এ বছরে (২০২১-২০২২) দেশে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপন্ন হয়েছে। গত বছর (২০২০-২০২১) খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল ৩১০.৭৪ মিলিয়ন টন। এবার ১.৭১ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি হয়েছে। গমের উৎপাদন গত বছর ছিল ১০৯.৫৯ মিলিয়ন টন। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১১১.৩২ মিলিয়ন টন। ধানের মোট উৎপাদন গত বছর ছিল ১২৪.৩৭ মিলিয়ন টন। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১২৭.৯৩ মিলিয়ন টন। তৈলবীজের উৎপাদন গত বছরের ৩৫৯.৪৬ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭১.৪৭ মিলিয়ন টন। ডালের উৎপাদন গত বছর ছিল ২৫.৪৬ মিলিয়ন টন। এবার উৎপাদন হয়েছে ২৬.৯৬ মিলিয়ন টন।
এত বিপুল উৎপাদনের ফলে, তবে কি খাদ্যপণ্যের দাম কমবে? মানুষের অভিজ্ঞতা, রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনেও দাম কমে না। গত বছর তো তেলের অভাব ছিল না। খাদ্যমন্ত্রকের ওয়েবসাইট, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দেখাচ্ছে সরষের তেল, বাদাম তেল, বনস্পতি, সয়াবিন, সূর্যমুখী, পাম তেল ইত্যাদি ছয় রকম তেলের এবছর ১০.৩৪ শতাংশ থেকে ৩০.৪৯ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যবদ্ধি ঘটেছে।
রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য উৎপাদনে কি খাদ্য সঙ্কট মিটবে? সব মানুষ খাদ্য পাবে? অভিজ্ঞতা বলছে, বিপুল খাদ্য উৎপাদন হলেও এ দেশে অনাহারে মানুষ মরে। গুদামে খাদ্য পচে নষ্ট হলেও সরকার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করে না। এর পিছনে রয়েছে বৃহৎ খাদ্য ব্যবসায়ীদের মুনাফার স্বার্থ রক্ষা করার তাগিদ। সরকার কম দামে খাদ্য দিলে বা রেশনের মাধ্যমে বিনা পয়সায় দিলে খাদ্য নিয়ে যেমন খুশি মুনাফা করার সুযোগ থাকে না। তাই রেশন ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে সরকার পঙ্গু করেছে। করোনা অতিমারির চাপে সরকার রেশনে চাল সাময়িকভাবে দিতে বাধ্য হলেও যে কোনও দিন বন্ধ করে দিতে পারে। বন্ধ করার ঘোষণা আগেও সে করেছিল। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়, উৎপাদিত পণ্যকে জনগণের কাছে সুলভে পৌঁছতে হবে।