আজীবন শিক্ষাব্রতী, নিঃস্বার্থ সমাজসেবী দুই মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহল এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব প্রয়াত পাঁচকড়ি দে–র পূর্ণাবয়ব মূর্তি প্রতিষ্ঠা হল তাঁর ১১৪তম জন্মদিন ১৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম স্টেশন ও হেড পোস্ট অফিস সংলগ্ণ প্রাঙ্গণে৷ অতি বিরল ও দৃষ্টান্তমূলক তাঁর মহৎ জীবনকে স্মরণ এবং এই অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের মানুষের যে অপরিশোধ্য ঋণ তা স্বীকার করার লক্ষ্যেই এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা বলেই শিক্ষাব্রতী পাঁচকড়ি দে স্মৃতি রক্ষা কমিটির তরফে সম্পাদক সুকুমার গিরি জানিয়েছেন৷
পাঁচকড়ি দে তাঁর সমগ্র জীবন শিক্ষা বিস্তারের কাজেই উৎসর্গ করেছিলেন৷ নিজে উদ্যোগ নিয়ে, এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক স্কুল স্থাপন করেছেন৷ শিক্ষকতার জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরেও তাঁর নিজের বাসভবন সংলগ্ন জমি এবং সারা জীবনের সঞ্চয়, অবসরকালীন ভাতা এক কথায় তার যথাসর্বস্ব দিয়ে মূক ও বধিরদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে গেছেন৷ পিছিয়ে পড়া এলাকার মানুষের সামাজিক সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেও তিনি ছিলেন সদা সক্রিয়৷ মানুষের সত্যিকারের উপকার করার মনোভাব থেকেই তিনি ১৯৬৭ সালে ঝাড়গ্রাম বিধানসভার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্ত ও দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে তিনি বিন্দুমাত্র দ্বিধা করতেন না৷ আশির দশকে রাজ্য সরকারের ইংরেজি ও পাশফেল তুলে দেওয়ার নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি নেতৃত্বকারী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন৷
মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন কমিটির সভাপতি প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গুণধর মাহাত৷ বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ সুহৃদ ভৌমিক, অধ্যক্ষ আশিস গুপ্ত, দুর্গেশ মল্লদেব, কমল সাঁই প্রমুখ৷ এই উপলক্ষে একটি শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে৷ মূর্তিটি নির্মাণ করেন মেচেদায় অবস্থিত তাপস দত্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বিশিষ্ট ভাস্কর অসিত সাঁই৷ তিনিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