(প্রতারক চিটফান্ড মালিকদের কোটি কোটি টাকা লুঠ করার ব্যবসায় সিপিএম–কংগ্রেস–বিজেপি-তৃণমূলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ যে প্রত্যক্ষভাবে মদত জুগিয়েছেন, তার বহু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে৷ এরা যতই সাধু সাজার চেষ্টা করুক না কেন, চিটফান্ড কেলেঙ্কারি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বাইরে এদের বিরোধিতা যাই থাকুক, জনগণের টাকা আত্মসাতের ক্ষেত্রে এই সব পার্টিগুলি একই সারিতে দাঁড়িয়ে৷ পুঁজিবাদের এই চূড়ান্ত অবক্ষয়ের যুগে এই ব্যবস্থার সেবক দলগুলি আজকের দিনে সৎ থাকতে পারে না৷ এর থেকে মুক্ত থাকতে পারে তারাই যারা পুঁজিবাদ বিরোধী সংগ্রামে লিপ্ত৷ চিটফান্ড নিয়ে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর তরজার প্রেক্ষিতে সেইসব সংবাদ গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সংক্ষিপ্ত আকারে ৬৫ বর্ষ ১৭ সংখ্যা, ১৭ মে ২০১৩ থেকে পুনর্মুদ্রিত করা হল৷)
চিটফান্ড ও সিপিএম
- বেহালায় জমির কারবার দিয়ে পথ চলা শুরু সুদীপ্ত সেনের৷ অনেকেই জানেন, সেই পথে পাশে পেয়েছিলেন এলাকার এক সিপিএম মাতব্বরকে৷ দলের কলকাতা জেলা কমিটির প্রবীণ ঐ মাতব্বরের অঙ্গুলিহেলনে অন্ধকার জগতের লোকজনের সাহায্যে জোকা–বিষ্ণুপুর এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি হাতিয়েছিলেন সেনবাবু৷ — বর্তমান ২২.৪.২০১৩
- বিষ্ণুপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সারদার উত্থান লগ্নের গোড়ায় ছিল প্রাক্তন শাসক দল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর বদান্যতা৷ সিটুর বাস ইউনিয়নের দাপটে দুই নেতা পীযূষ নস্কর ও প্রশান্ত নস্করের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ৷ দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিষ্ণুপুর এলাকার ভাসা কোনচৌকি অঞ্চলে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সময়ে সারদা সিটি গড়ে তোলার জন্য জমি দখলের ক্ষেত্রে এই দুই নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মস্তানের ভূমিকা পালন করেছে৷ — এই সময় ২৬.৪.২০১৩
- ১২ মে, ২০১৩ বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবির বর্ণনা : দু’টি চিটফান্ড সংস্থার সর্বময় কর্তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে বুদ্ধদেববাবুর ছবি দেখা যাচ্ছে৷ একটি আবার খোদ মহাকরণে নিজের চেয়ারে ঐ সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পরের ছবি৷ অন্য ছবিটিতে এক চিটফান্ড কর্তা, যাঁদের কাছে ঘেঁষতে দেননি বলে দাবি করেছিলেন বুদ্ধদেববাবু, প্রায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কোলে উঠে পড়েছেন৷ সেই আসরে সিপিএমের আরও এক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছবিতে ধরা পড়েছেন৷ বর্তমানে যিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে চিটফান্ডের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন, সেই মহম্মদ সেলিম৷
- সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তি সারদা গোষ্ঠীর কাছ থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ প্রচুর টাকা নিত৷ গণশক্তি পত্রিকায় সারদার বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ায় এই সংস্থার পেছনে রাজ্যের তৎকালীন সিপিএম সরকারের মদত জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায়৷ সরকারের মদত থাকায় জনগণ নির্ভয়ে টাকা রাখা শুরু করে৷ — এই সময়, বর্তমান ২৬.৪.২০১৩
