ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ভারতের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে জিনগত সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিরূপণের জন্য একটি প্রজেক্ট করতে যাচ্ছে এবং এই সংক্রান্ত গবেষণায় প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করছে বলে সংবাদে প্রকাশ। সংবাদে এও প্রকাশ যে, এর মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ভারতীয়দের জাতিগত বিশুদ্ধতা, জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে চায়।
এই প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করেছেন জীববিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীরা। ভারতের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের ১২০ জনেরও বেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে পাঠানো এক প্রতিবাদপত্রে বলেছেন, এটা একটা অবাস্তব এবং ভয়ঙ্কর কার্যক্রম যা সামাজিক সম্প্রীতি ও সমন্বয়কে বিপন্ন করবে। প্রতিবাদপত্রে তাঁরা বলেছেন, জীবের জাতিগত ধারণা বহু আগেই বাতিল হয়ে গেছে। বিভিন্ন অংশের মানুষের মধ্যে যতটুকু জিনগত গবেষণা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, প্রায় প্রত্যেক সম্প্রদায় পূর্ববর্তী বহু সম্প্রদায়ের সংমিশ্রণ। ফলে বিশুদ্ধতার প্রশ্নটিই অবৈজ্ঞানিক। তা হলে কেন সরকার এটা করতে যাচ্ছে? কী তার নিগূঢ় রহস্য?
জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের সাথে হিন্দুত্বের যোগসূত্র জিনগতভাবে প্রতিষ্ঠা করার দূরভিসন্ধিও এর পেছনে থাকতে পারে বলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আশঙ্কা। প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষর করেছেন পার্থ মজুমদার (প্রাক্তন ডিরেক্টর, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিকেল জেনোমিক্স, কল্যাণী), রাঘবেন্দ্র গাদাগকর (ইকলজিস্ট), ভি নাঞ্জুডিয়া (ইভলিউনশারি বায়োলজিস্ট বাঙ্গালোর), জীববিজ্ঞানী এল এস শশীধরা (অশোকা ইউনিভার্সিটি, হরিয়ানা), ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, রোমিলা থাপার এবং অ্যানথ্রোপলজিস্ট কৈলাস মালহোত্রা।
হিটলারের ফ্যাসিস্ট কার্যক্রমের সাথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই প্রয়াসের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। কিন্তু জনগণকে সম্মোহিত করার ক্ষেত্রে হিটলারি ক্ষমতার ধারেকাছেও নেই প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর এই সব কাজের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই উঠছে প্রতিবাদ। এটাই রূপোলি রেখা।