ওই দিন দুর্ঘটনার পরেই ওই এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে মিলে এসইউসিআই(সি) দলের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা দ্রুত উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সন্ধ্যা নেমে আসায় আলো-আঁধারের মধ্যেই মারাত্মক আহত প্রায় তিনশোর বেশি মানুষকে উদ্ধারে হাত লাগান। দুর্ঘটনার দু’ঘন্টা পরে রাজ্য এবং রেল পুলিশ এসে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। পরবর্তী উদ্ধার কাজে সাধারণ মানুষকে আর থাকতে দেওয়া হয়নি।
এলাকার মানুষের সাথে মিলে দলের কর্মীরা আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা করতে প্রশাসনকে সাহায্য করেন। ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেখানে আহতদেরভর্তি করা হয়েছে, সেখানে ভর্তি আহতদের জন্য রক্তদান করতে ছাত্র-যুবদের কাছে আহ্বান জানায় এআইডিওয়াইও এবং এআইডিএসও। দেখা যায় মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে বহু মানুষ হাসপাতালে রক্ত দিতে উপস্থিত হন। যে তিনটি হাসপাতালে আহত যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে দলের স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত থেকে রক্তদান সহ বিভিন্ন ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এআইডিওয়াইও এবং এআইডিএসওর় আয়োজনে থেকে ৪০ জন রক্তদাতা রক্ত দেন।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে আন্তরিক সমবেদনা জানিয়ে ১৩ জানুয়ারি দলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কমরেড সুজিত ঘোষ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, স্থানীয় মানুষ যেভাবে অতি দ্রুত উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তার জন্য দলের পক্ষ থেকে তাঁদের অভিনন্দন জানাই। তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনায় হতাহতদের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
দলের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার পূর্ণ দায়িত্ব এবং তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা অতি দ্রুত করতে হবে। রেলের যে নীতির জন্য এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা যে কোনও সময় ঘটার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে, তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে নাগরিকদের সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়। কমরেড সুজিত ঘোষ দাবি করেন, আহতদের চিকিৎসার যাতে কোনও রকম ত্রুটি না ঘটে, কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয় সরকারকেই তা সুনিশ্চিত করতে হবে।