দ্রব্যমূল্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েই চলেছে৷ চালের দাম ক্রমেই বাড়ছে এবং তা অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে৷ সবজির দাম এখন গড়ে তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে৷ মাছের বাজারেও পড়েছে মূল্যবৃদ্ধির কালো ছায়া৷ ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার ও মর্যাদার বিষয়ে কথা বলেন৷ বাস্তবে তারাই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন৷
সরকারের কাছ থেকে মানুষ যে দু’টি বিষয় প্রত্যাশা করে, তার একটি আইনশৃঙ্গলার নিয়ন্ত্রণ, অন্যটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ৷ এ ব্যাপারে সরকার তাদের সাধ্যে থাকা সবকিছু করবে, জনগণ তা দেখতে চায়৷ কিন্তু দেশ পরিচালনায় সরকারের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে দেশে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে৷ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন চালাতে গিয়ে বর্তমানে দেশের সৎ ও সচ্ছল মানুষেরও জীবনেও ‘ত্রাহি’ রব৷ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তার স্বল্প আয়ের কারণে যেমন সীমিত থাকে, ঠিক তেমনই জিনিসপত্রের বাজার দর দ্বারাও তা নিয়ন্ত্রিত হয়৷
বিত্তবানদের জন্য দ্রব্যমূল্য প্রত্যক্ষভাবে কখনই তেমন একটা সমস্যা নয়৷ কিন্তু সাধারণ মানুষ যে আয় করে তা দিয়ে তাকে হিসাব করে জিনিসপত্র কিনতে হয়৷ মানুষের আয় যতটা বাড়ে, সেই তুলনায় যদি জিনিসপত্রের দাম অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বেশি বাড়ে, তাহলেই তার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়৷ এই ক্রয়ক্ষমতাই হল তার ‘প্রকৃত আয়’৷ ‘প্রকৃত আয়’ বৃদ্ধি না পেয়ে যদি একই জায়গায় স্থির হয়ে থাকে তা হলেই শুরু হয় আশাভঙ্গের যন্ত্রণা৷
জনগণের প্রতি বর্তমান সরকারের আচরণ কতটা জনবান্ধব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে৷ কারণ সরকারের কাজ জনগণকে সুখ–শান্তিতে রাখা৷ জনগণের সেবক হয়ে কাজ করা৷ দেখা যাচ্ছে, সরকার করছে তার বিপরীত কাজ৷ এ পরিস্থিতিতে জনগণ কেবল হাহাকার করে জিজ্ঞেস করতে পারে, আমরা কোথায় যাব? কার কাছে যাব? সরকার কি জনগণের সুখ–দুঃখ বোঝে না? যদি নাই বোঝে, তবে তারা কার জন্য সরকার পরিচালনা করছে?
আব্দুল নাসের সিদ্দিকী
বছলা, করিমগঞ্জ, আসাম