- প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্তর সি এ গণেশ দে কেবল সল্টলেকে নয়, নদীয়ার চাকদহে সারদাকে বিশাল জমি পাইয়ে দিয়ে মোটা টাকা কামিয়েছেন বলে অভিযোগ৷ এদিকে অসীমবাবুর নির্বাচনকেন্দ্র খড়দহে পুষ্প প্রদর্শনীর জন্য গণেশবাবু ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে সিপিএম নেতৃত্বের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন৷ — বর্তমান, ৭.৫.২০১৩
- সারদা কান্ডে তদন্তকারী সি আই ডি অফিসারদের তিনি (গণেশ দে) জেরার জবাবে জানিয়ে দিয়েছেন, খোদ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে (সিপিএমের সদর দপ্তর) নিজে গিয়ে চিট ফান্ডের লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে এসেছেন– বর্তমান ৮.৫.২০১৩
- সুদীপ্ত জেরায় আরও জানিয়েছেন, প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেবের ঘনিষ্ঠ অঞ্জন ভট্টাচার্যকে তিনি মাসে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দিতেন৷– বর্তমান ৫.৫.২০১৩
- বাম আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘শতদল’ চিটফান্ডের অন্যতম কর্তা তিনি (প্রমথ নাথ মান্না)৷ নয়ের দশকে আমানতকারীদের থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে প্রতারণা করে ঐ সংস্থাটি বন্ধ হয়ে যায়৷ প্রতারণার অভিযোগে বাম আমলে প্রমথবাবুকে দু’মাস জেলও খাটতে হয়েছিল৷ কিন্তু যার মাথার উপর আলিমুদ্দিনের (সিপিএমের সদর দপ্তর) সর্বময় কর্তার হাতে রয়েছে, তাকে আটকে রাখে কে? তাই বাম আমলেই তিনি এম পি এস নামে আরও একটি চিটফান্ড খুলে বসেন৷ …২০১৩ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি বিমানবাবু ঐ চিটফান্ড কর্তার মেয়ের বিয়েতে যোগ দিয়েছিলেন৷– বর্তমান ৯.৫.২০১৩
- শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, ত্রিপুরাতেও চিটফান্ড সংস্থাগুলির সঙ্গে সিপিএমের যোগসাজশের খবর সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে৷ সংবাদপত্র লিখেছে, সব থেকে বড় চিটফান্ড গোষ্ঠী রোজভ্যালির অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার নিজে অনেকবার উপস্থিত থেকে তাদের কাজকর্মকে কার্যত বৈধতা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ তারা দলীয় মুখপত্রে এই সব সংস্থার প্রচারও দিয়েছেন৷ –বর্তমান, ২৬.৪.২০১৩
- সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা সংবাদমাধ্যমে বলেন, এ রাজ্যে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কেলেঙ্কারি নিয়ে যদি সিবিআই তদন্ত হয়, তাহলে ১৯৭৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত যত অপকর্ম হয়েছে সবই তদন্তের আওতায় আসা দরকার৷ তাঁর সাফ কথা, ‘ আমাদের দলও ধোয়া তুলসীপাতা নয়’৷ – এই সময় ২৭.৪.২০১৩
চিটফান্ড ও তৃণমূল
- ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে রাজ্য–রাজনীতিতে পরিবর্তনের শুরু৷ সুদীপ্তবাবু কারবার বাড়াতে সিপিএমের সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলে ভিড়ে যান৷ জনগণের কাছ থেকে তুলে আনা কোটি কোটি টাকার থলি নিয়ে সেনবাবু ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এমন একজনের সন্ধানে, যিনি মমতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ৷ — বর্তমান ২২.৪.২০১৩
- তৃণমূল নেতা পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, ২০০৯–এ বিষ্ণুপুরে আমাদের কয়েক হাজার ছেলে এসে আমায় জানাল, সারদা গার্ডেন্সের পাশে স্বামীনাথন মন্দির হবে৷ আমাকে যেতে হবে৷ আমি ঐ অনুষ্ঠানে যাই৷ সেখানেই আমি প্রথম সুদীপ্ত সেনকে দেখলাম৷ তিনি মন্দির তৈরির জন্য বহু কোটি টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করলেন৷ সেই অঙ্গীকারের পর হাজার হাজার ছেলে সুদীপ্ত সেনের নামে জয়ধ্বনি দিতে লাগল৷ আমাকে বলা হয়েছিল, বিষ্ণুপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক ওদের উপর গুণ্ডামি করেছে৷ তাই বলেছিলাম, যদি আপনাদের উপর কেউ অন্যায়, অত্যাচার বা গুণ্ডামি করে, তাহলে আমাকে বলবেন৷ আমি বিধায়ক হিসাবে নিশ্চয়ই দেখব৷ — এই সময় ২৭.৪.২০১৩
- তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে নামমাত্র টাকায় চ্যানেল বিক্রি করার অভিযোগ আনলেন সারদা–কর্তা সুদীপ্ত সেন৷ …কুণাল ঘোষকে ধরেই তিনি রাজ্য সরকারকে নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছিলেন৷ …সারদার কর্ণধার তার মিডিয়া ব্যবসার মাথা হিসাবে কুণালকে মাসে ১৫ লক্ষ টাকা মাইনে দিতেন৷ …সিবিআইকে লেখা সুদীপ্তর চিঠিতে কুণাল ছাড়াও তৃণমূলের আরও এক রাজ্যসভার সদস্য সৃঞ্জয় বসু সম্পর্কেও বলা হয়েছে অনেক কথা৷ তাঁর সম্পাদিত বাংলা দৈনিকের (সংবাদ প্রতিদিন) সঙ্গে মাস প্রতি ৬০ লক্ষ টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়৷ সুদীপ্ত এই চিঠিতে দাবি করেছেন, কুণাল অ্যান্ড কোম্পানি তাঁকে আশ্বাস দেয়, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দিক থেকে তাঁর ব্যবসাকে পুরো সুরক্ষিত করা হবে৷ –বর্তমান ২৫.৪.২০১৩
- জঙ্গলমহলে সারদা গোষ্ঠী প্রায় ৬টি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিল৷ –এই সময় ২৫.৪.২০১৩
- সারদা কাণ্ডের তদন্ত শেষমেষ সিবিআই–এর হাতে যেতে পারে এই আশঙ্কায় রীতিমতো ভয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ … ২ কোটি টাকায় ছবি কেনা থেকে শুরু করে দলের জন্য সারদা কর্ণধার কখন কীভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সেই সবই জানাজানি হয়ে যেতে পারে৷ — বর্তমান ২৭.৪.২০১৩
- ২ মে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে দলীয় জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, চ্যালেঞ্জ করছি, কেউ বলতে পারবেন না, ‘জাগো বাংলা’ কোনও চিটফান্ডের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিয়েছিল৷ …মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত জোরের সঙ্গে ঐ দাবি করলেও বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে৷ বাংলা ১৪১৯, ইংরেজি ২০১১ সালের ‘জাগো বাংলা’ উৎসব সংখ্যায় ‘ইনসাইড ব্যাক কভার’ এর বিজ্ঞাপনই দিয়েছিল সারদা পরিচালিত বৈদ্যুতিন মাধ্যম ‘চ্যানেল টেন’৷ এখানেই শেষ নয়, সেখানে ৮১ পাতায় রীতিমতো ‘সারদা’ লোগো ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে ‘সকালবেলার’৷ — বর্তমান ৪.৫.২০১৩
- সুদীপ্ত সেন পূর্ব ভারত ছাড়িয়ে চিটফান্ডের জাল বিস্তার করতে চেয়েছিলেন উত্তর ভারতের গো–বলয়েও৷ সেই পথ প্রশস্ত করতে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল টাকাও ঢেলেছিলেন৷ এবং অভিযোগ, সেক্ষেত্রেও তৃণমূলই ছিল সারদা কর্তার প্রধান ভরসা৷ বস্তুত উত্তরপ্রদেশে তৃণমূল যাতে প্রার্থী দেয়, সেজন্য সবিশেষ আগ্রহী হয়েছিলেন সারদা কর্তা৷ সূত্রের খবর, এর জন্য সমাজবাদী পার্টির এক প্রাক্তন নেতা এবং কংগ্রেসের এক প্রাক্তন এম পি–কে কাজে লাগানো হয়৷ উত্তরপ্রদেশে ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূল৷ সারদা কর্তার সমর্থনপুষ্ট হয়েই প্রচারে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা৷ — এই সময় ২৭.৪.২০১৩
- ব্যবসার সমস্যা এড়াতে তৃণমূলের এক সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতার পরামর্শেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে জেরায় জানালেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন৷ …পালিয়ে থাকার সময় ঐ নেতা যোগাযোগ রাখার জন্য তাঁকে তিনটি নতুন প্রি–পেড সিমকার্ড কিনে দিয়েছিলেন৷ উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং মণিপুরের তিন তৃণমূল নেতা মারফত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন ঐ নেতা৷ … কিন্তু ভুলেও পশ্চিমবঙ্গের কোনও তৃণমূল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না৷ — বর্তমান ১২.৫.২০১৩
