পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্কুলছাত্রদের প্রতিবাদ আন্দোলনে অংশগ্র্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই সরকারি ঘোষণার বিরুদ্ধে এআইডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় ২৪ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা এই নির্দেশিকাকে চরম অগণতান্ত্রিক এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে মনে করি। এই নির্দেশিকা ১৯০৫ সালে কুখ্যাত ব্রিটিশ সরকারের কার্লাইল সার্কুলারকে মনে করিয়ে দিল। সেদিনও সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ সরকার ছাত্রছাত্রীদের সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ আটকাতে এমনই এক কালা সার্কুলার এনেছিল। এর বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘‘ছাত্ররা সকল সময় সকল বিষয়ে শিক্ষাগুরুদের অনুবর্তী হইয়া চলিবে তাহা সম্ভবপর নহে, সমাজের পক্ষে স্বাস্থ্যকরও নহে। ছাত্ররা যদি আবাল বৃদ্ধ বনিতার সাথে বর্তমান আন্দোলনে যোগ দিয়া থাকে, তবে তা আনন্দেরই কথা। … আজ যে ছাত্ররা উন্মত্ত, জনসাধারণ উত্তেজিত ও বৃদ্ধরা উত্তপ্ত হইয়া উঠিয়াছেন তাহাতে মনে হয় সকলে মিলিয়া দেশকে এই মহাসঙ্কট থেকে রক্ষা করিবার জন্য উদ্যত হইয়াছেন।’’
আজ দেশ স্বাধীনতা অর্জন করলেও দেশজুড়ে যে চরম সঙ্কট, বিশেষত আর জি কর মেডিকেল কলেজের নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা ভারতবর্ষ জুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাধারণ ছাত্রছাত্রী এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যেভাবে সমস্ত কুণ্ঠা, পিছুটান, চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে লড়াই আন্দোলনে নামছেন তাকে শাসক ভয় পেয়েছে। এই আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে দেশ জুড়ে যে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে ওঠে, সেই সমস্ত আন্দোলনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজের মতোই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছাত্র সমাজের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে ভয় পেয়ে তাকে দমন করার জন্য স্বৈরাচারী নির্দেশিকা দিয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে সমাজ প্রগতির চিন্তাকেই বাধা দিতে চাইছে সরকার। এআইডিএসও এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই অপচেষ্টা অবশ্যই ছাত্র সমাজ ব্যর্থ করবে। অভিসন্ধিমূলক এই সরকারি নির্দেশিকা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।