সারা রাজ্যের মতো কলকাতাতেও ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ইতিমধ্যে গত মরশুমের তুলনায় এ মরশুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রায় সাতগুণবেড়েছে। এর প্রতিবাদে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ তুলে ১৯ সেপ্টেম্বর এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট )-এর কলকাতা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কলকাতা কর্পোরেশনে ব্যাপক বিক্ষোভদেখানো হয়।
জেলা সম্পাদক সুব্রত গৌড়ী ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নভেন্দু পালের নেতৃত্বে দুই শতাধিক মানুষের এক মিছিল ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে কর্পোরেশনের সদর দপ্তরের সামনে পৌঁছলে পুলিশ তা আটকাতে চেষ্টা করে। ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় মিছিল। কর্পোরেশনের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানো হয়।
বিক্ষোভসভায় দলের কলকাতা জেলা সম্পাদক সুব্রত গৌড়ী বলেন, সরকারি হিসাবেই শুধুমাত্র গত ৩ সপ্তাহে রাজ্যে আক্রান্ত ৫ হাজারেরও বেশি এবং কলকাতায় গত জানুয়ারি থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫০ জনেরবেশি। ইতিমধ্যে কলকাতার ২৪টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুপ্রবণ ও ৩৫টি ওয়ার্ডকে ম্যালেরিয়াপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে মেয়রের নিজের ওয়ার্ডেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তালিকার উপরের দিকে। মেয়রের ওয়ার্ডের নাগরিকরাযেখানে সুরক্ষিত নন সেখানে সমগ্র কলকাতার অবস্থা কী তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা, কলকাতার ডেপুটি মেয়র বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ে নাকি আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। মেয়র মানুষের সচেতনতার উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলেছেন। কলকাতা পুরসভা বিবৃতি দিয়ে দায় না সেরে সঠিক তৎপরতা দেখালে শহর কলকাতায় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার এই রকম প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারত না।
দলের রাজ্য কমিটির সদস্য ডাক্তার অংশুমান মিত্রের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল কর্পোরেশেনের মুখ্য স্বাস্থ্য অফিসারের সঙ্গে দেখা করেন এবং সমস্ত বরোয় রক্তপরীক্ষা ও চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি, পাড়ায় পাড়ায় ফিভার ক্লিনিক খোলা, মশা মারার জন্য সমস্ত পাড়ায় ভেক্টর কন্টে্রালের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, পুরসভার উদ্যোগে রক্ত ও প্লেটলেটের ঘাটতি মেটানোর জন্য রক্তদান শিবির করা ইত্যাদি দাবি জানান। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্লজ্জের মতো বলেন, ডেঙ্গু হবেই, তাতে মৃত্যুও হবে।আমাদের কিছু করার নেই। প্রতিনিধিদল এই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করলে তিনি বলেন, রক্ত পরীক্ষা ও ভেক্টর কন্ট্রোলের বিষয়টা তাঁরা দেখবেন।