খুচরো ব্যবসায় দেশি–বিদেশি বৃহৎ পুঁজির অনুপ্রবেশ এবং ব্যাঙ্ক আমানত লুঠের এফআরডিআই বিলের বিরুদ্ধে ২ ফেব্রুয়ারি সারা ভারত প্রতিবাদ দিবস পালন করে এসইউসিআই (সি)৷ কংগ্রেস পরিচালিত পূর্বতন সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার খুচরো ও মাঝারি ব্যবসায় বৃহৎ পুঁজির জন্য দরজা ১০০ শতাংশ খুলে দিয়েছে৷ এর ফলে বৃহৎ পুঁজির সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে ছোট, মাঝারি দোকানদার থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র পুঁজির হকার৷ ইতিমধ্যেই বিগ বাজার, স্পেন্সার ইত্যাদি নানা বৃহৎ পুঁজির সংস্থা খুচরো ব্যবসায় নামায় সাধারণ দোকানদারদের ব্যবসা অনেকটাই মার খেয়েছে৷ এবার এই বৃহৎ পুঁজির হাঙরদের অনুপ্রবেশ অবাধ করে দিলে খুচরো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণরূপে চলে যাবে বৃহৎ পুঁজির হাতে৷ এর ফলে কাজ হারাবে লক্ষ লক্ষ দোকানদার, কর্মচারী এবং হকার৷ দেশপ্রেমের কথা বলতে বলতেই বিজেপি সরকার এভাবে দেশের সাধারণ মানুষের জীবিকা কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে৷
অন্যদিকে এফআরডিআই নামে একটি কালা বিল এনেছে মোদি সরকার৷ এই বিল আইনে পরিণত হলে আমানতকারী তার আমানতের ওপর অধিকার হারাবে৷ ধনকুবেররা ব্যাঙ্ক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে শোধ না করায় ব্যাঙ্কের ওপর যে আর্থিক ধাক্কা আসছে তা সামাল দেওয়ার জন্য জনগণের টাকা ব্যবহার করতে পারবে ব্যাঙ্ক৷ অর্থাৎ ঋণ নেবে পুঁজিপতিরা, আর শোধ করতে হবে আমানতকারী জনগণকে–এই হল এফআরডিআই বিলের মূল কথা৷
জনগণের ওপর এই আর্থিক হামলার বিরুদ্ধে এস ইউ সি আই (সি) কেন্দ্রীয় কমিটি দেশব্যাপী প্রতিবাদের ডাক দেয় ২ ফেব্রুয়ারি৷ দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাট, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটক তামিলনাড়ু, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ সহ প্রায় সব রাজ্যেই কয়েক কোটি হ্যান্ডবিল বিলি করে জনগণকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়৷ নানা সভা, বিক্ষোভ, কালো ব্যাজ পরিধান ইত্যাদির মধ্য দিয়ে এই সর্বনাশা বিলের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়৷
মূল এই দুটি দাবির সাথে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় একটি দাবি যুক্ত হয়৷ মোদি সরকার আর্থিক লোকসানের মিথ্যা অজুহাত তুলে পশ্চিমবঙ্গের আটটি রেল রুট বন্ধ করার চক্রান্ত করছে৷ এসইউসিআই (সি) এই ঘোষণার সাথে সাথেই ১৯ জানুয়ারি রেলের জিএমকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ ২ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদ দিবসেও এই রেল রুট বন্ধের তীব্র বিরোধিতা করা হয়৷ এই দিন পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলায় এবং ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই মোদি সরকারের এই জনবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়৷ সর্বত্রই মানুষ বিজেপির জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকে সমর্থন জানান৷ এফআরডিআই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের গণকমিটি গড়ে উঠছে৷ এফডিআই–এর বিরুদ্ধেও হকার, দোকানদারদের নিয়ে আন্দোলনের কমিটি তৈরির প্রস্তুতি চলছে৷