গঙ্গাসাগরঃ জনমোহিনী সিদ্ধান্তের বদলে দরকার ছিল জনস্বার্থের কথা ভাবা

 

লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগমে গঙ্গাসাগরে কোভিড বিধির সলিল সমাধি ঘটল। সংক্রমণ যে কোন স্তরে পৌঁছাবে সে আশঙ্কায় চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী রাজ্য সরকার। এস ইউ সি আই (সি) দলের পক্ষ থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় লোকসমাগম বন্ধ করার দাবি জানিয়ে ৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সে হুঁশিয়ারি থেকেও সরকার কোনও শিক্ষা নেয়নি। দলের রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ১২ জানুয়ারি আবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি আপনাকে এক চিঠির মাধ্যমে এবছর গঙ্গাসাগর মেলায় লোকসমাগম বন্ধ করার দাবি করেছিলাম। সে দাবি মানা হয়নি। একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল ও তার ভিত্তিতে প্রশাসন যে নির্দেশ দিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম হল, কোথাও ৫০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না, কোভিড বিধি মানতে হবে, সকলের র্যাপিড টেস্ট করা হবে, আরটিপিসিআর ও টিকাকরণের রিপোর্ট যাচাই হবে ইত্যাদি।

যেখানে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার মানুষ এসেছেন এবং ৫ লক্ষ লোক সমাগম প্রত্যাশা করা হচ্ছে তখন এসব নির্দেশ পালন হবে কী ভাবে? তা যে হচ্ছে না সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। আসলে প্রশাসনের সেই পরিকাঠামো নেই। বিশেষ করে এত ভিড়ের সামান্য শতাংশও যদি সংক্রমিত হয় তাহলে সেই সংখ্যক মানুষকে নিভৃতাবাসে রাখা বা হাসপাতালে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা কোথায়?

রাজ্যে সংক্রমণের হার যখন লাফিয়ে বাড়ছে তখন মেলার পর এই হার কোথায় পৌঁছবে তা ভেবে আমরা শঙ্কিত। আমরা মনে করি, মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরবর্তী লোক সমাগম আটকানোর সময় এখনও আছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবি, জনমোহিনী সিদ্ধান্তের পরিবর্তে এ বছর সরকার জনস্বার্থের কথা ভেবে এখনই মেলা বন্ধের নির্দেশ জারি করুক।

আমাদের প্রত্যাশা সার্বিক স্বার্থে আপনার সরকার অতি দ্রুত এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ২৩ সংখ্যা ২১ জানুয়ারি ২০২২