১ জুন নদীয়ার দেবগ্রামে জেলা পরিষদের মাঠে অনুষ্ঠিত হল অল ইন্ডিয়া কিসান খেতমজদুর সংগঠন-এর সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ। সমাবেশের আগে তিন হাজারের বেশি কৃষক-খেতমজুরের সুসজ্জিত মিছিল দেবগ্রাম শহর পরিক্রমা করে। মিছিলে কৃষক ঘরের মহিলা ও যুবকদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। স্লোগান ওঠে–দিল্লির কৃষক আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন, এমএসপি-কে আাইনসঙ্গত করে চাষির কাছ থেকে সরকারকে ফসল কিনতে হবে। মিছিলের সামনে ছিলেন সর্বভারতীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব।
মিছিল প্রকাশ্য সমাবেশস্থল শহিদ কমরেড আব্দুল ওদুদ নগরে (জেলা পরিষদের মাঠ) প্রবেশ করলে জমায়েতের আকার আরও বাড়তে থাকে। সমবেত জনতা গভীর আগ্রহের সাথে বক্তব্য শোনেন।
প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি কমরেড সত্যবান। তিনি দিল্লির কৃষক আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশব্যাপী দুর্বার কৃষক-খেতমজদুর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রধান অতিথি ও অন্যতম বক্তা ছিলেন এস ইউ সি আই (সি) দলের পলিটবুরো সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী কর্পোরেট স্বার্থবাহী নীতির ফলে ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি ও বেসরকারিকরণে জনজীবন বিধ্বস্ত, সাম্প্রদায়িকতার বাতাবরণ সৃষ্টি করে জনগণের ঐক্য বিনষ্ট করতে বিজেপি সরকার চালাচ্ছে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার আজ চরম দুর্নীতিগ্রস্ত, কেন্দ্রীয় সরকারের মতো রাজ্য সরকারও কৃষক-শ্রমিক বিরোধী নীতি নিয়ে চলছে।
এর বিরুদ্ধে প্রয়োজন শ্রমিক-কৃষকের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, দিল্লির কৃষক আন্দোলন দেশের জনগণের সামনে এক নতুন দিশা তুলে ধরেছে। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্য সম্পাদক কমরেড পঞ্চানন প্রধান, সভায় উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় কমিটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কমরেড রঘুনাথ দাস, সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কমরেড সেখ খোদাবক্স। সভা শেষে ‘কর্পোরেট হটাও দেশ বাঁচাও’ এই শিরোনামে দিল্লির কৃষক আন্দোলকে ভিত্তি করে একটা মাইম শো অনুষ্ঠিত হয়।
২-৩ জুন প্রতিনিধি অধিবেশন হয়। অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সহ সভাপতি কমরেড মদন সরকার। সম্মেলন থেকে কমরেড পঞ্চানন প্রধানকে সভাপতি, কমরেড মদন সরকার সহ পাঁচ জনকে সহসভাপতি ও কমরেড গোপাল বিশ্বাসকে সম্পাদক করে ৪৮ জনের রাজ্য কমিটি ও ৩৮ জনের রাজ্য কাউন্সিল গঠিত হয়। ১৩ জুন রাজ্যের ব্লকে ব্লকে বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষিত হয়।