বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর যখন সর্বোচ্চ আদালত সেই জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিল এবং সংখ্যালঘু সমাজ তা মেনে নিতে বাধ্য হল, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, এই নিয়ে বিজেপি-আরএসএসের বহু দিনের দাপাদাপি এর মধ্যে দিয়ে শেষ হল। এখন দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। কিন্তু না, তাঁরা ভুল ভেবেছিলেন। যদি রামের প্রতি নিখাদ ভক্তিই তাঁদের এই দাবির পিছনে কাজ করত তবে হয়ত তারা ওইখানেই ক্ষান্ত দিত। কিন্তু রামের প্রতি ভক্তি বা ধর্মের প্রতি আবেগ তো এই বিতর্কে তাদের প্ররোচিত করেনি, তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল এই দাবির মধ্যে দিয়ে হিন্দু আবেগ উসকে তুলে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক সংহত করা এবং ক্ষমতার গদিতে গিয়ে বসা। সেদিন সেই লক্ষ্য পূরণ হলেও ক্ষমতায় বসে তা যে রাজ কায়েম করেছে তাতে মানুষের জীবনের সমস্যাগুলিই আরও তীব্র হয়েছে মাত্র। ফলে তাদের শাসনে মানুষের ক্ষোভ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে হলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তাদের বিশেষ প্রয়োজন। তাই অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের পর বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ। তারপর মথুরার শাহি ইদগা মসজিদ। বাহানার যেন শেষ নেই। এ সবই নাকি এক কালে মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছিল। তাই এখন সেই সব মসজিদ ভেঙে ফেলে মন্দির তৈরি করতে হবে।
বিজেপি-আরএসএসের এই সব দাবির পিছনে বাবরি মসজিদ মামলার রায়ই যে কাজ করছে এটা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এই রায়ে উৎসাহিত হয়েই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা একের পর এক দাবি তুলে চলেছে। আর এর পিছনে থেকে শাসক বিজেপিই যে এই সব দাবিকে মদত দিয়ে চলেছে তা-ও আজ আর কারও অজানা নয়। আজ এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নীতির ফলেই ওষুধ সহ প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আজ আকাশ ছুঁয়েছে। বেকারত্ব গত অর্ধশতকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। নোট বাতিল, জিএসটি চালু এবং অপরিকল্পিত লকডাউন সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। করোনা মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা মৃত্যুর বিপুল সংখ্যা গোপন করেও ঢাকা যায়নি। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। নানা কৌশলে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা জিতলেও এই ক্ষোভ বুঝতে বিজেপি নেতাদের অসুবিধা হয়নি।
এই অবস্থায়২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি থেকে বাঁচতে শাসক বিজেপির হাতে একমাত্র পুঁজি মানুষের ধর্মীয় আবেগকে খুঁচিয়ে তোলা। সেই কাজেই আটঘাট বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি-আরএসএস। একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে দিয়ে আদালতে দাবি তোলানো হয়েছে, বারণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদটি মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে তৈরি হয়েছিল।
সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের পক্ষ থেকে এমন দাবি তুলে সামাজিক সুস্থিতিকে গুলিয়ে দেওয়ার, সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত আক্রমণ নামিয়ে এনে তাদের কোণঠাসা করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের দাবিতে ১৯৯১ সালে উপাসনাস্থল রক্ষা আইন পাশ হয়েছিল। সেই আইন অনুযায়ী, ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্টে মন্দির মসজিদ গির্জার মতো উপাসনাস্থলের ধর্মীয় চরিত্র যেখানে যেমন ছিল তাই থাকবে। তার কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। আইনে বলা আছে, মন্দির-মসজিদের চরিত্র নিয়ে কোনও পুরনো মামলা টিকবে না। নতুন কোনও মামলাও করা যাবে না। একমাত্র বাবরি মসজিদ-রামজন্মভূমি বিতর্ক ছাড়া সবক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে জ্ঞানবাপী মসজিদ সম্পর্কে যে দাবি বিজেপি-আরএসএস তুলেছে তা কি বেআইনি নয়? বারাণসী আদালতই বা সেই বেআইনি অভিযোগ গ্রহণ করে কী করে? সুপ্রিম কোর্টই বা জানা-মাত্র এমন অভিযোগকে নস্যাৎ করল না কেন? কেন এমন একটি সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যমূলক মামলাকে জেলা আদালতে পাঠানো হল? ২০১৯-এ অযোধ্যার মামলার রায়ে শীর্ষ আদালতই বলেছিল, ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত। সব ধর্মের সমানাধিকারের প্রতি ভারতের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। এই আইন তৈরির উদ্দেশ্যও ছিল তাই। তা হলে সেই দায়িত্বের কথা আজ সরকার কিংবা কোর্ট ভুলে যায় কী করে? তবে কি আইনের শাসন একটি কথার কথা মাত্র? না হলে, কী করে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ধর্মস্থান সংক্রান্ত আইন অনুসারে কোনও ধর্মস্থানের চরিত্র নির্ণয়ে কোনও রকম বাধা নেই। চরিত্র নির্ণয়ের অনুমতি দেওয়া কি পরিস্থিতিকে আর জটিল করে তোলার সুযোগ করে দেওয়া নয়? উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষে রায় দিয়েছিল, বর্তমান বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি চন্দ্রচূড় তার সদস্য ছিলেন।
বাস্তবে একের পর এক মসজিদের উপর হিন্দুত্ববাদীদের দাবি তোলার মধ্য দিয়ে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের উপর যে আক্রমণ নামিয়ে আনছে বিজেপি-আরএসএস, তাতে একটা আইনি আড়াল দেওয়ার জন্যই এ ভাবে আইন ব্যবস্থাকেও এর সঙ্গে জড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। যে ভাবে সমীক্ষার রিপোর্ট তৈরি হওয়ার আগেই শিবলিঙ্গ থাকার কথা প্রচার হয়ে গেল, সমীক্ষার রিপোর্ট কোর্টে জমা পড়ার আগেই যে ভাবে তা ফাঁস হয়ে গেল, কোর্ট রায় দেওয়ার আগেই যে ভাবে মসজিদের একাংশ সিল করে দেওয়া হল, সবটার মধ্যেই একটা পূর্ব পরিকল্পনার ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে না কি? বিচার ব্যবস্থাও কি প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হয়ে যাচ্ছে না?
