৩১ মার্চ অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির ডাকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত পদযাত্রা করে রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হল। পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, অভিভাবক সহ সহস্রাধিক মানুষের দৃপ্ত মিছিলে মুখরিত হল কলকাতার রাজপথ। শিক্ষার প্রাণসত্তা হরণকারী জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ বাতিল ও রাজ্য সরকারের পিপিপি মডেল চালু করে স্কুল শিক্ষাকে বেসরকারিকরণ করার চক্রান্তের প্রতিবাদে এবং সমস্ত শিক্ষক পদ অবিলম্বে পূরণ করা, পাশ-ফেল চালু করা, ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সির মাধ্যমে স্নাতক স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা, অনলাইন শিক্ষার পরিবর্তে শ্রেণিকক্ষ-শিক্ষা সুনিশ্চিত করা, ব্লেন্ডেড মোড শিক্ষা বাতিল করা প্রভৃতি দাবি নিয়ে বিগত এক মাস ধরে রাজ্যের শহর-গঞ্জ থেকে শুরু করে এলাকায় এলাকায় প্রচার চালানো হয়। অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির নেতৃত্বে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এলাকায় যে শত শত আন্দোলনের কমিটি গঠিত হয়েছে এবং যে কমিটিগুলিতে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষ সামিল হয়েছেন তাঁরাই লাগাতার জেলা ও লোকাল স্তরে সংগঠিত হয়ে অসংখ্য ধরনা, মিছিল, অবস্থান ও ডেপুটেশনের কর্মসূচি পালন করেন। এই কর্মসূচিগুলিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের শিক্ষা স্বার্থবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধে ধিক্কার জানান। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ মার্চের কর্মসূচিতে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলা থেকে শত শত মানুষ যোগ দেন।
সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন উপাচার্য ও কমিটির সভাপতি চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী, বিশিষ্ট ভূ-বিজ্ঞানী ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন অধ্যক্ষ মৈত্রেয়ী বর্ধন রায়, অধ্যক্ষ শিবশঙ্কর পাল, অধ্যক্ষ বি আর প্রধান, কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অনীশ রায় অসুস্থ থাকার কারণে লিখিত বার্তা পাঠান। সকলেই জনবিরোধী এই শিক্ষানীতি চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এবং এই শিক্ষানীতি সম্পর্কে রাজ্য সরকারের অভিমত স্পষ্ট করে জনসমক্ষে আনার দাবি জানান। পার্থ চ্যাটার্জী শিক্ষামন্ত্রী থাকার সময় যে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি হয়েছিল শিক্ষানীতি সম্পর্কে সেই কমিটির অভিমত প্রকাশ করার দাবি করেন রাজ্য সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর।
সভা শেষে সুসজ্জিত পদযাত্রা এগিয়ে চলে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে। মিছিল শেষে বিশ্বজিৎ মিত্রের নেতৃত্বে মাহফুজুল আলম, কানাইলাল দাস ও আনন্দ হাণ্ডা এই চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষানীতি ও পিপিপি মডেল বাতিল করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করার ঘোষণা করেন নেতৃবৃন্দ। ওই দিন কোচবিহার, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও একই সাথে কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে।