গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে রাজ্যের অন্যান্য স্থানের মতো জয়নগরেও সকাল ৯টা থেকেই বুথ দখল শুরু হয়ে যায়। টিএমসি নেতা ও বিধায়করা কুলতলি, মন্দিরবাজার, মগরাহাট, জয়নগর, রায়দিঘি, ক্যানিং থেকে কয়েকশো সশস্ত্র গুণ্ডা নিয়ে এসে ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ১০, ১১, ১৩, ১৪ ওয়ার্ড দখল করে নেয়। বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও সন্ত্রাস চালায়।
এসইউসিআই(সি)-র সাত বারের কাউন্সিলর প্রবীণ শিক্ষক কমরেড সুদর্শন হালদারও তাদের লাঠির আক্রমণ থেকে রেহাই পাননি। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়নগরের প্রাক্তন বিধায়ক কমরেড তরুণকান্তি নস্কর বলেন, এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে জয়নগরের শান্তিপ্রিয় মানুষ এ জিনিস প্রত্যক্ষ করেনি। এ বার দেখল জয়নগরে একের পর এক বুথ দখল, বিরোধী প্রার্থী, এজেন্টেদের মেরে বের করে দেওয়া, মোবাইল কেড়ে নেওয়া, সাংবাদিকদের ছবি তুলতে না দেওয়া, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া অবাধে চলেছে। দুষ্কৃতীরা ব্যাপক বোমাবাজি করে ও প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি চালায়। জয়নগর থানা থেকে ৫০ ফুট দূরত্বে ২ নম্বর ওয়ার্ডের বুথ। সেই বুথ হার্মাদরা দখল করে নেয়। অথচ ভোটের আগে দু-তিন দিন ধরে দলের পক্ষ থেকে ডিএম, এসডিও, এসপি, এএসপি, রিটার্নিং অফিসারদের এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, এই আশঙ্কার কথা বারে বারে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করেছে, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। এস ইউ সি আই (সি) উপযুক্ত নিরাপত্তা দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।
ভোটের আগের দিন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঢুকে ভোটারদের হুমকি দিতে থাকলে প্রতিবাদে রাতেই রাস্তা অবরোধ করেন নাগরিকরা। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় জয়নগর-মজিলপুরের নাগরিকরা পদযাত্রা করে ‘নীরব ধিক্কার’ জানান। জয়নগর থানার মোড় থেকে শুরু হয়ে এই প্রতিবাদী মিছিল শহরের রাস্তা পরিক্রমা করে এবং তৃণমূলের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হন। এলাকার নারী-পুরুষ দলমত নির্বিশেষে এই প্রতিবাদকে স্বাগত জানান।