Breaking News

চলমান অভয়া আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করুন

কায়েমি স্বার্থের বাধা ভেঙে ‘অভয়া’র ন্যায়বিচার ছিনিয়ে আনতে প্রয়োজন সর্বব্যাপক আন্দোলন। চলমান সেই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী ও গতিময় করতে এক বিবৃতিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম। বিবৃতিটি প্রকাশ করা হল।

পশ্চিমবঙ্গের সাথে সারা দেশের মানুষ হতবাক এবং কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ, আর জি কর মেডিকেল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জন অত্যন্ত কুখ্যাত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি, ওই কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই ৯০ দিনের মধ্যেও চার্জশিট দিতে না পারায় তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেন।

গত ৯ আগস্ট গভীর রাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজের তরুণী চিকিৎসক কর্তব্যরত অবস্থায় নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের শিকার হন। তার পর থেকে ন্যায়বিচার চেয়ে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সহ লক্ষ লক্ষ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। বিক্ষোভের আঁচ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। অভয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু সমাজের সুপ্ত বিবেককে জাগিয়ে দিয়ে গেছে। বিশেষত পিচমবঙ্গের বুকে এই ধরনের গণজাগরণ মানুষ স্বাধীন ভারতবর্ষে কখনও দেখেনি। তারপরেও সিবিআই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্ধারিত সময়ে চার্জশিট না দিয়ে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে জামিনে মুক্তি পেতে সাহায্য করল।

ঘটনার দিন ভোরবেলাতেই ডাঃ সন্দীপ ঘোষ, অভিজিৎ মণ্ডল সহ তাদের শাগরেদরা ক্রাইম সিনে পৌঁছে যায়। জায়গা ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী, সাথে শাসক দলের ক্রিমিনাল বাহিনীও। ফলে ৯ আগস্ট সকালে জুনিয়র ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই তাঁরা যখন বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, তাঁদের কিন্তু ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসন প্রথমে আত্মহত্যা বলে বিষয়টি চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। অভয়া মৃত জেনেও অধ্যক্ষ থানায় মেল করে জানান, একটি অচৈতন্য দেহ পাওয়া গেছে। খুনের ঘটনা জেনেও ১৪ ঘণ্টা পরে অর্থাৎ রাত প্রায় পৌনে বারোটা নাগাদ এফআইআর করা হয়। সরকারি নিয়ম আছে, কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে নিগ্রহ, ভাঙচুর বা হত্যার ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষকেই এফআইআর করতে হবে। তা সত্তে্বও এ ক্ষেত্রে পরিবারের অভিযোগের অপেক্ষায় থাকা হল। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এল না। রাতে আবার এফআইআরের বয়ান বদলও করা হল। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চাপে ম্যাজিস্টে্রটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত করতে বাধ্য হলেও তার উপরে ডাঃ সন্দীপ ঘোষেরা প্রভাব বিস্তার করে। এবং মা-বাবাকে মৃতদেহ দেখতে পর্যন্ত না দিয়ে দেহ তড়িঘড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়।

কলকাতা পুলিশ তদন্তে নেমে সঞ্জয় রায় নামক একজন পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার, যে সন্দীপ ঘোষের একজন ছায়াসঙ্গী এবং হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের একজন বড় মাপের দালাল, তাকে এই ভয়ঙ্করতম ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একমাত্র দায়ী বলে গ্রেফতার করল। ১৪ আগস্ট গভীর রাতে কিছু দুষ্কৃতী ক্রাইম সিনে জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে যথেচ্ছভাবে ক্রাইম সিন ধ্বংস করে। অদূরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী নীরব দর্শক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকে।

কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যায়। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলার দায়িত্ব নেয়। প্রথম থেকেই সিবিআই বলে আসছিল তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। প্রথম চার্জশিটে এই ঘটনার বহু ভয়ঙ্কর দিক উঠে আসে। সিবিআই স্বীকার করে তাদের হাতে প্রচুর তথ্য উঠে এসেছে, যা তারা পেশ করতে চলেছে। উঠে এসেছে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে বারংবার যে ফোনালাপ হয়েছিল, উপর মহলের বিভিন্ন নির্দেশ ইত্যাদি তথ্য, হাসপাতাল এবং থানার ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজের একটা বড় অংশ মুছে ফেলার তথ্য। ঘটনাস্থল থেকে যথাযথ ভাবে নমুনা সংগ্রহে এবং ভিডিওগ্রাফিতে যথেষ্ট ত্রুটি ছিল। নমুনা সঠিক সময়ে ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়নি ইত্যাদি তথ্য সিবিআইয়ের হাতে চলে এসেছে বলে তারা স্বীকার করেছে।

বিভিন্ন ঘটনার় তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যেহেতু বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন রয়েছে, সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা তাই বারংবার কলকাতার সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দপ্তরে ডেপুটেশন দিয়েছি এবং ঘটনার ভয়াবহতা এবং গুরুত্ব বুঝে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছি। আমাদের প্রতিবারই আশ্বস্ত করা হয়েছে– ‘আমাদের ঘরেও তো মেয়ে আছে, সুতরাং আপনাদের চিন্তার কোনও কারণ নাই। সঠিক সময়ে আমরা সমস্ত তথ্য কোর্টে দাখিল করব।’

সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করার সময় সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে যে সব তথ্য-প্রমাণ পেশ করেছে, তা দেখে বিচারপতিদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেছে। বিচারপতি চমকে উঠে বলেছিলেন, অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি। বলেছিলেন, সিবিআই তদন্ত করছে। নিচয়ই সমস্তটা সামনে আসবে।

ঘটনাক্রমই প্রমাণ করে, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের যোগসাজশেই সিবিআই নির্ধারিত সময়ে চার্জশিট পেশ করল না– কলকাতা পুলিশ বাহিনী সরকারি দলের দাসে পরিণত হয়েছে। শাসক দলের অঙ্গুলি হেলন ছাড়া সে এক পা-ও চলে না। বিভিন্ন ঘটনাতেই তা আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারি। অভয়া কাণ্ডের প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা এবং প্রমাণ লোপাটে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করার মধ্য দিয়ে তা জনসমক্ষে আরও প্রকটভাবে ফুটে উঠল।

সিবিআইকে মানুষের সামনে নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে তুলে ধরার যতই চেষ্টা হোক, অতীতে বহু সময়েই যথাযথ তদন্ত তারা করেনি। যা দেখে এমনকি বিচারপতিরা পযন্ত বিরক্তির সুরে বলেছেন ‘খাঁচার তোতা’। অর্থাৎ স্বাধীনভাবে তদন্ত নয়, শাসকগোষ্ঠী উপর থেকে যেভাবে নির্দেশ দেয়, ওরা সেভাবেই তদন্ত করে।

সে প্রমাণ আমরা প্রত্যক্ষভাবে পেলাম যখন দেখলাম চার্জশিটের অভাবে অভয়াকাণ্ডে জড়িত দু’জন কুখ্যাত অপরাধী ছাড়া পেয়ে গেল। এই সিবিআই একদিন এদের বিরুদ্ধে প্রচুর তথ্য প্রমাণ পেয়ে এদের গ্রেফতার করেছিল। এরা জামিন পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা কলকাতায় সিবিআই দপ্তরে বিক্ষোভ দেখাই এবং ইনভেস্টিগেটিং অফিসারের সাথে দেখা করে জানতে চাই তারা ৯০ দিনের মধ্যেও কেন চার্জশিট দিতে পারল না। আমরা উদ্বেগের সাথে তাদের জানাই, প্রভাবশালী এই অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে তো সমগ্র মামলাটির উপর প্রভাব খাটাবে। সেই সুযোগ আপনারা করে দিলেন! অত্যন্ত তাচ্ছিল্যের সাথে তাঁরা বললেন, জামিন অযোগ্য ধারা মানে কি বিনা বিচারে সারাজীবন কেউ জেলে থাকবে নাকি, বিশেষত এদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসাররা? চার্জশিট আমরা পেশ করব সময়মতো। এ নিয়ে তো তাড়াহুড়ো করা যায় না। অথচ এর আগে কমপক্ষে ছ’বার আমরা দেখা করেছি। প্রতিবারই তাঁরা বলেছেন, আমাদের হাতে প্রচুর তথ্য প্রমাণ এসে গেছে, নির্দিষ্ট সময়েই আমরা তা পেশ করব, আমাদের উপর ভরসা রাখুন। এই কি সেই ভরসা রাখার নমুনা!

অভয়ার ন্যায়বিচার আটকাতে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকার– আপাত বিবদমান এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এত আঁতাঁত কেন? আসলে অভয়া কাণ্ডের ন্যায়বিচারের সাথে বহু মৌলিক বিষয় জড়িত রয়েছে। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার অন্দরে যে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি লুকিয়ে রয়েছে, অভয়াকাণ্ড তার প্রকৃষ্টতম নমুনা। এই ঘটনার নৃশংসতা মানুষকে যেমন স্তম্ভিত করেছে, তেমনি এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের চাপে এই ঘটনার পেছনে যে স্বাস্থ্যজগতের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি, সিন্ডিকেট রাজ, থ্রেট কালচার রয়েছে, তা-ও সামনে এসেছে। এ সব যাতে অবাধে চলতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে হাসপাতালে হাসপাতালে মদ-গাঁজা-জুয়া-যৌনচক্রের মতো অসাধু ব্যবসা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে কুসুমমতি মেধাবী ছাত্রসমাজকে এবং এই ঘটনায় যে সব রাঘববোয়ালরা জড়িত রয়েছে, ন্যায়বিচার হলে তো তাদের স্বরূপ জনসমক্ষে উদাটিত হয়ে পড়বে।

