ডাঃ কাফিল খানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি, বিক্ষোভে চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীরা
১২ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটিতে সিএএ বিরোধী বত্তৃতাকে অজুহাত করে ডাঃ কাফিল খানের বিরুদ্ধে যোগী সরকার দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনে এবং মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করে। দেশবাসী তাঁর মুক্তির দাবিতে সরব হয় এবং আলিগড় কোর্ট তাঁর জামিনের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার বদলে নতুন করে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (এনএসএ)-এ মামলা দেওয়া হয়। যার ফলে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বিনা বিচারে যোগী সরকার তাকে কারাবন্দি করে রাখতে পারবে। তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করেছেন মথুরা জেলের অভ্যন্তরে ডাঃ খানের উপর অমানবিক অত্যাচার চলছে, সেখানে তাকে টানা ৫ দিন অনাহারে রেখে দেওয়া হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর মামাকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। মথুরা কারাগারের অভ্যন্তরে যে ভাবে তাকে দাগী অপরাধী ভরা একটি কক্ষে রেখে অত্যাচার করা হচ্ছে, বাস্তবিকই এখন ডাঃ খানের প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুধু সিএএ বিরোধী বত্তৃতার জন নয়, ডাঃ কাফিল খান উত্তরপ্রদেশের শিশুমৃত্যুর নেপথ্যে যোগী সরকারের অপদার্থতা ফাঁস করে দিয়েছেন। এই কারণে তাকে উপর্যুপরি হেনস্থা করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে গোরক্ষপুর বিআরডি মেডিকেল কলেজে ২০১৭-তে অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য শিশু মারা যায়। উত্তরপ্রদেশ সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চিকিৎসায় অবহেলার মিথ্যা অভিযোগে ডাঃ কাফিল খানকে গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে ৯ মাস কারাবন্দি করে। সুপ্রিম কোর্ট ও কলেজের বিভাগীয় তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে যোগী সরকার কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।
ডাঃ খানের অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তির দাবিতে ৬ মার্চ মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের পক্ষ থেকে এনআরএস মেডিকেল কলেজের সামনে একটি বিক্ষোভ সভা এবং মিছিল আয়োজিত হয়। কয়েকশো চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকেল কর্মী, মেডিকেল ও নার্সিং ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন পেশার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এই মিছিলে সামিল হন।
সংগঠনের কলকাতা জেলা সম্পাদক ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র বলেন, যোগী সরকারের ন্যাক্কারজনক প্রতিহিংসার প্রতিবাদে আমরা প্রথম থেকেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি। আজ দেশের এমন পরিস্থিতি যে দোষীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বললে বিচারক শাস্তি পান, কাফিলের মতো মানুষ বিনা বিচারে কারারুদ্ধ থাকেন। আমরা সকল গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে আবেদন করছি, একজন সত্যিকারের মানবদরদি চিকিৎসক ডাঃ কাফিল খানের জীবনরক্ষার জন্য এগিয়ে আসুন।