের প্রকোপ অনেকখানি কমে এসেছিল।
প্রধানমন্ত্রী গত জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের সভায় গর্ব জাহির করে বললেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ভারতে কোভিড সংক্রমণের সুনামি আসবে। আজ ভারতে কোভিড কেস দ্রুত কমছে। … সারা বিশ্বকে অতিমারির সঙ্গে লড়তে সাহায্য করছি।’ চিত্রনাট্য সাজানোই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির জাতীয় পদাধিকারীদের বৈঠকে প্রস্তাব নেওয়া হয়ে গেল (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘গর্বের সঙ্গে বলা যায়, নরেন্দ্র মোদির দক্ষ, সংবেদনশীল, দায়বদ্ধ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ভারত কোভিডকে পরাজিত করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দিল্লি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনে (৮ মার্চ) বললেন, “আমরা অতিমারির শেষ পর্বে পৌঁছে গেছি। এই যদি গোটা সরকার এবং সরকারি দলের মনোভাব হয় তবে তারা যে করোনা অতিমারির মতো এক ভয়ঙ্কর আক্রমণের মোকাবিলা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হবে সে বিষয়ে আর কারও সন্দেহ থাকে কি?
সরকারের এই আত্মসন্তুষ্টি এবং নিজেদের চ্যাম্পিয়ন প্রমাণ করার উদগ্র চেষ্টাই তাদের গা-ছাড়া মনোভাবের দিকে ঠেলে দেয়। এই মনোভাব থেকেই সরকার প্রতিষেধক উৎপাদনে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেয়নি। যেটুকুওবা উৎপাদন হয়েছে, বিশ্বনেতা হওয়ার লোভে সেগুলির একটা বড় অংশকেই প্রধানমন্ত্রী নানা দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এখনও পর্যন্ত দেশে ৩ শতাংশ মানুষকেও টিকা দেওয়া যায়নি। টিকার জন্য হাহাকার চলছে। দেশ জুড়ে। অথচ যথাসময়ে টিকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলে, মূলত একটি বেসরকারি সংস্থার উপর দায়িত্ব দিয়ে চোখ বন্ধকরে না ফেললে, রাষ্ট্রায়ত্ত আরও যে বহু প্রতিষ্ঠান নানা রকমের টিকা উৎপাদন করে তাদের হাতে প্রযুক্তি ও পেটেন্টের অধিকার তুলে দিলে আজ এই হাহাকারের পরিস্থিতি তৈরি হত না। এখন বিদেশ থেকে যেসব টিকা আমদানি করা হচেছ, বেসরকারি কোম্পানিগুলি তার যে চড়া মূল্য ধার্য করেছে তাতে দেশের বিরাট সংখ্যক গরিব মানুষের পক্ষে টিকা নেওয়া আদৌ সম্ভব হবে না। তা হলে দেশের এই বিরাট অংশের মানুষকে টিকা নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে করোনার মোকাবিলা কি আদৌ সম্ভব? বাস্তবে একজন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যখন উচিত ছিল গোটা মন্ত্রিসভাকে নিয়ে কোভিড মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়া তখন তিনি সেই দায়িত্বে চরম অবহেলা করে বাংলার ক্ষমতা দখলের জন্যই কার্যত গোটা মন্ত্রিসভাকে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছেন এবং নিজে ডেলি প্যাসেনজারি করেছেন। আসন্ন দ্বিতীয় ঢেউকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তার মোকাবিলার জরুরিকালীন প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজন ছিল সরকারি হাসপাতালে আরও বহু সংখ্যায় বেড বাড়ানো, অক্সিজেনযুক্ত বেড় বাড়ানো, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো। দরকার ছিল আরও অনেক কোভিড-হাসপাতাল তৈরি করা, সমস্ত বড় হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানো, জীবনদায়ী ওষুধের উৎপাদন বাড়ানো, করোনা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিটের উৎপাদন বাড়ানো, সরকারি হাসপাতালগুলিতে গ্রামীণ স্তর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যায় চিকিৎসকনার্স অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী, পরীক্ষাগারের সংখ্যা বাড়ানো, সেগুলির মান উন্নত করা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সামগ্রিকভাবে মজবুত করা। বলা বাহুল্য দেশের মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছেন এসব প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতি এবং অপদার্থতা আজ ভয়ঙ্কর ভাবে প্রকট। এই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল স্বাস্থ্যখাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে বরাদ্দ করা। তা করা হয়নি। এমনকি স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ২.৫ শতাংশ বরাদ্দ চেয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে সুপারিশ করেছিল তাও কার্যকর করা হয়নি। সম্প্রতি কেন্দ্রের অর্থনীতি বিষয়ক সচিব অজয় শেঠ এক আলোচনা সভায় স্বীকার করেছেন, ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে জনস্বাস্থ্য খাতে ভারতের ব্যয় সবচেয়ে কম। অথচ প্রধানমন্ত্রী এবং সব বিজেপি নেতারাই করোনা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত ভারতকে তারা যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করতে চলেছেন, বুক বাজিয়ে তা প্রতিদিন ঘোষণা করতেন। তা যদি সত্য হয় তবে সেই অর্থনীতি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কোন কাজে লাগল বিজেপি নেতারা তার কী উত্তর দেবেন? অর্থের অভাবই কি এই কাজগুলি সম্পন্ন করার পথে বাধা হয়েছে, নাকি জনগণের প্রতি বিজেপি সরকারের মনোভাবই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য দায়ী? না হলে এই সরকারই অনায়াসে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মূর্তি তৈরি করে কী করে? কী করেই বা কুড়ি হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাধের বাসভবনের জন্য, নতুন পার্লামেন্ট ভবন তৈরির জন্য, দিল্লির সৌন্দর্যায়নের জন্য ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা’র পিছনে খরচ করে ?