চিটফান্ড ও কংগ্রেস
- নভেম্বর ২০১২ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) মনমোহন সিং– কে চিঠি পাঠিয়ে সারদা সহ চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন৷ মার্চ ২০১৩ তিনি এই অভিযুক্তের তালিকা থেকে সুদীপ্ত সেন ও তার কোম্পানিকে অব্যাহতি দিতে বলেন৷ –বর্তমান ২৬.৪.২০১৩
- বাম জমানায় সিপিএমের ছত্রছায়ায় থাকা চিটফান্ড সংস্থা এমপিএস–এর কর্তা প্রমথনাথ মান্না পালাবদল হতেই ধরে নেন তৃণমূল এবং কংগ্রেস মন্ত্রীদের৷ তৃণমূলের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র পাঁশকুড়ায় এমপিএস–এর ধাবার উদ্বোধন করেছিলেন৷ আর কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া কলকাতায় ‘গুণীজন সংবর্ধনা’র একটি অনুষ্ঠানে হাজির করেছিলেন সংস্থার কর্ণধারকে৷ — বর্তমান, ১৪.৫.২০১৩
- রাজস্থান ও ওড়িশায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবং বিজু জনতা দলের কয়েকজন নেতাকে ধরে এগোতে চেয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন৷ ওই দুই রাজ্যে, যথাক্রমে উদয়পুর এবং ভুবনেশ্বরে সারদার ব্রাঞ্চ অফিসও খোলা হয়৷ তবে এই দুই রাজ্যে শেষপর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখেনি সারদার কর্তার পরিকল্পনা৷ বাংলার মতো কোনও রাজ্যেই বস্তুত রাজনীতির কারবারিদের হাত ধরে তাঁর ব্যবসার পরিকল্পনা তেমন দাঁড়ায়নি৷ — এই সময় ২৭.৪.২০১৩
- আসামের এক চ্যানেলের মালকিন, কংগ্রেস নেতা মাতঙ্গ সিংহের প্রাক্তন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহ তার কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা নিয়েছেন বলে সুদীপ্ত চিঠিতে অভিযোগ করেন৷ চিঠি অনুযায়ী, মনোরঞ্জনা ও তাঁর আইনজীবী নলিনী চিদম্বরম মনোরঞ্জনার চ্যানেলে ৪২ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য সুদীপ্তকে চাপ দিচ্ছিলেন৷ চিঠিতে অভিযোগ, মনোরঞ্জনা লোভ দেখান, নলিনীও বলেন তাঁর স্বামী কেন্দ্রে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম সারদার পাশে দাঁড়ালে ব্যবসার উন্নতি অবধারিত৷ –আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬.৪.২০১৩
চিটফান্ড ও পুলিশ
- জেলায় জেলায় গড়ে ওঠা সারদার সাম্রাজ্য মসৃণভাবে চালাতে গেলে স্থানীয় থানাগুলিকে ‘রসেবশে’ রাখা যে জরুরি, তা সুদীপ্ত সেন ভালই বুঝেছিলেন৷ তাই নিরাপদে চিটফান্ড ব্যবসা চালাতে বিভিন্ন থানার ওসি– দের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা এজেন্টদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থ থেকে আগেই সরিয়ে রাখতেন বলে সিট ( স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) জানতে পেরেছে৷ …. বাছাই করা এক একটি থানায় বছরে কমপক্ষে ১৫ লক্ষ টাকা ভেট পাঠানো হত, এমন তথ্যও উঠে আসছে৷ কোথাও কোথাও এই অঙ্ক ছিল ৩০ লাখ, ৪০ লাখ পর্যন্ত৷ টাকার অঙ্ক নির্ভর করত জেলা ও থানার গুরুত্ব অনুসারে৷ এই টাকা থানার অফিসারদের মধ্যে ভাগ হয়ে যেত৷ –বর্তমান ৪.৫.২০১৩
- বিধাননগর পুলিশের তদন্তে এসেছে প্রাক্তন কিছু পুলিশ কর্তার সারদা ঘনিষ্ঠতার চাঞ্চল্যকর সব তথ্য৷ দেবেন বিশ্বাসের মতো আই পি এস অফিসাররা ছিলেন সুদীপ্ত সেনের ‘ ক্রাইসিস ম্যানেজার’৷ এ ছাড়া আরও অন্তত ৩০ জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী তাঁকে নানাভাবে সাহায্য করতেন, এদের মধ্যে ছিলেন সিআইডি–রও কয়েকজন৷ দেবেনবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি সারদার দু’একটি সভায় গিয়েছিলেন তৎকালীন সিপিএম বিধায়ক হিসেবে৷ — এই সময় ১.৫.২০১৩