সংবিধানের ঘোষণা অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্রর সব পদক্ষেপ সংবিধান মেনে, ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হওয়া উচিত। মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি হয়েছিল, এমন কোনও প্রমাণ কোনও সমীক্ষাতে প্রকাশিত হয়নি। তা ছাড়া মনে রাখতে হবে, সেই যুগটা ছিল রাজতন্ত্র তথা সামন্ততন্ত্রের যুগ। রাজা-সম্রাট-সুলতানদের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ, পরস্পরের রাজ্য দখল, মৃত্যু-ধ্বংস লেগেই থাকত। এটাই ছিল সামন্ততন্ত্রের স্বাভাবিক চরিত্র। মুসলমান ধর্মাবলম্বী সুলতান-বাদশাহরা যেমন তা করেছে, হিন্দু রাজার-সম্রাটরাও তেমনই তা করেছে। সে যুগ বিগত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রর নীতি-আদর্শ সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রর নীতি-আদর্শের থেকে গুণগত ভাবে সম্পূর্ণ আলাদা। সেদিনের সত্যের বিচার আজকের সত্য দিয়ে হয় না। সেদিনের কোনও সত্য আজ আর ‘প্রকৃত সত্য’ বা সেদিনের কোনও ঘটনা আজ ‘ঐতিহাসিক ত্রুটি’ হিসাবে পরিচিত হতে পারে না। শত শত বছর ধরে এ দেশে বারবার বিদেশি আক্রমণ হয়েছে। দেশের অভন্তরে রাজা সম্রাটরা পরস্পর যুদ্ধ করেছেন। কলিঙ্গ যুদ্ধে সম্রাট অশোকের নেতৃত্বে কলিঙ্গ বাহিনীর এক লক্ষ সৈন্য মারা যায় বলে ইতিহাসে কথিত আছে। মারাঠা বর্গিরা এক সময় বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করেছিল। নাদির শাহ দিল্লিকে ধ্বংস করে কোহিনূর সহ হাজার বছরের সম্পদ লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিল। দুশো বছর ধরে ব্রিটেন ভারতকে শাসন করেছে, শোষণ করেছে, লুঠ করেছে। ভারতীয়দের উপর নির্মম অত্যাচার করেছে, বিপ্লবীদের ধরে ধরে ফাঁসি দিয়েছে। এ-সবই সত্য। সেই সত্যের জোরে আজ যেমন অমিত শাহরা নাদির শাহের ইরান আক্রমণ করতে যাবেন না তেমনই সেদিনের আক্রমণকারীদের দেশগুলি বা ব্রিটেনের বিরুদ্ধেও প্রতিশোধ নেওয়া যায় না। কিংবা দেশের অজস্র বৌদ্ধ মঠকে ভেঙে পরবর্তী সময়ে মন্দির তৈরি হয়েছে। সেই সব মন্দির ভেঙে পুনরায় বৌদ্ধ মঠ তৈরির দাবিকেও মানা যায় না। কিছুদিন আগেও এমন দাবি কেউ করলে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন উঠত। আর আজ বিজেপি শাসনে তাদেরই ‘দেশপ্রেমিক’ বলে প্রচার করা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে যখন আজকের ইতিহাস লেখা হবে তখন এদেরই ভণ্ড, স্বৈরাচারী, সাম্প্রদায়িকতাবাদী, গণতন্ত্রহত্যাকারী বলে পরিচয় লেখা থাকবে।
স্বাভাবিক ভাবেই আজ ‘ইতিহাসের ত্রুটি’ সংশোধনের কোনও দাবি কোনও আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গ্রাহ্য হতে পারে না। বাস্তবে এমন দাবি কোনও সচেতন মানুষ তুলছেন না। এমনকি কোনও হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষেরও এটা দাবি নয়। এই দাবিকে পরিকল্পিত ভাবে ধুরন্ধর বিজেপি-আরএসএস নেতারা পিছনে থেকে উস্কানি দিয়ে তোলাচ্ছেন ভোটের লক্ষে্য মেরুকরণ ঘটাতে। আর তারা এটা পারছেন কারণ, সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই দেশের মানুষের মধ্যে যে বিভেদের বীজ থেকে গিয়েছিল তা উপড়ে ফেলার জন্য সামন্ততান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার যে প্রসার ঘটানোর দরকার ছিল সে কাজটা হয়নি। তার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি যে সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালনের প্রয়োজন ছিল, স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে কংগ্রেস নেতৃত্ব সেদিন তা অবহেলা করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও