ঘূর্ণিঝড় ফণী ও গরমের অজুহাতে আচমকা সরকারি স্কুলগুলিতে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ভাবে দু’মাস গরমের ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর৷ সরকারের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন এই সিদ্ধান্তে সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে তা ভেবে অভিভাবক ও শিক্ষকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন৷ বিপাকে পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা, বিশেষত দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা৷
এমনিতে স্কুলে পাশ–ফেল চালু করা নিয়ে টালবাহানা করে সরকার পড়াশোনার মান একেবারে শোচনীয় করে তুলেছে৷ তার উপর এই সিদ্ধান্তে পড়াশোনা প্রায় শিকেয় তোলার ব্যবস্থা হল৷ বাস্তবে এ কোনও তুঘলকি সিদ্ধান্ত নয়, সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন করে দিয়ে বেসরকারি শিক্ষা–ব্যবসার রমরমা ঘটানোর এ এক পরিকল্পিত কৌশল৷ তা না হলে, যেখানে সরকার নানা দিকে কোটি কোটি টাকা অপচয় করে, সেখানে সব ঋতুতে স্কুল চালানোর পরিকাঠামো নেই কেন? স্কুলগুলিতে কেন নেই প্রয়োজনীয় পানীয় জলের ব্যবস্থা ও শৌচালয়? বহু স্কুলে গরমে পাখা চলে না কেন? রাজ্যের বহু জায়গায় সরকার নতুন স্কুল না গড়ে পুরনোগুলিকেও কম ছাত্রের অজুহাতে বন্ধ করে দিচ্ছে৷ এইভাবে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার সর্বনাশ করে ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এই নীতি নিয়ে চলছে সরকার৷ এরা কি আদৌ গরিব মধ্যবিত্ত সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখতে দিতে চায়?
দু’মাস ছুটির এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে ছাত্র সংগঠন অল ইন্ডিয়া ডিএসও৷ ৪ মে এক বিবৃতিতে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড সৌরভ ঘোষ সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের এই পরিকল্পিত আক্রমণের বিরুদ্ধে রাজ্যের সকল স্তরের ছাত্র–ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ৬ মে কলকাতায় বিকাশ ভবনের সামনে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়৷