কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ৩ ডিসেম্বর দিল্লির যন্তর মন্তরে অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির ডাকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ধরনা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা নন্দিতা নারাইন, কেরালা থেকে অধ্যাপক জর্জ যোসেফ, মধ্যপ্রদেশের অধ্যাপক সুরেন্দ্র রঘুবংশী, আসামের অধ্যাপক ঘনশ্যাম নাথ, প্রাক্তন উপাচার্য এল জহর নেশান, প্রাক্তন উপাচার্য চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী, সিএসআইআর-এর বিজ্ঞানী অমিতাভ বসু, ইনসা বিজ্ঞানী ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর সহ অন্যান্যরা। জেএনইউ-এর ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আদিত্য মুখার্জীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাজাহার খান।
আদিত্য মুখার্জী বলেন, গত ৪০ বছর ধরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জেএনইউ-এর মতো প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কেন্দ্রের বর্তমান শাসকরা কেবল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নয়, দেশের সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিতে চাইছে। তিনি বলেন, সিইউইটি এবং এনইইটি-র মতো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ব্যবস্থা দুর্নীতির জন্ম দিচ্ছে।
নন্দিতা নারাইন বলেন, ভারতীয় জ্ঞানধারার মাধ্যমে ছাত্রদের কোমল মনেই সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বলেন, এই শিক্ষানীতি শিক্ষার বেসরকারিকরণ-ব্যবসায়ীকরণের নীলনক্সা। এই শিক্ষানীতি চালু হলে আর্থিকভাবে পশ্চাদপদ অংশ শিক্ষার আঙিনা থেকে দূরে সরে যাবে। অধ্যাপক চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষার কেন্দ্রীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকার হরণ করছে। সুরেন্দ্র রঘুবংশী বলেন, মধ্যপ্রদেশ সরকার ৯৪০০০ স্কুল বন্ধ করে দিয়ে পিপিপি মডেলে স্কুল চালু করছে। অমিতাভ বসু বলেন, এই শিক্ষানীতি বিজ্ঞানবিরোধী ধ্যানধারণা বিকাশের নথি ছাড়া আর কিছু নয়। কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাজাশেখর সারা দেশ জুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি জাতীয় শিক্ষানীতির বিকল্প জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া প্রস্তুত করছে, যাকে একটি পিপলস পার্লামেন্টে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন এই ধরনা থেকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য দেখা করতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রী সেই চিঠির কোনও উত্তর দেননি। ফলে স্মারকলিপিটি ই-মেল করে পাঠানো হয়।