দীর্ঘ ৯ মাস ধরে লাগাতার আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য জয় হল মালদা জেলার চাঁচলের গ্রামবাসীদের৷ চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুরে ১৩২ কেভি বিদ্যুতের সাবস্টেশন তৈরি হবে৷ এর জন্য চাঁচল–১ এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের আটটি অঞ্চলের বাস্তু ও কৃষিজমির উপর দিয়ে হাইটেনশন তার ও টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে৷ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানি (ডব্লিউবিএসইটিসিএল) যে এজেন্সিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে তারা জমির মালিকের পূর্ব অনুমতি ছাড়াই পুলিশি হুমকি, শাসক দলের চোখ রাঙানিকে হাতিয়ার করে একের পর এক জমিতে টাওয়ার বসানোর অনুমতি কার্যত কেড়ে নিচ্ছিল৷ নো অবজেকশন সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছিল৷ অ্যাবেকার স্থানীয় কর্মীরা গ্রামবাসীদের নিয়ে এর প্রতিবাদ করেন৷ ফলে এজেন্সি কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়৷ গ্রামের পর গ্রাম প্রচার, বৈঠক করে বহু পরিশ্রমে গড়ে ওঠে ‘বাস্তু ও কৃষিজমি বাঁচাও চাঁচল মহকুমা কমিটি’৷ কমিটির আহ্বানে ২১ অক্টোবর চাঁচল মহকুমা শাসকের কাছে প্রায় দেড়শতাধিক মানুষের বিক্ষোভ ও গণ ডেপুটেশন দেওয়া হয়৷
স্মারকলিপিতে প্রশ্ন তোলা হয়–আধুনিক জীবনযাত্রার মানের অন্যতম মাধ্যম বিদ্যুৎ, কিন্তু তা বলে উন্নয়নের দায়ভার গ্রামের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের বহন করতে হবে কেন? দাবি তোলা হয়, কম ক্ষতি হয় এমন বিকল্প এলাকা নির্বাচন করা অথবা জমি ও সম্পত্তির সুরক্ষা এবং তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ জনসমক্ষে ঘোষণা করতে হবে৷
আন্দোলনের চাপে কর্তৃপক্ষ চাষের জমিতে এ–টাইপ থেকে ডি–টাইপ টাওয়ারের ক্ষেত্রে ৪০ হাজার থেকে ৫৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করতে বাধ্য হয়৷ বাস্তু জমির ক্ষতিপূরণ আরও বিবেচনা করা হবে৷ কিন্তু হাইটেনশন তারের নিচের জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় নেতৃত্ব ঘোষণা করেন আন্দোলনকে আরও উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে৷ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অ্যাবেকার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত বিশ্বাস, চাঁচল শাখা কমিটির সম্পাদক রকিব হোসেন, বাস্তু ও কৃষিজমি বাঁচাও কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রাজিউল ইসলাম (রাজিব)৷ কমিটির সভাপতি মুসারফ হোসেনের নেতৃত্বে মহম্মদ হান্নান আলি, মহম্মদ মোকরম আলি, রাহানুল হক, মাসুদ আলম ডেপুটেশনে অংশগ্রহণ করেন৷ বিক্ষোভ পরিচালনা করেন অ্যাবেকা মালদা জেলার বিশিষ্ট সংগঠক অংশুধর মণ্ডল৷