১৩ নভেম্বর ভোরে জয়নগর থানার বামনগাছি অঞ্চলে রাজনৈতিক নেতা সাইফুদ্দিন লস্কর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার পরে সাহাবুদ্দিন লস্কর নামে একজন গণপিটুনিতে মারা যান। এর পরেই ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে দলুয়াখাকি গ্রামে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী বেশ কিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। বাড়ি, মোটরভ্যান, আসবাবপত্র, চাল, ডাল, পোশাক, পরিচ্ছদ, হাঁস, মুরগি পুড়িয়ে দেয়। টাকাপয়সা, সম্পদ লুট করে। আইসিডিএস স্কুল, গ্রামীণ ডাক্তারের চেম্বার পুড়িয়ে দেয়। ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি, সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে বাধা দেয়। এই সমস্ত ঘটনা শাসক দলের মদতে ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে হয়েছে বলে আক্রান্ত পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে। শীতের রাতে শিশু, মহিলারা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তক পুড়ে যাওয়ার ফলে দিশেহারা।
মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা শাখার পক্ষ থেকে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে চায়। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তা সত্ত্বেও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের জন্য তাঁরা ১৭ নভেম্বর উপদ্রুত গ্রামে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এর থেকে বোঝা যায় প্রশাসন কিছু আড়াল করতে চাইছে। তোলাবাজি, মাটি ব্যবসা ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে স্থানীয় শাসকদলের নেতা খুন ও মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়েছে বলে পারিপার্শ্বিক তদন্তে উঠে এসেছে।
সিপিডিআরএস দাবি জানিয়েছে— ঘরছাড়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে ঘরে ফেরাতে হবে, আশ্রয়হীনদের অবিলম্বে ঘর তৈরি করে দেওয়া, ক্ষতিপূরণ, তাদের জরুরি ডকুমেণ্ট পুনরুদ্ধার করার ব্যবস্থা ও খাবার-জামাকাপড় ইত্যাদির ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সহ সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের বই খাতার বন্দোবস্ত করতে হবে এবং খুন, পাল্টা খুন, ঘর পোড়ানো লুটপাটে জড়িত দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর সাজার ব্যবস্থা করতে হবে।