প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ড একচেটিয়া পুঁজিমালিকদের নির্মম ও লাগাতার লুঠে দেশের অন্যতম দরিদ্র রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এ রাজ্যের ছাত্র ও গণআন্দোলনের অন্যতম দাবি সকলের জন্য অবৈতনিক গণতান্ত্রিক বিজ্ঞানভিত্তিক ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা। আন্দোলনের চাপে ঝাড়খণ্ডের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার ‘ছাত্রবৃত্তি’ প্রকল্প ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু ই-কল্যাণ পোর্টাল চালু না থাকায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিএড এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রছাত্রীরা ছাত্রবৃত্তির আবেদন করতে পারেনি। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ ছাত্রের শিক্ষা মাঝপথে থমকে গিয়েছে। ছাত্রবৃত্তি পুনরায় চালু করার দাবিতে রাজ্যের বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী লাগাতার আন্দোলনের পথে নামে এবং ছাত্রবৃত্তি অধিকার মঞ্চ গড়ে তোলে। আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই এ আই ডি এস ও নেতৃত্বকারী ভূমিকা নেয়। গত পাঁচ মাস ধরে ডেপুটেশন, গণ-ইমেল, কনভেনশন, অনলাইন প্রচার সহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু সরকার কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। ‘ছাত্রবৃত্তি অধিকার মঞ্চ’ এবং এআইডিএসও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কল্যাণ মন্ত্রী এবং কল্যাণ সচিব সহ ৩০ জন বিধায়ককে দাবিপত্র দেয়। ১৫ জুলাই সহস্রাধিক ছাত্র রাঁচিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে সমবেত হয়। তারপরেও সরকারের কোনও হেলদোল না দেখে এই ভয়াবহ করোনা মহামারী পরিস্থিতির মধ্যেই নিজেদের শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেবও ২৬ জুলাই শতশত ছাত্র রাজভবনের সামনে সমবেত হয় এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করে। এই বীরত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রাজ্যের শিক্ষাপ্রেমী মানুষ বিপুল সমর্থন জানান। বিশিষ্ট বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ডঃ গহর রাজা, জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ সিনহা আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। লাগাতার ও ঐক্যবদ্ধ এই আন্দোলনের চাপে ২৯ জুলাই সরকার দাবি মানতে বাধ্য হয়।
এআইডিএসও ঝাড়খণ্ড রাজ্য সম্পাদক কমরেড সমর মাহাতো আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল ছাত্রছাত্রী বন্ধুদের সংগ্রামী অভিনন্দন জানান এবং ছাত্রবৃত্তি অধিকার মঞ্চের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে থাকবার অঙ্গীকার করেন। ছাত্রবৃত্তি অধিকার মঞ্চের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও এআইডিএসও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবন যাদব আন্দোলনের এই সাফল্যের কৃতিত্ব রাজ্যের সংগ্রামী ছাত্রসমাজকে উৎসর্গ করেন।