কেন্দ্রে শাসক কংগ্রেস এবং রাজ্যে রাজ্যে যারা ক্ষমতায় বসেছে তারাও একই রকম ভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটিকে অবহেলা করেছে। ফলে ধর্ম সম্পর্কে আধুনিক ধারণা, যা ধর্মকে ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয় হিসাবেই দেখে এবং রাষ্ট্র সব ধর্ম থেকেই নিজেকে দূরে রাখে, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক সব ধরনের কাজই পরিচালিত হয় গণতান্ত্রিক চিন্তা এবং রীতিনীতির ভিত্তিতে–এই বিষয়টিকে অবহেলা করে, কার্যত ধর্ম কেন্দ্রিক চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং তাকে সাম্প্রদায়িকতায় পরিণত করে ভোটের স্বার্থে কাজে লাগানো হয়েছে। আজ বিজেপি-আরএসএস সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ, ধর্মস্থান দখল এগুলি কোনওটিই ধর্মবোধ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত ক্রিয়া নয়। বরং সুপরিকল্পিত একটা ক্রিয়ার পরম্পরা যা বিপজ্জনক। দাঙ্গার পরিকল্পিত প্রবাহ।
দেশের মানুষকে আজ একটা কথা গভীর ভাবে ভেবে দেখতে হবে, দেশের অর্থনীতি আজ বিধ্বস্ত। তার সমস্ত বোঝা এসে পড়েছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের উপর। সাধারণ মানুষ দিন-রাত পরিশ্রম করে পরিবার প্রতিপালনের খরচটুকুও তুলতে পারছে না। প্রতিদিন বিরাট অংশের মানুষ দারিদ্রের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে সমাজের মুষ্টিমেয় একচেটিয়া পুঁজির মালিকরা সমাজের ৯৯ শতাংশ মানুষের পরিশ্রমের ফসলকে আত্মসাৎ করে তাদের সম্পদের পাহাড়কে ক্রমাগত উঁচু করে চলেছে। এই শোষণ-বঞ্চনা আর বৈষম্যকে আড়াল করতেই শাসক পুঁজিপতি শ্রেণির সেবাদাস, তাদের রাজনৈতিক ম্যানেজার হিসাবে কাজ করা শাসক দলগুলি যে যখন ক্ষমতায় থাকে, যেমন এখন বিজেপি রয়েছে ক্ষমতায়, তারা এমন করে সাম্প্রদায়িক বিরোধ বাধায়, ধর্মে ধর্মে বিরোধ বাধায়, মানুষের নজরকে ঘুরিয়ে দিতে শোষিত মানুষের মধ্যে দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্র করে এবং এভাবে পুঁজিবাদের শোষণকে আড়াল করে।
এই হিন্দুত্ববাদীরা, বিজেপি-আরএসএস বাহিনী যদি পাঁচশো বছর আগেকার মন্দির উদ্ধার করতে এত আগ্রহী, তবে আধুনিক যুগের যে ‘মন্দিরগুলি’ ৯৯ শতাংশ মানুষের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে, সেই রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানা, খনি, বন্দর, সড়ক, রেল, তেল, ব্যাঙ্ক, বিমা প্রভৃতি সব জাতীয় সম্পদ-সম্পত্তি যে আজ বিজেপি সরকার লোপাট করে দিচ্ছে, ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে, দেশের জনগণের শত্রু একচেটিয়া পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে, সেই সব সম্পদ-সম্পত্তি রক্ষা করতে, সেগুলি উদ্ধার করতে তাদের কোনও আগ্রহ দেখা যায় না কেন? একচেটিয়া পুঁজির পক্ষে সরকারের এই নগ্ন দালালির বিরুদ্ধে একটি কথাও তারা উচ্চারণ করে না কেন? এর থেকেই স্পষ্ট, মন্দির-মসজিদ বিতর্কটাই আসলে মেকি, বানানো। দেশের শত্রু, জাতির শত্রু ধর্মের ধ্বজাধারী এই সব নেতাদের পরিকল্পিত।
ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে ক্ষমতার গদির দখল নেওয়া, অন্য দিকে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করে সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষকে এই দুষ্ট শক্তিগুলির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সোচ্চার হতে হবে। দাবি তুলতে হবে, মন্দির হোক, মসজিদ হোক, গির্জা হোক প্রতিটি ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল রক্ষা আইনকেই কার্যকর করতে হবে। এই আইন বদলের চেষ্টা চলবে না।