চূড়ান্ত বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আশাকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। ২৯ জুলাই সারা রাজ্যে বিপুল জমায়েতের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক আন্দোলনের স্বাক্ষর রেখেছে পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়ন। প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সারা রাজ্যে ৪০ হাজারেরও বেশি আশাকর্মী এ দিন পথে নেমেছেন।
সরকারি বঞ্চনার চরম শিকার আশাকর্মীরা। সরকারি কর্মীর মতো কাজ করলেও এদের কর্মচারীর স্বীকৃতিটুকুও সরকার দিচ্ছে না, ভলান্টিয়ার হিসাবে আখ্যা দিয়েছে। আশাকর্মীরা ৬৫ বছর পর্যন্ত কাজ করলেও বৃদ্ধ বয়সে পেনশন, গ্র্যাচুইটি এবং উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত। রাতদিন ঝুঁকি নিয়ে শর্তসাপেক্ষে প্যাকেজ সিস্টেমে কাজ করেও এদের বাঁচার মতো মজুরি নেই। আশাকর্মীদের কাজ তদারকির জন্য ৮-৯ জন আধিকারিক রয়েছেন। তাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে যেমন খুশি কাজ করতে বাধ্য করছেন। অল্প সময় বেঁধে দিয়ে একই সাথে একই দিনে ৭-৮ রকমের কাজ করানো হচ্ছে, যে কাজ করতে ১০-১৫ দিন সময় লাগার কথা। পরীক্ষার ডিউটি, খেলা, মেলা, করোনা ভ্যাকসিনের ডিউটি, নানা ধরনের সার্ভে, দুয়ারে সরকারের ডিউটি যখন-তখন করতে বলা হচ্ছে। নামমাত্র পারিশ্রমিক বরাদ্দ থাকলেও তার হদিস পাওয়া যায় না।
গত এক বছর ধরে ৮ ভাগে ইন্সেন্টিভের টাকা ভাগ করে দেওয়ার ফলে ঠিকমতো টাকা পাচ্ছেন না তাঁরা। বেশিরভাগ আশাকর্মী প্রাপ্য ইন্সেন্টিভের কয়েক হাজার টাকা পাননি। পারিশ্রমিক চাইলেই আধিকারিকরা বলছেন, ফান্ডে টাকা নেই। দু-তিন মাস পর পর কিছু টাকা দেওয়া হয় তাও পুরোটা নয়। অথচ গত দুই বছর ধরে এনআরএইচএম-এর কোটি কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফেরত যাচ্ছে কেন্দ্রে। এআইইউটিইউসি অনুমোদিত পিচমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আশাকর্মীদের উপর এই চরম অরাজকতা নিরসনে বারবার এনআরএইচএম এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন জেলায় আধিকারিকরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং স্বাস্থ্য ভবন ইঙ্গিত দিয়েছে কিছু দাবি মানা হবে। এমন প্রতিশ্রুতি আশাকর্মীরা আগেও পেয়েছেন। ইউনিয়নের সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন বলেন, অবিলম্বে দাবি না মানা হলে কর্মবিরতি করতে বাধ্য হবেন আশাকর্মীরা।