নন-নেট ফেলোশিপ সংক্রান্ত গৌতম বড়ুয়া কমিশন সম্প্রতি সুপারিশ করেছে, ইউনিভার্সিটির এন্ট্রান্সের পরিবর্তে এখন কেন্দ্রীয় নেট পরীক্ষার মাধ্যমেই এই ফেলোদের নেওয়া হবে, নাম হবে নেট-টু ফেলোশিপ। এর পাশাপাশি এম ফিল স্কলারদের ফেলোশিপ বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়েছে। এর তীব্র প্রতিবাদ করে ডেমোক্রেটিক রিসার্চ স্কলারস অর্গানাইজেশন (ডিআরএসও)-র পক্ষে অর্ঘ্য দাস ৪ নভেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন,
বর্তমানে দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স দিয়ে ভর্তি হওয়া স্কলারদের ইউজিসি নন-নেট ফেলোশিপ দেয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও ‘রেট’ পরীক্ষার মাধ্যমে গবেষক নিয়োগ করে। এই স্কলাররাই সারা দেশের গবেষকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নন-নেট স্কলারদের মাসে মাত্র ৮ হাজার টাকা ফেলোশিপ দেওয়া হয়, এটাও অত্যন্ত অনিয়মিত। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে হাতে গোনা কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে স্কলারদের কোনও ফেলোশিপই নেই! অথচ নেট পাওয়া স্কলারদের ফেলোশিপ মাসে ৩১ হাজার টাকা। গবেষকদের মধ্যে এই বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং সকল স্কলারদের জন্য উপযুক্ত ফেলোশিপের দাবিতে ডিআরএসও দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। অধ্যাপকরাও নানা সময়ে এবং সম্প্রতি সর্বভারতীয় স্কলার কনভেনশনে এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন।
২০১৫ সালে অর্থাভাবের অজুহাতে ইউজিসি নন-নেট ফেলোশিপ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করে। তখন থেকেই দেশজুড়ে ছাত্র ও গবেষক সমাজ ব্যাপক প্রতিবাদ করেছেন। তারপরেই অধ্যাপক গৌতম বড়ুয়ার নেতৃত্বে নন-নেট ফেলোশিপ রিভিউ কমিশন তৈরি হয়, যার একটি ঘোষিত উদ্দেশ্যই ছিল নন-নেট ফেলোশিপের পরিসর আরও বাড়ানো। অথচ দীর্ঘ ছয় বছর পরে কমিশন যে নিদান নিয়ে এল তা বাস্তবায়িত হলে গোটা গবেষক সমাজের ওপর এক বিরাট আঘাত নেমে আসবে।
এই প্রস্তাবে বাস্তবে গবেষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের প্রশ্নটি মারাত্মক খর্ব হবে এবং এম ফিল ফেলোশিপ বন্ধ হয়ে যাবে। বর্তমানে প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ স্কলার ফেলোশিপ পায় না, এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে, প্রান্তিক স্কলাররা পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে,কোচিং ব্যবসার রমরমা বাড়বে।
গবেষক আন্দোলনের চাপে কমিশন নন-নেট স্কলারদের ফেলোশিপ সামান্য বাড়ানোর কথা বলেছে ঠিকই, কিন্তু তার পরিমাণ রাখা হয়েছে জেআরএফ স্কলারদের ফেলোশিপের অর্ধেক মাত্র, যা এই ব্যাপক বৈষম্যকেই আরও পাকাপোক্ত করবে এবং সার্বিক ভাবে গবেষণায় ব্যয়বরাদ্দ এবং বৈচিত্রের পরিসর দুটোই আরও কমবে, দীর্ঘমেয়াদে গবেষণার সার্বিক অগ্রগতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।