এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১৯ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেন, এমনিতেই খাদ্য সহ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে সংকটে নিমজ্জিত মানুষ কোনও দিকে সুরাহার পথ পাচ্ছে না। এর উপর স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে ঘোষিত ‘অমৃত মহোৎসবে’ বিজেপি সরকারের ভাণ্ডার থেকে বর্ষিত একের পর এক ভয়ঙ্কর ‘উপহার’ তাদের বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে।
এর একেবারে সাম্প্রতিক নিদর্শন প্যাকেটে বিক্রি হওয়া চাল, মুড়ি, ডাল, লেবেল লাগানো দুধ, দই, লস্যি, ঘোল ইত্যাদির উপর ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানোর নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত। সরকারি ঘোষণার সাথে সাথে বাজারে এই অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দাম অন্তত ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে। এর ফলে নিশ্চয় অর্থমন্ত্রীর মুকুটে একটা নতুন পালক যোগ হবে। তিনি রাজকোষ ঘাটতি কমাতে যে বিশেষ পদক্ষেপের কথা বলে থাকেন, তা যে আসলে দুর্দশাগ্রস্ত জনসাধারণকে আর্থিকভাবে আরও নিংড়ে নেওয়া তাতে কোনও সন্দেহ রইল না। অন্য দিকে ঘন্টায় ৭০ থেকে ৯০ কোটি টাকা আয় করা একচেটিয়া পুঁজির মালিক ও একত্রে ৫৫ লক্ষ কোটি টাকার মালিক ১৪২ জন ধনকুবের যাতে আরও সমৃদ্ধি লাভ করে চলতে পারেন তার জন্য এদের সম্পদে তিনি কোনও হস্তক্ষেপ করার চেষ্টাই করেননি। এই হল বিজেপি সরকারের ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ নিশ্চিত করার পথ। জিএসটি এলে জিনিসপত্রের দাম কমবে, বিজেপি সরকারের এই প্রতিশ্রুতি যে কত বড় ভাঁওতা ছিল, তা পরিষ্কার হয়ে গেল।
আমরা বারবারই দেখিয়েছি, সংকটগ্রস্ত মরণোন্মুখ পুঁজিবাদের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক ম্যানেজার হিসাবে তাদের সেবায় নিযুক্ত বিজেপি দেশবাসীকে ক্রমবর্ধমান শোষণ, বঞ্চনা, প্রতারণা, নির্যাতন ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। তাই কোটি কোটি শোষিত মানুষের আজ প্রয়োজন সমস্ত দ্বিধা, দোদুল্যমানতা ঝেড়ে ফেলে স্থির সংকল্পে সংগ্রামের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সঠিক বিপ্লবী নেতৃত্বে সংগঠিত, দীর্ঘস্থায়ী এবং শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে এই অত্যাচারী পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং তার পদলেহী সরকার শোষণ নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে জনগণকে আরও বেশি বেশি করে পিষতে থাকবে।