করোনার ওষুধ এবং বিভিন্ন চিকিৎসা যন্ত্রাংশ নিয়ে এই পরিস্থিতিতেও দেশ জুড়ে চলছে ব্যাপক কালোবাজারি। তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার সামগ্রিকভাবে পদক্ষেপ না করে তার মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারকে উপদেশ দিয়েছে। সারা দেশে গ্রামাঞ্চল জুড়ে করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। গ্রামবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধির দায়িত্ব পঞ্চায়েতের ওপর ছেড়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার হাত গুটিয়ে নিয়েছে। ফোনের কলার টিউনে প্রতি মুহূর্তে জনগণকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। অথচ দেশের বিরাট সংখ্যক দরিদ্র মানুষ যাতে মাস্ক ব্যবহার করতে পারে তার জন্য বিনামূল্যে তা সরবরাহ করার দায়িত্বটুকুও সরকার নেয়নি। একদল সরকারি বেতনভোগী বিশেষজ্ঞ সরকারি ব্যর্থতাকে আড়াল করতে দ্বিতীয় ঢেউয়ের দায় দেশের জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তাদের বক্তব্য, মাস্ক না পরা, কোভিড প্রোটোকল না মানা এর জন্য দায়ী। করোনা এড়ানোর জন্য অবশ্যই মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু মাস্ক পরে এই মহামারির জীবাণুকে আটকানো যাবে না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার কাজটি এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করার জন্য দেশের জনগণকে কি সহায়তা করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার? দিল্লি সহ সারা দেশে অজস্র বস্তিতে অত্যন্ত ঘিঞ্জি পরিবেশে যে কোটি কোটি মানুষ বাস করে তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
করোনার প্রথম আক্রমণের পরই হঠাৎ লকডাউন ঘোষণা করে কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের জীবনকে নরক করে তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লকডাউনের ফলে লক্ষ লক্ষ ছোট মাঝারি সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। কর্মহীন হয়ে যান কয়েক কোটি মানুষ। সেই সংস্থার বেশির ভাগেরই ঝাঁপ আর খোলেনি। এ বছরও শুধু এপ্রিল মাসেই, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)-র হিসেব অনুযায়ী, ভারতে ৭৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন, রাজ্যে রাজ্যে আবার লকডাউন শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি কোন মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছবে ভাবলেও বুক কেঁপে ওঠে। এই বিপুল সংখ্যক কর্মহীন মানুষগুলির প্রতি কী দায়িত্ব পালন করেছে। সরকার? গত বছর রোজগারহীন মানুষগুলির জন্য কয়েক মাসে রেশন দিয়েই সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের ভাব এমন যেন, অনেক সাহায্য দিয়েছি, আর নয়। যেন এইসব কর্মহীন মানুষগুলি দেশের নাগরিক নন, যেন বেঁচে থাকার তাদের কোনও অধিকার নেই, যেন তাদের বাঁচিয়ে রাখার সরকারের কোনও দায়িত্ব নেই! অথচ এখন প্রায় এক কোটি টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে জমে রয়েছে, পচে নষ্ট হচ্ছে। সরকার মদ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে লক্ষ লক্ষ টন চাল দিয়ে দিচ্ছে মদ তৈরির জন্য। জনগণ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। পেটে ক্ষুধা নিয়ে কী করে করোনা মোকাবিলা করবেন দেশের এই বিরাট সংখ্যক মানুষ রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তা ভাবার দায়িত্ব কি প্রধানমন্ত্রীর নয়? তিনি যে নিজেকে দেশসেবক হিসেবে ঘোষণা করতে সদাব্যস্ত, এই কি তার সেই দেশসেবার নজির? দেশ মানে কি শুধু আম্বানি-আদানিদের মুষ্টিমেয় একচেটিয়া পুঁজিপতির দল? দেশের ৯৯ ভাগ শ্রমিক কৃষকসাধারণ মানুষকে তারা দেশের অংশ বলে মনে করেন না ?
অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই পরিস্থিতির মোকাবিলায় চুড়ান্ত ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তার সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে দেশের মানুষ। এ অবস্থায় যখন মানুষকে বাঁচাতে করোনা মোকাবিলায় সমস্ত শক্তি নিয়োগ করা ছিল সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, তখন গোটা বিজেপি নেমে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি বাঁচাতে। এমনকি আমলাদেরও নামানো হয়েছে এ কাজে। তারা বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের সাথে একযোগে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ তুলে ধরার কাজে নেমে পড়েছেন। আরএসএসকেও নামানো হয়েছে এই কাজে। তাতেও কাজ হচ্ছে না। বিজেপির ভেতর থেকেই সরকারের অপদার্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভের উদগীরণ প্রকাশ্যে চলে আসছে প্রতিদিন। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের গায়েও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যর্থতার আঁচ লাগছে। হাসপাতালের বেড না পেয়ে, অক্সিজেন না পেয়ে, ভেন্টিলেশনের সুযোগ না পেয়ে, এমনকি বিনা চিকিৎসায় তাঁদের আত্মীয় স্বজনরাও মারা যাচ্ছেন। অজস্র মানুষ তাদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন। মোদি সরকারের আত্মনির্ভর ভারতের বাগাড়ম্বর যে কতখানি অন্তঃসারশূন্য তা প্রতিদিন প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।
বাস্তবিক কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ যে তীব্র সংকট তৈরি করেছে, তাতে হিন্দুত্বের আশ্রয় নেওয়ারও কোনও অবকাশ বিজেপির সামনে নেই। চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের অনেক নিষেধ সত্ত্বেও কুম্ভ মেলার অনুমতি দিয়ে সরকার যে গোটা উত্তর ভারত সহ সারা দেশে করোনার প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে তা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য থেকেই উঠে আসছে। কুম্ভ মেলার ঠাসাঠাসি ভিড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশ জুড়ে কেমন সুনামি তৈরি করেছে তথ্য গোপনের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তা প্রতিদিন বেরিয়ে আসছে। মধ্যপ্রদেশে কুম্ভ থেকে ফিরে আসা ৬১ জনের একটি দলের করোনা পরীক্ষার পরে দেখা গিয়েছে তাদের ৬০ জনই করোনা আক্রান্ত। ব্যাঙ্গালুরুর এক ৬৭ বছরের বৃদ্ধা কুম্ভ থেকে ফিরেছেন সুপার স্প্রেডার’ হয়ে। নিজের পরিবারের ১৮ জন সহ ৩৩ জনকে সংক্রমিত করেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, গত বছর তবলিগি জামাতের কয়েকশো প্রতিনিধি একটি মসজিদে সম্মেলন করায় পুলিশ তাদের ‘সুপার স্প্রেডার’ তকমা দিয়ে গ্রেপ্তার করে। তা হলে কুণ্ডে সরকার লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হতে দিয়ে করোনাকে দেশজুড়ে ছড়াতে সাহায্য করল কী করে? দেশের মানুষকে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দায় প্রধানমন্ত্রী এড়াবেন কী করে?
স্বাভাবিকভাবেই আজ দেশ জুড়ে দাবি উঠছে, পিএম কেয়ার্স ফান্ডে যে হাজার হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে তার হিসেব প্রকাশ্যে আনা হোক এবং অবিলম্বে তার সমস্ত টাকা কোভিড মোকাবিলায় খরচ করা হোক। প্রতিটি নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হোক। সরকার সেনা নামিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করুক এবং বৃহৎ পুঁজিপতিদের পুঁজির পঞ্চাশ শতাংশ কোভিড মোকাবিলায় খরচ করতে বাধ্য করুক। দরিদ্র এবং নিম্নবিত্ত মানুষকে সারা বছর রেশনে বিনামূল্যে যথেষ্ট পরিমাণে রেশন এবং নগদে সাহায্য দেওয়া হোক। দেশের মানুষের এই দাবিতে সরকার কান না দিলে দেশের মানুষকেই বাধ্য করতে হবে সরকারকে তা শুনতে।