Breaking News

কোতোয়ালি থানাঃ অপরাধ ঢাকতে পুলিশের তথ্যবিকৃতি ধরা পড়ল হাইকোর্টে

মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় এআইডিএসও-র চার ছাত্রীকর্মী সুশ্রীতা সরেন, তনুশ্রী বেজ, রানুশ্রী বেজ ও বর্ণালী নায়কের উপর মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় ২২ মার্চের রায়ে প্রথম ধাপের আইনি জয় হল। ছাত্রীদের পক্ষে মামলাটি লড়েন হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু সিংহ রায়, কার্তিক কুমার রায়, দেবাশীষ ব্যানার্জি প্রমুখ। ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী ছাত্রদের উপর শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ৩ মার্চ এআইডিএসও-র ডাকা সারা বাংলা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ধর্মঘটে অংশ নেওয়া ওই ছাত্রীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, কোর্টে জমা দেওয়া যে সব তথ্যের ভিত্তিতে সরকারপক্ষ ছাত্রীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল, সেগুলির প্রতি হাইকোর্ট শুধু অবিশ্বাসই ব্যক্ত করেনি, এগুলি যে বানানো ছিল, তাও জানিয়েছে। মামলা চলাকালীন হাইকোর্টে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুলিশ অযৌক্তিকভাবে এবং অপ্রয়োজনে ১৬ ঘণ্টা ধরে ছাত্রীদের আটকে রেখেছিল এবং মধ্যরাতে ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিন্দুমাত্র না ভেবেই বেআইনিভাবে তাদের ছাড়া হয়। হাইকোর্ট আইজিপি-র নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত টিম (সিট) গঠন করে রিপোর্ট মানবাধিকার আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। মামলাটির মানবাধিকার লঙ্ঘন, এসসি-এসটি বিশেষ আইন লঙ্ঘন সংক্রান্ত দিকটি পশ্চিম মেদিনীপুরের মানবাধিকার তথা সেশন কোর্টে যাবে। সেখানে এই রায়ের ভিত্তিতে কেস চালু হবে। মামলাটির বাকি দিক হাইকোর্টে বিচার প্রক্রিয়াধীন থাকবে।

এআইডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, পুলিশ যদি সরাসরি অপরাধের তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে, যা আর জি কর ঘটনাতেও দেখা গিয়েছিল তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এসব ঘটনা সরকারের আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ততাকেই উন্মোচিত করছে।

আক্রান্ত ছাত্রীদের পক্ষ থেকে মামলার মূল পিটিশনার সুশ্রীতা সরেন বলেন, আর জি করের ঘটনা সহ প্রতিবাদী ছাত্রকে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে পিষে দেওয়া, ছাত্রীদের উপর পুলিশি হেফাজতে নৃশংসতা, ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনার পেছনে থাকা দুর্নীতিচক্রকে আড়াল করতেই রাজ্য সরকার চূড়ান্ত মিথ্যাচার ও দমনমূলক ভূমিকা নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের যে আইনি লড়াই চলছে তা সফল করতে ও শাসকের স্বৈরাচার রুখে দিতে রাজপথের আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য রাজ্যের ছাত্রসমাজ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। জাল তথ্য জমা দিতে পিছুপা হচ্ছে না। এই ঘটনা, এই সরকারের আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ততাকেই উন্মোচিত করছে।‘

আক্রান্ত ছাত্রীদের পক্ষ থেকে মামলার মূল পিটিশনার সুশ্রীতা সরেন বলেন, ‘ আর জি করে নৃশংস ঘটনা, যাদবপুরের প্রতিবাদী ছাত্রকে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে পিষে দেওয়া, মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় আমাদের উপর পুলিশি হেফাজতে নৃশংসতা, ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল প্রভৃতি অসংখ্য ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। এর পেছনে থাকা বিরাট দুর্নীতি চক্রকে আড়াল করার জন্যই রাজ্য সরকার চূড়ান্ত মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে ও দমনমূলক ভূমিকা নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের যে আইনি লড়াই জারি আছে, তাকে কার্যকরী রূপ দিতে ও শাসকের স্বৈরাচারকে রুখে দিতে রাজপথের আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য পশ্চিমবাংলার ছাত্র সমাজ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’