![](https://ganadabi.com/wp-content/uploads/2020/09/moipithsanhotidibas-at-Baruipur-1024x576.jpg)
১৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য জুড়ে প্রায় প্রতিটি জেলায় অসংখ্য জায়গায় ‘মৈপীঠ সংহতি দিবস’ পালিত হয়। মৈপীঠে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের লাগাতার হামলা, খুন, ঘর পোড়ানো, লুঠ, ভাঙচুর, মেয়েদের উপর লাগাতার অত্যাচার ও সন্ত্রাসের শিকার হওয়া কয়েক শত মহিলা বারুইপুরে এসপি অফিসের সামনে জমায়েত হয়ে এই সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে বেলা ১২টা থেকে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেন।
অবস্থান থেকে প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ তরুণ মণ্ডলের নেতৃত্বে চার সদস্যের এক প্রতিনিধি দল বারুইপুর এসপি-র কাছে দাবিপত্র তুলে দিয়ে বলেন, অবিলম্বে ঘর জ্বালানো ও লুঠপাঠের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বলেন, জেল থেকে ছাড়ার পর দুষ্কৃতীরা পুনরায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শাসানি, খুন ও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ এভাবে নিষ্ক্রিয় থাকলে আগামী দিনে আরও বড়সড় অনভিপ্রেত ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সভা পরিচালনা করেন শহিদ কমরেড সুধাংশু জানার মেয়ে ও দলের কর্মী কমরেড সুতপা জানা। বক্তব্য রাখেন এআইএমএসএস-এর রাজ্য সম্পাদক কল্পনা দত্ত, মৈপীঠ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও প্রাক্তন প্রধান কমরেড গৌরী মণ্ডল, জেলা কমিটির সদস্য কমরেড মাধবী পণ্ডিত, শহিদ কমরেড সুধাংশু জানার স্ত্রী গীতা জানা। মুখ্য বক্তা ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড তরুণ মণ্ডল। সকল বক্তা আগামী দিনে মৈপীঠের জনগণের উপর নেমে আসা শাসক দলের লাগাতার হামলার মোকাবিলা করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ওই দিনে জয়নগর ২ ব্লকে বকুলতলা থানায় দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রবল বিক্ষোভ দেখান।
বকুলতলা থানা কীভাবে তৃণমূলের দুর্বৃত্ত ও সমাজবিরোধীদের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে তার উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, নানা অছিলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের জামিন অযোগ্য ধারায় মিথ্যা দেওয়া হচ্ছে। ২৬ আগস্ট দক্ষিণ ২৪পরগণা জেলাজুড়ে সমস্ত বেহাল রাস্তা দ্রুত সংস্কারের দাবিতে ছিল ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি। শতাধিক স্থানে ওই দিন অবরোধ নির্বিঘ্নে হলেও জয়নগর থেকে জামতলা রুটের নতুনহাট ও মোল্লারচকের মধ্যবর্তী জায়গায় অবরোধে বিনা প্ররোচনায় বকুলতলা থানার পুলিশের সামনে তৃণমূলের দুর্বৃত্তরা সংগঠিত হামলা চালায়। মহিলাদের উপর আক্রমণ করে, পোশাক ছিঁড়ে দেয়, অনেকে গুরুতর আহত হন। এমনকি মোবাইল, টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ আক্রান্তদের রক্ষার পরিবর্তে তাদের উপর লাঠি চালায় এবং কয়েকজনকে জবরদস্তি থানায় তুলে নিয়ে যায়। অথচ হামলাকারীদের একজনকেও আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি।
বকুলতলা থানার সভায় মূল বক্তা ছিলেন জয়নগর লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ তরুণ মণ্ডল। তিনি তৃণমূল সরকারের নেতা-কর্মীদের আপাদমস্তক দুর্নীতির পাঁকে ডুবে থাকার নানা ঘটনা, পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট দলদাসের মতো আচরণের তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান। আইনের রক্ষক পুলিশ-প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ব্যবহার, বেহাল রাস্তা স্থায়ী সংস্কারের দাবিতে এবং সরকারের জনস্বার্থবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে জনসাধারণকে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। জয়নগরের প্রাক্তন বিধায়ক তরুণকান্তি নস্কর পুলিশকে শাসক দলের দাসত্ব করা থেকে মুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার দাবি তোলেন। প্রাক্তন বিধায়ক জয়কৃষ্ণ হালদারও বক্তব্য রাখেন। তরুণ নস্করের নেতৃত্বে ৪ জনের প্রতিনিধিদল পুলিশের অফিসারদের সঙ্গে দাবিপত্র নিয়ে দেখা করেন।
![](https://ganadabi.com/wp-content/uploads/2020/09/From-Dukhashyam-da.jpg)
১৫ সেপ্টেম্বর রাজ্যজুড়ে মৈপীঠ সংহতি দিবস পালনের কর্মসূচি হিসাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার নানা প্রান্তে বিক্ষোভ মিছিল, পথসভা, হাটসভা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বত্র সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।