একদিকে এইসব রাঘব-বোয়ালদেরকে আড়াল করার চেষ্টা। অন্য দিকে এই চারমাস ধরে যে দুর্বার এবং অপরাজেয় আন্দোলন গড়ে উঠেছে, যে আন্দোলন মানুষের সুপ্ত বিবেকবোধকে জাগিয়ে তুলছে, সেই আন্দোলন যদি জয়ের লক্ষে্য পৌঁছে যায়, তা হলে তো দেশ জুড়ে চলতে থাকা খুন-ধর্ষণ-অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ এই আর জি কর মডেলকে অনুসরণ করেই আন্দোলন গড়ে তুলবে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে প্রতিবাদীদের বিজয়রথ চলতে থাকবে। তাই তো পুঁজিবাদী রাষ্টে্রর শাসক শ্রেণি আজ ভয়ে কাঁপছে। আর তাদের ম্যানেজার রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়ে এতবড় অপরাধকেও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই রাস্তাতেই কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সিবিআই এবং রাজ্য তৃণমূল সরকারের পুলিশ একই রকম কাজ করে চলেছে। বাইরে থেকে এই সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে হাজারো বিরোধ দেখা গেলেও শ্রেণিস্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে এরা এক বিন্দুতেই বাঁধা রয়েছে।

সিবিআইয়ের ভূমিকা অভয়া আন্দোলনে বিজেপি এবং তৃণমূলের নগ্ন ভূমিকাকে উদঘাটিত করল। অন্যান্য ভোটসর্বস্ব রাজনৈতিক দলের চরিত্রও উদঘাটিত হল। অভয়ার মা-বাবা বারংবার প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেও তিনি একটি বিবৃতি পর্যন্ত দেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে এলে তাঁরা দেখা করতে চান, তিনি দেখা পর্যন্ত করেননি। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি প্রথম দিকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। চেষ্টা করেছিল এই ঐতিহাসিক আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে যদি সরকারি চেয়ার দখল করা যায়। তাই তো স্লোগান তুলেছিল– ‘দাবি এক দফা এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’। আন্দোলনকারীরা এই হীন রাজনীতি গ্রহণ করেনি। তারপর থেকে রাজ্য বিজেপি নেতারা এটা নিয়ে আর কোনও বাক্য ব্যয় করেননি। ভোটের ময়দানে তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাজার হুঙ্কার ছাড়লেও এখানেই দুই শাসকের স্বার্থ এক। ফলে উভয়ে উভয়কে রক্ষার স্বার্থে নেমে পড়েছে।

তৃণমূলের সেকেন্ড ইনকম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জী এনকাউন্টারের হুঙ্কার ছাড়লেন। এর মধ্য দিয়ে সস্তা রাজনৈতিক চমক এবং যতটুকু তথ্য-প্রমাণ আছে, তা-ও লোপাটের চেষ্টা। মুখ্যমন্ত্রী আইন তৈরির পেছনে ছুটে শোরগোল তুলে দিলেন, যেন খুন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশে কোনও আইন নেই!

আর তথাকথিত বামপন্থী দল সিপিএম এই ঐতিহাসিক আন্দোলনে ঢুকে আন্দোলন ভাঙতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ল। ভোটসর্বস্ব এই দলটিও মৌলিক বিষয়টি বাদ দিয়ে রাজ্যের চেয়ার বদলের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিল।

ভোটসর্বস্ব রাজনৈতিক দলগুলো এবং সিবিআইয়ের ন্যক্কারজনক ভূমিকা সত্তে্বও আন্দোলন একদিন জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছবেই। যে আন্দোলন দেশ জুড়ে মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়ে গেছে, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মেরুদণ্ডকে কিছুটা হলেও সোজা করে দিয়ে গেছে, সে আন্দোলনকে বিপথগামী করার শক্তি কারও থাকতে পারে না। এই আন্দোলনে আওয়াজ উঠেছে– ‘ক্ষুদিরামের এই বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই, প্রীতিলতার এই বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই।’ এমন সব মহামানবদের নাম উচ্চারিত হয় যে আন্দোলনে, তা বিফলে যেতে পারে না। ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি জয়নগর সহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা যেমন বেড়েছে, তেমনি আর জি কর আন্দোলন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তীব্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে উঠছে। এই ব্যবস্থার মধ্যেও শাসকশ্রেণি ন্যায়বিচার দিতে বাধ্য হচ্ছে। অভয়া আন্দোলনেও এক সময় আন্দোলনের চাপেই সিবিআই সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিত মণ্ডলের মতো কুখ্যাত প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছিল। আজ দিকে দিকে আবার গণআন্দোলনের প্রকৃত হাতিয়ার গণকমিটিগুলি তৈরি হচ্ছে। রোজ রোজ আবারও বিক্ষোভ মিছিল মিটিং শুরু হয়েছে। বিচার যত পিছোচ্ছে আন্দোলনের শক্তি ততই বাড়ছে। মানুষ আবার হতাশা ভয় ভীতি কাটিয়ে আন্দোলনের ময়দানে এসে জড়ো হচ্ছে। এক স্বরে সবাই আবার আওয়াজ তুলছে ‘তিলোত্তমার রক্তচোখ, আঁধার রাতের মশাল হোক’। আবারও আঁধার রাতে লক্ষ লক্ষ মশাল জ্বলে উঠছে অভয়ার ন্যায়বিচার ছিনিয়ে আনতে।